ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের দাপট ছিল স্পষ্ট। যার মূল কারণ মধ্যমাঠে নিয়ন্ত্রণ। যদিও সে ম্যাচে খেলেননি সামিত সোম। তবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে তাকে বাদ রেখে একাদশ সাজানোর প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু মিডফিল্ডে ঠিক কিভাবে তাকে সেটআপ করানো যায়?
ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশ খেলেছে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে। যেখানে ডাবল পিভট হিসেবে ছিলেন হামজা চৌধুরি ও সোহেল রানা। তাদের ঠিক উপরিভাগে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে ছিলেন জামাল ভুঁইয়া। উইংয়ের ডানপাশে কাজেম শাহ ছিলেন। কিন্তু সেটা তার স্বভাবজাত পজিশন না হলেও, যথেষ্ট ভাল করেছেন কাজেম। এমনকি বাংলাদেশের মিডফিল্ড শক্তপোক্ত থেকেছে ভুটানের বিপক্ষে।
জয় পাওয়া একাদশে সামিতকে জায়গা করে দেওয়া কঠিন বটে। এক্ষেত্রে অবশ্য দু’টো ভিন্ন বিষয় ঘটতে পারে। কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা তার ফরমেশনে পরিবর্তন আনতে পারেন। ৪-৪-২ ডায়মন্ড শেপ হতে পারে তার মধমাঠের শক্তির পূর্ণ ব্যবহার। কিন্তু হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা চাইলেই ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলাতে পারেন দলকে।
সেক্ষেত্রে সোহেল রানার পরিবর্তে, জামালকে ডাবল পিভটে নামিয়ে আনা হতে পারে বুদ্ধিমানের কাজ। হামজার সাথে জুটি বেঁধে এই দুইজনে হতে পারেন মধ্যমাঠের চালিকা শক্তি। তাছাড়া জামাল তার ক্যারিয়ারের লম্বা সময় ধরে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবেই খেলেছেন। ভুটানের বিপক্ষে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে সেই অর্থে কোন প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি তিনি।
যদিও হামজার জাতীয় দলে প্রথম গোলের কারিগর ছিলেন তিনি। তবুও মাঠের খেলায় জামালকে বেশ নড়বড়ে ও এলোমেলো ঠেকেছে। অতএব তার স্বভাবজাত পজিশনে ফিরিয়ে নেওয়াই হতে পারে বাংলাদেশের জন্যে সবচেয়ে ফলপ্রসূ। এক্ষেত্রে হামজা বনে যেতে পারেন বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ডার, কিংবা জামাল।
তাহলে খালি হবে অ্যাটাকিং মিডফিল্ড পজিশন। সেখানে বরং কাজেম শাহকে খেলানো উচিৎ। তার দূরদর্শিতা ও ডিফেন্স চেড়া পাসগুলো বাংলাদেশের জন্যে গোলের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুণ। তখন সামিতকে অনায়াসে ডান সাইডের মিডফিল্ডার হিসেবে খেলানো যেতে পারে। তাকে উইংগার হিসেবে খেলালে বাড়তি সুবিধাও পেতে পারে ক্যাবরেরার দল।
এবার যদি ফরমেশন ৪-৪-২ হয়, তাহলেও ডান পাশে সামিতকে রেখে, ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে হামজা, বাম পাশটায় জামাল, আর ডায়মন্ড আকৃতির মিডফিল্ডের শীর্ষে কাজেম শাহ। তাছাড়া ক্ল্যাসিক ৪-৪-২ হলে হামজা-জামাল ডাবল পিভট, ডান পাশে সামিত, বাম পাশে কাজেম। কিন্তু তাতে করে কাজেমের সর্বোচ্চটুকু না পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
অতএব কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার কাছে এখন সুযোগ আছে ভিন্ন ভিন্ন ফরমেশন বাজিয়ে দেখার। কিন্তু খেলোয়াড়দের স্বভাবজাত পজিশনে রেখে তাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চটুকু বের করে নিয়ে আসাই তো ফুটবল ম্যানেজারের কাজ। দেখার পালা স্প্যানিশ কোচ কোন ভাবনা নিয়ে মাঠে নামেন।