ওপেনারদের শ্রেষ্ঠত্বের আইপিএল!

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ষোড়শ আসরের শুরুটা হয়েছে ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ব্যাটিং ঝড়ে। এরপর থেকে এ আসরের প্রতি ম্যাচেই গতিপথ বদলে দিচ্ছেন ওপেনাররা। গায়কোয়াড় থেকে কাইল মেয়ার্স, কিংবা বিরাট কোহলি থেকে জশ বাটলার- এখন পর্যন্ত আইপিএলে সবচেয়ে বেশি দাপট দেখিয়েছে ওপেনাররাই। 

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ষোড়শ আসরের শুরুটা হয়েছে ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ব্যাটিং ঝড়ে। এরপর থেকে এ আসরের প্রতি ম্যাচেই গতিপথ বদলে দিচ্ছেন ওপেনাররা। গায়কোয়াড় থেকে কাইল মেয়ার্স, কিংবা বিরাট কোহলি থেকে জশ বাটলার- এখন পর্যন্ত আইপিএলে সবচেয়ে বেশি দাপট দেখিয়েছে ওপেনাররাই।

উদ্বোধনী ব্যাটারদের এমন আধিপত্যের প্রমাণ মেলে ম্যাচের স্কোরকার্ডেই। এ ছাড়া, এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ৩ ব্যাটারের মধ্যে ২ জনই ওপেনার। যা এবারের আইপিএলে ওপেনারদের আগ্রাসনের ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট করে তোলে।

এবারের আসরের উদ্বোধনী ম্যাচের দিকেই ফিরে তাকানো যাক। পুরো ম্যাচে দুই দল মিলিয়ে রান করেছে ৩৬০। আর এর মধ্যে দুই দলের ৪ ওপেনার মিলিয়েই রান করেছেন ১৮১। অর্থাৎ ঐ ম্যাচে মোট রানের ৫০.২ শতাংশই এসেছে ওপেনারদের কল্যাণে।

চেন্নাইয়ের হয়ে সে ম্যাচে ৯২ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেছিলেন গায়কোয়াড়। আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচের ইতিহাস বিবেচনা করলে যা আবার তৃতীয় সর্বোচ্চ। পরের ম্যাচেও ছিল সেই ধারাবাহিকতা।

এর আগে ২০০৮ আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম খেলেছিলেন ১৫৮ রানের ঝড়ো এক ইনিংস। উদ্বোধনী ম্যাচের হিসেবে সেটিই এখন পর্যন্ত আইপিএলের ইতিহাসে একমাত্র সেঞ্চুরির ঘটনা। তাই আর ৮ রান করলেই সেই তালিকায় ঢুকতে পারতেন গায়কোয়াড়।

অবশ্য গায়কোয়াড়ের ৯২ রানের ইনিংসও এ ম্যাচ জেতাতে পারেনি চেন্নাই সুপার কিংসকে। শুভমান গিলের ৬৩ রানের ইনিংসে ম্যাচটি জিতে নেয় গুজরাট টাইটান্স।

এবারের আসরের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল পাঞ্জাব কিংস আর কলকাতা নাইট রাইডার্স। এ ম্যাচে ওপেনারদের আধিপত্য না থাকলেও ম্যাচের এক চতুর্থাংশ রান আবার এসেছিল সেই উদ্বোধনী ব্যাটারদের কল্যাণেই। ওপেনারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শিখর ধাওয়ান।

আইপিএলের দ্বিতীয় দিনের বিকালের এ ম্যাচের পরেই সন্ধার ম্যাচে আবার দেখা মিলে ওপেনারদের ঝলকানি। এবার ব্যাটিং তাণ্ডব চালান লখনৌ সুপার জায়ান্টসের কাইল মেয়ার্স। ৩৮ বলে এ ক্যারিবীয় ব্যাটার খেলেন ৭৩ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস।

লখনৌর মেয়ার্সের এমন ইনিংসের বিপরীতে দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়েও এ দিন ফিফটি হাঁকিয়েছেন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। যদিও দিল্লীকে ম্যাচ জেতাতে পারেননি তিনি। তবে ম্যাচের মোট রানের ৪৪.৩৪ শতাংশ এসেছিল দুই দলের ৪ ওপেনারের সৌজন্যে।

মেয়ার্সের ব্যাটিং তাণ্ডবের রেশ না কাটতেই পরের দিনেই রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের উপর রীতিমত ঝড় তোলেন ওপেনার জশ বাটলার। ২২ বলে খেলেন ৫৪ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস। বাটলারের সাথে অপর ওপেনার জেসওয়ালও এ দিন তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধ-শতক।

জশ বাটলারের ঝড়ের পরেই আবার রাতের ম্যাচে বিরাট কোহলি, ফাফ ডু প্লেসির ব্যাটিং তাণ্ডব। বলে রাখা ভাল, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ইনিংস শুরু করেছিলেন এই দুই ব্যাটারই। ডু প্লেসির ৭৩ আর কোহলি অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংসের সুবাদে এ ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে ৮ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয় ব্যাঙ্গালুরু।

এবারের আসরে এখন পর্যন্ত হওয়া প্রথম ৫ ম্যাচে ওপেনারদের দাপট কতটা, তার আনুকূল্যে প্রমাণ মিলবে আরেকটি তথ্যে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১১ টা অর্ধ-শতক দেখা গিয়েছে এবারের আসরে। যার মধ্যে ৮ টিই এসেছে ওপেনারদের সৌজন্যে। বাকি তিনটি অর্ধ-শতক এসেছে তিলক ভার্মা, সানজু স্যামসন আর ভানুকা রাজাপাকশের কাছ থেকে। অর্থাৎ, এবারের আইপিএল যে ওপেনাররাই মাতাচ্ছেন, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ কিংবা দ্বিমত পোষণ করার সুযোগ নেই।

তবে কি এবারের আইপিএল শুধুই ওপেনারদের হতে যাচ্ছে? সেটির রায় এখনই দেওয়া দুস্কর। সবেমাত্র আসরের শুরু হয়েছে। এখনও এ টুর্নামেন্টের ক্রান্তিলগ্নের জন্য দীর্ঘ পথ বাকি। অনেক রঙ বদলানো বাকি। তবে আইপিএলের শুরুর রঙটা এনে দিয়েছেন ওপেনাররাই। তাতে এখন পর্যন্ত সেভাবে চোখ রাঙানি দেখাতে পারেননি বোলাররা। পরবর্তীতে এমন চিত্রের কতটা রদবদল ঘটবে তা সময়ই বলে দিবে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...