রঙ্গনা হেরাথ হাজির তার বিশেষ ক্লাস নিয়ে। বাংলাদেশের এই স্পিন বোলিং কোচ তার শিষ্যদের নিয়ে বেশ সতর্ক। তাইতো মিরপুরে স্কিল ট্রেনিং শুরু হয়েছে। আর সবার আগে ‘স্পেশাল ক্লাস’ স্পিনারদের।
গেল দিন ছিল ট্রফি নিয়ে উন্মাদনা। তবে সে সবের মাঝেও বাংলাদেশ দল চালিয়েছিল অনুশীলন। তবে বুধবার অনুশীলনের তীব্রতা যেন আরও খানিকটা বৃদ্ধি পায়। ক্রিকেট বোর্ডে রয়েছে নানা জটিলতা। ক্রিকেটারদের মনেও রয়েছে সংশয়। ঠিক কে হবে টাইগারদের আগামী অধিনায়ক, তা যেন স্পষ্ট নয়।
তবে তাতে তো আর অনুশীলন থামিয়ে দেওয়া যায় না। পুরোদমে নিজেদের প্রস্তুত করার মিশনে নেমেছে মুশফিক, তাসকিনরা। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ভিন্ন ভিন্ন অনুশীলন চালিয়েছে গোটা দল। কেউ ফিটনেসের অনুশীলন করেছেন তো কেউ ফিল্ডিং। তবে হেরাথ রীতিমত খাতা-কলম নিয়ে হাজির হয়েছেন সেন্টার উইকেটে।
মুহূর্তের মধ্যে সেন্টার উইকেটে বিবর্ণ মাটিতে বেশ কিছু রঙের ছড়াছড়ি। স্ট্যাম্প বরাবর টেনে দেওয়া হয়েছিল উজ্জ্বল সাদা দড়ি। যাতে করে লাইন বুঝে অনুশীলন করতে পারে স্পিনাররা। এর আগে অবশ্য পেসাররাও সেই উইকেটেই অনুশীলন চালিয়েছে। কিন্তু হেরাথের স্পেশাল ক্লাস একটু তো ভিন্ন হবেই।
আরও কিছু রং-বেরঙের মার্কার রাখা হলো পুরো উইকেট জুড়েই। মূলত ব্যাটিং প্রান্তে। মিরাজ, রিসাদ, তাইজুলদের সাথে ক্লাসে উপস্থিত নাইম হাসানও। লম্বা সময় ধরেই চলে স্পিনারদের স্কিল ট্রেনিং।
প্রতিটা বলের ফলাফল নিজের নোটবুকে টুকে রেখেছেন হেরাথ। বল ছোড়ার আগে বোলারদের নির্দেশও দিয়েছেন। রিসাদকে কখনো ব্যাক অফ দ্য লেন্থ বল করতে বলেছেন তো, কখনো আবার তাইজুলকে বলেছেন ইয়োর্কার অথবা ওয়াইড ইয়োর্কার করতে।
টানা এক ওভার করে বল করিয়েছেন হেরাথ। প্রতিটা বলের ল্যান্ডিং পজিশনে রাখা হয়েছে মার্কার। এরপর ওভার শেষে তাৎক্ষণিক ‘ফিডব্যাক’ দিয়েছেন রঙ্গনা। সেসবও কাগজে পেয়েছে ঠাঁই। নিজের শিষ্যদের দূর্বলতা খুঁজে বের করতেই যেন এতসব আয়োজন।
রঙ্গনা হেরাথ অনেকটা সময় কাজ করছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাথে। তার সময়ে স্পিনাররা ভালও করেছে। যদিও নিকট অতীতে পেসারদের দাপটে খানিকটা আড়ালে থেকেছে স্পিনারদের পারফরমেন্স। তাতে অবশ্য ভ্রুক্ষেপ নেই হেরাথের। তিনি জাতীয় দলের স্পিনারদের কঠিনতম পরিস্থিতির জন্যই যেন প্রস্তুত রাখছেন।
বিশ্বকাপের ডামাডোল বেজে গেছে। ভারতের মাটিতে হচ্ছে এবারের আয়োজন। স্পিন সহায়ক উপমহাদেশে তাই স্পিনারদের একটু বাড়তি দায়িত্ব নিতেই হয়। বাংলাদেশের স্পিনাররা সব রকম প্রস্তুতিই নিচ্ছেন। শিক্ষক যখন রঙ্গনা হেরাথ, তখন যেন ছাড় নেই একবিন্দু।