রঙিন হবে লোর বিদায়?

বিশ্বকাপজয়ী ইউরোপিয়ান দলদের একটা অভিশাপ আছে। কাগজে কলমে না হলেও ব্যাপারটা চোখে পরার মতো। ইউরোপিয়ান কোনো দল বিশ্বকাপ জেতার পরের বিশ্বকাপেও বাদ পড়ে যায় প্রথম পর্বে।

ফ্রান্স, ইতালি, স্পেনের ধারা ২০১৮ বিশ্বকাপে ভাঙ্গতে পারেনি জার্মানি। ২০১৮ ভিশ্বকাপে প্রথম পর্ব থেকেই বাদ পরে যায় জার্মানি। ইউরো ও বিশ্বকাপ মিলিয়ে টানা সাতবার সেমিফাইনালে ওঠা দলটা মুখ থুবড়ে পড়েছিল বিশ্বকাপে। তবে জার্মানরা ভরসা হারায়নি জোয়াকিম লোর উপর থেকে।

কিন্তু বাজে পারফরম্যান্সের ধারায় জোয়াকিম লো নিজেই দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন এই ইউরোর পর। তাই ইউরো তার সামনে শেষ পরীক্ষা। শেষবার জার্মান দলকে নিয়ে ভালো করবার সুযোগ। শেষটা রাঙিয়ে যেতে পারবেন তো লো?

গোলকিপার

ম্যানুয়েল নয়্যার (বায়ার্ন মিউনিখ), বার্নড লেনো (আর্সেনাল), কেভিন ট্র্যাপ (আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট)

সেন্টারব্যাক

ম্যাটস হামেলস (বরুসিয়া ডর্টমুন্ড), আন্তোনিও রুডিগার (চেলসি), নিকলাস সুলে (বায়ার্ন মিউনিখ), ম্যাথিয়াস জিন্টার (বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখ), রবিন কখ (লিডস ইউনাইটেড), এমরে চ্যান (বরুসিয়া ডর্টমুন্ড) জসুয়া কিমিখ (বায়ার্ন মিউনিখ), লুকাস ক্লস্টারম্যান (আরবি লাইপজিগ), রবিন গসেন্স (আতালান্তা), মার্সেল হালস্টেনবার্গ (আরবি লাইপজিগ), ক্রিস্টিয়ান গান্টার (ফ্রাইবুর্গ)

মিডফিল্ডার

টনি ক্রুস (রিয়াল মাদ্রিদ), ইলকায় গুন্দোগান (ম্যানচেস্টার সিটি), লিওন গোরেৎস্কা (বায়ার্ন মিউনিখ), ফ্লোরিয়ান নয়্যাহাউস (বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখ), জামাল মুসিয়ালা (বায়ার্ন মিউনিখ), সার্জ ন্যাব্রি (বায়ার্ন মিউনিখ), লিরয় সানে (বায়ার্ন মিউনিখ), জোনাস হফম্যান (বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখ)

ফরোয়ার্ড

টিমো ভেরনার (চেলসি), কেভিন ফলান্ড (মোনাকো), কাই হাভার্টজ (চেলসি), থমাস মুলার (বায়ার্ন মিউনিখ)

কোচ: জোয়াকিম লো

অধিনায়ক: ম্যানুয়েল নয়্যার

শক্তিমত্তা:

জার্মানির এই দলে সবচেয়ে বড় কিংবা একমাত্র শক্তির জায়গা মিডফিল্ড। জার্মান মিডফিল্ডে পাওয়ারহাউজের অভাব নেই। ক্রুস, কিমিখ, গুন্দোগান, গোরেৎস্কা ; কেউ কারো থেকে কম যান না। কাগজে-কলমে জার্মানির মতন মিডফিল্ড খুব কম দলেরই আছে। ফলে লোর ভরসা ঘুরেফিরে সেই মিডফিল্ডেই।

মিডফিল্ডের পর ভরসা করার মতন পাত্র যদি কেউ থাকেন, সেটা অধিনায়ক ম্যানুয়েল নয়্যার। গোলরক্ষক হিসেবে তার জুরি মেলাভার। যদিও গত বিশ্বকাপের বাজে পারফরম্যান্সের ফলে বেশ ভালই কথা শুনতে হয়েছিল তাকে। বায়ার্নের হয়ে এক মৌসুমে ৬ শিরোপা জিতে পাবারও মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন সমালোচকদের। জার্মানির জার্সিতে ১০০ ম্যাচ খেলাও শেষ তার।

দুর্বলতা:

যেমনটা আগে বললাম জার্মানির শক্তিমত্তা শুধু মাঝমাঠ আর গোলপোস্টের নিচে। বাকি দলটা খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই। রক্ষণে ফিলিপ লাম, বোয়েটাং চলে যাওয়ার পর থেকে সেই ধার আর নেই। হামেলসকে এতদিন বাইরে রাখার পর ইউরোর আগে আগে ডেকে পাঠিয়েছেন লো। যদিও রুডিগারের ফর্ম জার্মানিকে আশা দেখাচ্ছে, তবুও তা বড় স্বপ্ন দেখার মতো নয়। ফুলব্যাকেও খুব একটা ব্যাকিং নেই বললেই চলে।

সেই সাথে সমস্যা দলের স্ট্রাইকিং পজিশনে। মূল স্ট্রাইকার টিমো ভেরনার গত ভিশ্বকাপে গোল পাননি একটিও। যে কারণে আবারও থমাস মুলারকে ফেরত এনেছেন লো। যদিও চেলসিতে খুব একটা ভালো মৌসুম কাটাননি তিনি। সব মিলিয়ে এই দুই জায়গা নিয়েই চিন্তা লোর।

সম্ভাব্য একাদশ :

রাইট ব্যাক হিসেবে প্রথম চয়েজ হিসেবে থাকবেন কিমিখ। তবে কিমিখের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলতে পারার যোগ্যতা তাকে মাঝেও নিয়ে আসতে পারে। তখন ডানে খেলবেন ক্লস্টারম্যান

কিমিখ রাইটব্যাক হিসেবে খেললে মাঝে থাকবেন ক্রুস আর গোরেৎস্কা। আর কিমিখ মাঝে চলে আসলে তা হয়ে যাবে ক্রুস-কিমিখ। গুন্দোদানের ইনজুরি সামান্য পিছিয়ে দিয়েছে তাকে। থমাস মুলার থাকছেন অ্যাটাকিং মিড হিসেবে। তবে ডানে হাভার্টজ আর ন্যাব্রির মধ্যে অদল বদল হবে কিমিখের উপর ভর করে।

প্রতিপক্ষ ও ম্যাচ: (বাংলাদেশ সময়)

ফ্রান্স,১৬ জুন, রাত ১টা

পর্তুগাল, ১৯ জুন, রাত ১০টা

হাঙ্গেরি, ২৪ জুন, রাত ১টা

(রাত ১২টার পর পরবর্তী দিন ধরা হয়েছে)

গ্রুপ অফ ডেথে পরেছে জার্মানি। তাদের শিরোপার দিকে চোখ থাকলেও ফ্রান্স, পর্তুগাল, ছেড়ে কথা বলবে না। হাঙ্গেরিও আছে উৎ পেতে। একটু পা ফসকালেই সমস্যা। নিজের বিদায়টা নিশ্চয় এভাবে বৃথা হয়ে যেতে দিবেন না লো। নিজের শেষটা রাঙিয়ে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে তাই জার্মান কোচের। আর সেটাই জার্মানদের ভরসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link