বিশ্বকাপের আগে হঠাৎ করেই দায়িত্বটা পেয়েছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তবে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল ভারতে, সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি)। ক্রিকেটীয় কোনো সিদ্ধান্তেই কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই সাবেক এই অধিনায়কের।
টিম ডিরেক্টর হিসেবে দলের সাথে গেলেও সেই অর্থে ভূমিকা রাখা হচ্ছে না সুজনের। তিনি মূলত কাজ করছেন দলের ম্যানেজার হিসেবে। তাঁর দলে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে আপত্তি আছে খোদ কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের। ফলে, আগের বিশ্বকাপগুলোর মত এবারের বিশ্বকাপে সুজন রয়ে গেছেন আড়ালেই।
সুজন নিজে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘আগে প্রতি ট্যুরে দল নির্বাচন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমার যে ভূমিকা থাকত, সেটা এবার হচ্ছে না। এখন আমার দলে ক্রিকেটীয় ভূমিকা নেই। আমি তো এভাবে থাকতে চাই না। যেহেতু আমার রক্তে ক্রিকেট, আমি কোচিং করি, এটা আমার পেশা। যদিও বাংলাদেশ দলের কোচিংয়ের সঙ্গে আমি জড়িত নই, তবে একজন টেকনিক্যাল মানুষ হিসেবে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও যেভাবে খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমার কথা হতো, সেটা এবার হচ্ছে না। বোর্ড থেকে আমাকে এবার সে ভূমিকা দেওয়া হয়নি।’
এমনিতেই এবার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের চাওয়াতে মিডিয়ার ব্যাপারে আরোপ করা হয়েছে কড়াকড়ি। ড্রেসিংরুমের কোনো কথাই বাইরে যেতে দিতে চান না সাকিব। ফোন ব্যবহারেও রাখা হয়েছে সতর্কতা। সংবাদ সম্মেলনে বাধ্য না হলে কোনো ক্রিকেটার আসছেনই না।
যদিও, এর মধ্যেই টিম মিটিংয়ের ভিডিও ফাঁস হয়েছে। সেটা কে করেছেন সেটা অজানা। এই ঘটনা ও মাঠের পারফরম্যান্সজনিত কারণে দলের ওপর নিয়ন্ত্রন কমে এসেছে সাকিবের। তার ওপর, সুজন নতুন করে বোমা ফাঁটালেন দলে নিজের অবস্থান নিয়ে।
তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে দলের সঙ্গে থাকা অবশ্যই আমি উপভোগ করছি না। এটা আমার ভূমিকা না, আমি অভিভাবক হিসেবে থাকব, ঘুরব, দলের শৃঙ্খলার মতো বিষয় দেখব। কিন্তু এগুলো তো আমার কাজ না। এটাও আমার কাজ ছিল। তবে এগুলোর সঙ্গে আমি ক্রিকেটীয় বিষয়গুলোও দেখতাম।’
যদিও, সুজনের সাথে দলের একটা দূরত্ব চলে এসেছে আরও আগে থেকেই। গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়ও সুজনকে চাননি তখনকার টেকনিক্যাল ডিরেক্টর শ্রীধরণ শ্রীরাম। এবার তিনিও আছেন একই পদে। এর সাথে যোগ হয়েছেন হাতুরুসিংহে। তিনি দলে নিজের বাদে অন্য কারও কর্তৃত্বই পছন্দ করেন না। সাকিবের ক্ষেত্রে তিনি কিছু করতে পারেন না, কিন্তু সুজনের ক্ষেত্রে পারেন। বিসিবি সেটা বুঝেই বোর্ড কর্তা সুজনকে পাঠিয়েছিল বিশ্বকাপে। এর ফলাফলে দলের মধ্যে একটা গৃহযুদ্ধই লেগে গেছে।