বিরাট সম্রাটই আছেন

রোহিত-কোহলির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জোড়া ফিফটি আর যাদব-পান্ডিয়াদের ক্যামিওতে ভারতের দেওয়া পাহাড়সম লক্ষ্যমাত্রা টপকাতে পারেনি ইংলিশরা। বাকিদের ব্যর্থতায় চতুর্থ ম্যাচের মতো নাটকীয় ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হারে ইংলিশরা।

কোহলিকে নিয়ে একটু কথা হচ্ছিলো।

মাঝে মনে হচ্ছিলো, তিনি ঠিক ছন্দে নেই। সেই ছন্দটা একেবারে নিষ্ঠুরভাবে প্রমাণ করে দিলেন টি-টোয়েন্টি সিরিজে। গতকাল আরেকটি ঝড়ো ইনিংস খেললেন। সাথে রোহিত শর্মার স্বভাবসূলভ ইনিংস।

মোতেরায় ইংল্যান্ডকে ৩৬ রানে হারিয়ে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিলো স্বাগতিক ভারত। রোহিত-কোহলির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জোড়া ফিফটি আর যাদব-পান্ডিয়াদের ক্যামিওতে ভারতের দেওয়া পাহাড়সম লক্ষ্যমাত্রা টপকাতে পারেনি ইংলিশরা। বাকিদের ব্যর্থতায় চতুর্থ ম্যাচের মতো নাটকীয় ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হারে ইংলিশরা। টেস্ট সিরিজের পর অধিনায়কের দাপুটে ব্যাটিংয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজও নিজেদের করে নিলো স্বাগতিকরা।

এদিন লোকেশ রাহুলের পরিবর্তে এদিন সুযোগ পান নটরজান। টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে রোহিত-কোহলিরা। ওপেনিং জুটিতেই গড়েন ৯৪ রান! শুরু থেকে মার কাট কাট শটে খেলতে থাকেন রোহিত-কোহলি। তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে ইংলিশ বোলাররা। ৫ ছক্কা ও ৪ চারে ৩৪ বলে ৬৪ রান করে বেন স্টোকসের বলে বোল্ড হয়ে ফেরত যান রোহিত। দ্বিতীয় উইকেটে ১৭ বলে ৩২ রানের ইনিংসের মোতেরার বুকে ছোট খাটো ঝড় তুলেন সূর্যকুমার যাদব। দলীয় ১৪৩ রানে যাদব ফিরলে হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে জুটি গড়েন বিরাট। একপ্রান্তে ঝড় তুলে করেন সিরিজের তৃতীয় ফিফটি!

তৃতীয় উইকেটে কোহলি-পান্ডিয়ার ৪০ বলে ৯১ রানের জুটিতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ২ উইকেটে ২২৫ রানের বিশাল সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। টি-টোয়েন্টিতে এটি ইংলিশদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান ভারতের। শেষ পর্যন্ত ৫২ বলে ৮০ রানে কোহলি ও ১৭ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন হার্দিক পান্ডিয়া। ইংলিশদের পক্ষে ৪ ওভারে ৩১ রানে ১ উইকেট নেন আদিল রশিদ।

জবাবে পাহড়সম লক্ষ্যমাত্র তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ভুবনেশ্বর কুমারের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন জেসন রয়। একে তো পাহাড়সম লক্ষ্যমাত্রা তার উপর রানের খাতা খোলার আগেই রয়ের উইকেট, সব মিলিয়ে শুরুতেই ব্যকফুটে ইংলিশরা। এরপরই মোতেরার বুকে দ্বিতীয় উইকেটে ঝড় তুলেন মালান-বাটলার! দ্বিতীয় উইকেটে ৭৫ বলে ১৩০ রানের জুটিতে চাপ কাটিয়ে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে ইংলিশরা।

এরপরের গল্পটা প্রথম অংশের ঠিক উলটো…..!

ম্যাচে যখন জয়ের স্বপ্নে বিভোর ইংলিশরা! হটাৎই ১২ রানের মাথায় আরো ৪ ব্যাটসম্যান আউট!! মূহুর্তের মধ্যেই পালটে গেলো ম্যাচের চিত্র। পুরো ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নেয় ভারত। বাটলার ৩৪ বলে ৪ ছক্কা ও ২ চারে ৫২ রানে আউট হবার পরই ম্যাচে ফিরে ভারত। ১৩০ রানে ১ উইকেট থেকে ১৪২ রানেই ইংলিশদের নেই ৫ উইকেট! ৪৬ বলে ৬৮ রান করে আউট হন মালান, আসা যাওয়ার মিছিলে ছিলেন বেয়ারস্টো, মরগানরা। এক ওভারেই বাটলার ও মালানকে ফিরান শার্দূল ঠাকুর। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট টাই মূলত ওই ওভারটি।

শেষ ৫ ওভারে দরকার ছিলো ৮৩ রানের প্রায় অসম্ভব লক্ষ্য! ডুবে যাওয়া ম্যাচে কিছুটা আলোর রেখা টানতে ব্যাটে শান দেন বেন স্টোকস। তবে নটরজান, ভুবনেশ্বরদের স্লোয়ার আর বাউন্সারে অসহায় হয়ে শেষ চেষ্টাও বিফলে যায় এই ইংলিশ অলরাউন্ডারের। স্যাম কারানের ৩ বলে ১৪ রানের ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১৮৮ রান করে ইংলিশরা। ৪ ওভারে ৪৫ রানে ৩টি উইকেট লাভ করেন শার্দূল ঠাকুর ও ৪ ওভারে ১৫ রানে ২ উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার।

৪-১ এ টেস্ট সিরিজ জয়ের পর ৩-২ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ভারতের বাজিমাত। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ঘরের মাঠে দুই ফর্মেটে ধরাশায়ী করার পর স্বাগতিকদের লক্ষ্য ওয়ানডে সিরিজেও আধিপত্য বিস্তার করা। কোহলি-মরগানদের লড়াইয়ে সফরের শেষ টা কি হাসি মুখে ফিরতে পারবে মরগানরা নাকি শূন্য হাতেই ইংলিশদের ফেরাবেন কোহলিরা! অপেক্ষায় ক্রিকেটভক্তরা

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...