জাকের ‘দ্য ইম্প্যাক্টফুল ফিনিশার’ আলি শো

সময়ের ঘূর্ণনে সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতি মাথায় রেখেই ব্যাটিং করে যাচ্ছেন জাকের। দলের যখন যা প্রয়োজন সেই মোতাবেক রান তোলার গতিতে দিচ্ছেন মনোযোগ। কখনো লাগাম টেনে নিজেকে সংযত করছেন। আবার কখনো হাত খুলে বাহারি সব শট খেলে দ্রুত রান তুলছেন। এমনকি মিরপুরের মন্থর গতির উইকেটও তাকে স্লথ করতে পারেনি।

চট্টগ্রামের রানের বন্যা পেরিয়ে মিরপুরে খেলা গড়াতেই আবার সেই চিরায়ত রান খরা। মন্থর গতির উইকেটে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তুখোড় ব্যাটিং অর্ডার খানিকটা ব্যর্থ। চট্টগ্রামের রেশ কাটিয়ে উঠতে হয়েছেন যেন ব্যর্থ। তবুও একটা মৃদু ঝড় উঠল হোম অব ক্রিকেটে। জাকের আলি অনিক হাজির হলেন প্রলয় হয়ে।

ওবেদ ম্যাককয়ের বলটায় দারুণ এক পুল শট হাঁকিয়ে ইনিংস শেষ করেন জাকের। তাতে করেই অন্তত মিরপুরের উইকেটে লড়াই করবার মত পুঁজি পেয়ে যায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ১৪০ রানের এই সংগ্রহ অবধি কুমিল্লাকে পৌঁছাতে জাকের আলি অনিক খেলেন স্রেফ ১৬ বল। আর এই ১৬ বল থেকে ৩৮টি মহাগুরুত্বপূর্ণ রান যুক্ত করেছেন ডান-হাতি এই ব্যাটার।

এই তো কিছুদিন আগেই এই জাকের আলিকে ঘিরেই ভরা মজলিশে আক্রোশ ঝড়েছে কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের কণ্ঠে। তিনি বলেছিলেন যে বড্ড অবহেলা করা হচ্ছে তাকে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচকদের ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েননি দেশসেরা এই কোচ।

সত্যিকার অর্থেই জাকের আলি অনিকের জাতীয় দলে জায়গা না পাওয়াটা খানিকটা বিস্ময়কর। ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ লম্বা সময় ধরেই পারফরম করে যাচ্ছেন জাকের আলি। একদফা জাতীয় দলে ডাক এসেছিলও বটে। তবে শেষ অবধি তার অভিষেক হয় এশিয়ান গেমসে। এছাড়া আর তার উপর কেউ ভরসা করতে পারেনি। এরপরই অজানা কারণে আবারও ছিটকে যান জাতীয় দলের রাডার থেকে।

সেই সময়টাকে পেছনে ফেলে চলমান দশম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখে চলেছেন তরুণ এই ব্যাটার। না সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সবার উপরে নেই তিনি। উইকেট রক্ষক হিসেবেও নিয়মিত দস্তানা হাতে জাদু দেখাচ্ছেন না। তিনি যা করছেন তাকে সহজ ইংরেজি শব্দে বলে, ‘ইম্প্যাক্টফুল’। বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় কার্য্যকর।

সময়ের ঘূর্ণনে সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতি মাথায় রেখেই ব্যাটিং করে যাচ্ছেন জাকের। দলের যখন যা প্রয়োজন সেই মোতাবেক রান তোলার গতিতে দিচ্ছেন মনোযোগ। কখনো লাগাম টেনে নিজেকে সংযত করছেন। আবার কখনো হাত খুলে বাহারি সব শট খেলে দ্রুত রান তুলছেন। এমনকি মিরপুরের মন্থর গতির উইকেটও তাকে স্লথ করতে পারেনি।

 

ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ২৩৭ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে ব্যাট চালিয়েছে তিনি। ১৭ ওভারের আগেই ৯৭ রানে ৭ উইকেট চলে যাওয়া দলটাকে শেষ অবধি নিয়ে গেছেন ১৪০ এর দোরগোড়ায় নিয়ে গেছেন। শেষ অবধি অপরাজিত থাকার প্রচেষ্টাও করেছেন। ঠিক এভাবেই দলের প্রয়োজন মাফিক নিজের সেরাটাই দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন জাকের আলি অনিক।

‘পারফেক্ট ফিনিশার’! চার খানা ছক্কা হাঁকানোর পাশাপাশি দুইটি বাউন্ডারিও এসেছে তার ব্যাট থেকে। এমনটি তিনি নিয়ম করেই করে যাচ্ছেন। অথচ এমন একজন কার্য্যকর খেলোয়াড় ব্রাত্য থেকে যাচ্ছেন। আসন্ন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের ঘোষিত স্কোয়াডে নেই কোন যথাযথ ফিনিশার। একঝাক ওপেনারফঘেরা স্কোয়াডে অন্তত ফিনিশার হিসেবে জায়গা পেতেই পারতেন জাকের আলি অনিক। হয়ত কোচ সালাউদ্দিনের বলা কথাটাই ঠিক!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...