লোকেশ রাহুল, উইকেটের পেছনে ভারতের রক্ষাকবচ

মোহাম্মদ সিরাজের করা বলটা ওয়াডই হতে পারতো। কিন্তু মিরাজ সেই বলটাকেই ফ্লিক করার চেষ্টা করলেন। যদিও তা ব্যাট ছুঁয়ে যায় পিছনে। অবশ্য উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল থেকে বল যে দূরত্বে ছিল, তা গ্লাভসে বন্দী করা প্রায় অসম্ভবই ছিল। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে চোখ ধাঁধানো এক ক্যাচ নেন লোকেশ রাহুল।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়েছিলেন মিশেল স্যান্টনার। ধারাভাষ্যকারদের দৃষ্টিতে, সেটিই ছিল বিশ্বকাপের সেরা ক্যাচ।  তবে সে ক্যাচের দিন দুয়েক না পেরোতেই এবার রাহুলের এই ক্যাচ নিশ্চিতভাবেই পাল্লা দিবে স্যান্টনারের ক্যাচের সাথে।

বাঁ হাতে ক্যাচ, তাও আবার শূন্যে ভেসে শরীর ছুঁড়ে এক হাতে লুফে নেওয়া। উইকেটরক্ষকদের জন্য যা এক কথায় দুর্দান্ত। অথচ ঋষাভ পান্তের ইনজুরিতে এবারের বিশ্বকাপে ভারতের দলে স্পেশালিস্ট কোনো উইকেটরক্ষকই ছিল না। তবে স্পেশালিস্ট উইকেটরক্ষক না হয়েও ভারতকে ভরসা দিচ্ছেন রাহুল।

তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগেও কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিল না। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে লোকেশ রাহুলের কিপিং নিয়ে হয়েছিল প্রবল সমালোচনা আর কটূক্তি। সেখান থেকে কীভাবে নিজের এমন উত্তরণ ঘটালেন লোকেশ রাহুল? 

লোকেশের কিপিংয়ের এমন উন্নতির রহস্য এবার উন্মোচন করলেন ভারতের ফিল্ডিং কোচ দিলীপ। তিনি জানালেন, বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ভিন্ন এক ড্রিল রপ্ত করেছিলেন রাহুল।

এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন তো নয় যে, রাহুল এবারই প্রথম উইকেটকিপিং করছে, এটা সে শৈশব থেকেই করে আসছে। তবে কিপিংয়ে উন্নতির জন্য এবার আমরা মোটা টায়ারের সাহায্য নিয়েছিলাম। যেটা স্ট্যাম্পের সামনে রাখা হয়েছিল। আর এর মাধ্যমেই লোকেশ শর্ট কিপিং, লং কিপিং প্র্যাকটিস করেছে। এতে করে লেগ স্ট্যাম্পের বাইরের বলগুলো সে লুফে নেওয়ার কৌশল আয়ত্ত্ব করতে পেরেছে।’

এমন ড্রিলে শিষ্য রাহুল যে রীতিমত সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেছে, তা মানছেন গুরু দিলীপও। রাহুলের উইকেটকিপিং নিয়ে প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘রাহুল এখন পর্যন্ত উইকেট কিপিংয়ে বেশ সাবলীল। ও যা করছে, তা দুর্দান্ত। উইকেটের পিছনে ভারতের এমন আত্মবিশ্বাসী উইকেটরক্ষকেরই প্রয়োজন।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link