বয়সটা ৩৩। চাইলে এখনও ফ্রান্স দলে খেলে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু অকস্মাৎ আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন আঁতোয়ান গ্রিজম্যান। তরুণদের জন্য পথ খুলে দিতেই নাকি তার এমন সিদ্ধান্ত। তবে তিনি নিশ্চয়ই নিজেকে এখনই ভাবছেন না বৃদ্ধ।
তবুও বিশ্বকাপ জয়ী গ্রিজম্যান ইতি রেখা টেনে দিয়ে গেলেন। দীর্ঘ দশ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। এক দশকে কতশত স্মৃতি। ১৩৭ টি ম্যাচে ফ্রান্সের নীল জার্সিতে মাঠে নেমেছেন গ্রিজম্যান। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে দলগত সাফল্যের পথে এগিয়ে গেছেন তিনি।
অভিষেকের বছর চারেক পরই সবচেয়ে বড় সফলতা এসে ধরা দিয়েছিল তার হাতে। বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সম্মানের ট্রফিটাই ছুঁয়ে দেখেছেন তিনি। স্বর্ণালী সেই ট্রফিটাই যেকোন ফুটবলারের জীবনের সর্বোচ্চ অর্জন। ক্লাব ফুটবলে শিরোপার দেখা খুব একটা না পেলেও, অপূর্ণতার গল্পে এক প্রাসাদ গড়ে আছে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ।
চার গোলের পিলারের উপর দাঁড়িয়ে আছে গ্রিজম্যানের বিশ্ব জয়ের প্রাসাদ। উরুগুয়ের বিপক্ষে দূরপাল্লার শটে গোল ছাড়াও স্পট কিক থেকে তিন খানা গোল করেছিলেন গ্রিজম্যান। সেই স্মৃতি নিশ্চয়ই সহসাই মুছে ফেলা সম্ভব নয়।
যদিও ওই এক বিশ্বকাপ ছাড়া খুব বেশি অর্জনের পালক যুক্ত হয়নি গ্রিজম্যানের। একটু খানি আক্ষেপ নিশ্চয়ই রয়েছে তার। বিশ্ব জয়ের দ্বিতীয় সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে ২০২২ সালে। ইউরোপের সেরা হওয়ার সুখস্মৃতি নেই তার। তবুও রোমাঞ্চকর ক্যারিয়ারকে আর বেশি দীর্ঘায়িত করতে চাইলেন না। যদিও চাইলেই ২০২৬ বিশ্বকাপ অবধি খেলা চালিয়ে যেতে পারতেন তিনি।
তবে তিনি জানেন, ফ্রান্স দলটায় ঠিক কতটা প্রতিযোগিতা। বাইরে অপেক্ষমান তরুণদের দীর্ঘ সারি। তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেওয়া প্রয়োজন। নিজেও খানিকটা স্পৃহা হারিয়ে ফেলেছেন। দলেও হয়ত তার প্রয়োজন খানিক ফুরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এখনই সময় নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার।
এক দশকের যাত্রার সমাপ্তি। নীল রঙা জার্সিতে তাকে আর দেখা যাবে না। দুই তারকা জার্সি গায়ে তিনি আর মাঠ মাতাবেন না। এক জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে, দূর থেকে দেখবেন তরুণদের তাণ্ডব। ক্লাব ফুটবলের বাইরে অবসর দিনগুলোতে এখন তার চোখ থাকতে টিভির পর্দায়।