‘ফিক্সিংয়ের সাথে জড়িত ছিলাম না আমি’

জুয়াড়ির কাছে তথ্য পাচারের অভিযোগে সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রম থেকে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ দলের সাবেক বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক। নিষিদ্ধ হওয়ার পর নিজের সব অপরাধ স্বীকার করে নিলেও জিম্বাবুয়ের কিংবদন্তি এই পেসার দাবি করেছেন ফিক্সিংয়ে জড়িত ছিলেন না তিনি।

অ্যান্টি করাপশন কোডের পাঁচটি ধারায় স্ট্রিকের বিপক্ষে অভিযোগ দায়ের করে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। জুয়াড়ির সাথে যোগাযোগের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে এই সাবেক কিংবদন্তি পেসার জানিয়েছেন জুয়াড়ির সাথে যোগাযোগ ছিল বন্ধুত্বের খাতিরে; ম্যাচ ফিক্সিং করার জন্য কোন তথ্য তিনি পাচার করেননি তিনি।

তিনি বলেন, ‘দর্শক ও সমর্থকদের আমি বলতে চাই ম্যাচ ফিক্সিং, স্পট ফিক্সিং অথবা খেলায় প্রভাব রাখে এমন তথ্য আমি পাচার করিনি। আইসিসি তাদের বক্তব্যেই তা নিশ্চিত করেছে। আমার ভুল অজ্ঞাতে বা অজান্তে হয়েছে। স্থির ভাবে আমার অবস্থান থেকে আমি যে তথ্য ও মতামত দিয়েছি আমার আরো সর্তক হওয়া উচিত ছিল। তবে সে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না।’

২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ঐ ব্যক্তির সাথে পরিচয় হয়েছিল স্ট্রিকের। পরিচয়ের পর বন্ধুত্ব হয় দুজনের। ঐ ব্যক্তিই তাকে প্রস্তাব দিয়েছিল জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চান তিনি। এই পেসার জানিয়েছেন নিজের ব্যবসা এবং জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের লাভের কথা ভেবেই তাঁর বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন তিনি।

স্ট্রিক বলেন, ‘২০১৭ সালে আফ্রিকায় এক ব্যক্তির সাথে দেখা হয় আমার। জিম্বাবুয়েতে সে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট স্পন্সর করতে আগ্রহী ছিল। টুর্নামেন্টের নাম হতো সাফারি ব্লাস্ট। সেই ব্যক্তি সকল নিরাপত্তা অতিক্রম করেই এসেছিল। সত্যি বলতে আমি তাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করি এবং ব্যবসায়িক অংশীদার ভাবতে থাকি। আমাদের বন্ধুত্বটা সব সময়ই ভালো ছিল। আমি আশা করেছিলাম এই সম্পর্কের কারণে শুধু আমার নয়, জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটেরও অনেক লাভ হবে। এই কারণে অনেক আগ্রহী ছিলাম আমি।’

বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টিতে দল কেনার জন্য ঐ ব্যাক্তির সাথে অর্থও লেনদেন করেছে হিথ স্ট্রিক। এমনকি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে উপকার হিসাবে অনেক কিছু গ্রহণ করে তাকে তথ্য দিয়েছে সে। এই পেসার জানিয়েছেন আইসিসি তাকে অবহিত করেছিল যাকে তথ্য দিচ্ছে তা জুয়ার কাজে ব্যবহার করতে পারে সে।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন আঞ্চলিক টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় দল ক্রয় করার জন্য বিটকয়েন প্রদান করেছি। দুবাইতে ঐ ব্যক্তির নামে দলও কেনা হয়েছিল। পরে আমাদের বন্ধুত্ব। একটা জিনিস আমি নিয়েছিলাম, হুইস্কির বোতল ও স্ত্রীর জন্য ফোন। কয়েক মাস পর আইসিসি আমাকে জানায় যাকে বন্ধু হিসেবে আমি তথ্য দিচ্ছি সে তা জুয়ার কাজে ব্যবহার করতে পারে।’

জানিয়ে রাখা ভাল, খেলোয়াড়ী জীবনে জিম্বাবুয়ের হয়ে ৬৫ টি টেস্ট ও ১৮৯ টি ওয়ানডে খেলেছেন হিথ স্ট্রিক। এছাড়া সমৃদ্ধ প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১৭৫ টি ম্যাচ। ২০২৯ সালের ২৮ মার্চে স্ট্রিকের সাজা শেষ হবে। তখন থেকে তিনি পুনরায় ক্রিকেটে সম্পৃক্ত হতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link