মিস্ট্রি স্পিনার মুজিব-উর রহমান নেই। তাতে কি? হাত বাড়িয়ে আফগানিস্তানকে আস্বস্ত করলেন তরুণ মোহাম্মদ গজনফর। বাংলাদেশকে নাকানিচুবানি খাইয়েছেন মাত্র ১৮ বছর বয়সের গজনফর। একা হাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নিয়ে এসেছেন তিনি।
ছয়খানা ব্যাটারকে তিনি পাঠিয়েছেন সাজঘরে। গজনফরের মিস্ট্রি সত্যিকার অর্থেই ধাঁধায় ফেলে দিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে। এদিন তিনি তার উইকেট শিকারের যাত্রাটা শুরু করেন তানজিদ হাসান তামিমকে দিয়ে। নিচু হওয়া স্কিডি বলটা বুঝতেই পারেননি তামিম। উড়ে গেছে তার স্ট্যাম্প।
সেখানেই শেষ নয়। বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা স্পিন খেলুড়ে দুই ব্যাটারকেও বোকা বানিয়েছেন নিজের ঘূর্ণি জাদুতে। মেহেদী হাসান মিরাজ সুইপ শট খেললেন। কিন্তু গজনফরের স্লো ক্যারম বলটায় সংযোগ ঘটেনি ঠিকঠাক। যা হওয়ার হয়েছে তাই। বল উঠেছে আকাশ পানে। দারুণ দক্ষতায় তা তালুবন্দী করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
এরপর মুশফিকুর রহিমের মত অভিজ্ঞ ব্যাটারকে ক্রিজ ছেড়ে আসতে বাধ্য করেন গজনফর। তার সেই প্রলোভনের ফাঁদে মুখ থুবড়ে পড়েন মুশফিক। স্ট্যাম্পিং হয়ে তিনি ফিরেছেন মাত্র এক রানে। বাংলাদেশের পরাজয় তখন ঝুলে আছে পাতলা সুঁতোয়। তাড়াহুড়া ছিল যেন গজনফরের। মুশফিকের উইকেট পকেটে পুরে, সেই ওভারেই বাংলাদেশের পরাজয় নিশ্চিত করতে চাইলেন।
তাইতো সেই ওভারের শেষ দুই বলে তুলে নেন আরও দুইটি উইকেট। রিশাদ হোসেনকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেছেন। দূর্দান্ত ঘূর্ণিতে তাসকিনের উইকেট উপড়ে ফেলেছেন গজনফর। তাতে করে ফাইফার যুক্ত হয়ে যায় গজনফরের নামের পাশে।
শুরুটা করেছিলেন তিনি। শেষটাতেও তাই নিজের নামটি লিখে দিতে চাইলেন। শরিফুল ইসলামকেও বোল্ড আউট করে সমাপ্তি টানেন গজনফর। তাতে করে ৯২ রানের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আফগানিস্তান। গজনফরের সৃষ্টি করা ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড বাংলাদেশ থেমেছে মাত্র ১৪৩ রানে।
মাত্র ২৬ রানের বিনিময়ে ছয় ছয়টি উইকেট তুলে নিয়েছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটাই যেকোন স্পিনারের সেরা বোলিং ফিগার। এর আগের চার ওয়ানডে ম্যাচে মাত্র চারটি উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন গজনফর। কিন্তু মিস্ট্রি স্পিনার বলেই, মনের বাঘে খেয়েছে বাংলাদেশকে। আর সেই ভয়ের পূর্ণ ফায়দা তুলেছেন গজনফর।