কি ঘটেছিল জামালদের সাথে?

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ যখন গাড়ি থেকে নামছিলেন ততক্ষণে বাসে উঠে গিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। তবে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের জন্য তাঁর গাড়ির পাশেই অপেক্ষা করেছিলেন লাল-সবুজের কাপ্তান জামাল। হয়তো ভেবেছিলেন একটা দেশের অধিনায়ক হিসেবে হাই হ্যালো করতে পারবেন তারকা গোলরক্ষকের সাথে।

১৪ বছর পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ; ফাইনালে উঠতে না পারলেও বাংলাদেশ ফুটবলের প্রেক্ষাপটে এটি আলোড়ন তোলার মতই অর্জন। তবে জাতীয় দল যখন বিমান বন্দরে তখন বরণ করে নেয়ার মত কিছু ঘটেনি।

ফুটবল দল যখন দেশে ফিরেছিল তখনই কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন বিশ্বকাপজয়ী এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কাকতালীয়ভাবেই তাই এই তারকার সঙ্গে দেখা হয়ে যায় জামাল ভূঁইয়াদের। তবে এরপর যা ঘটে সেটা বিব্রতকর আর দু:খজনক।

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ যখন গাড়ি থেকে নামছিলেন ততক্ষণে বাসে উঠে গিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। তবে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের জন্য তাঁর গাড়ির পাশেই অপেক্ষা করেছিলেন লাল-সবুজের কাপ্তান জামাল। হয়তো ভেবেছিলেন একটা দেশের অধিনায়ক হিসেবে হাই হ্যালো করতে পারবেন তারকা গোলরক্ষকের সাথে।

তবে বড্ড ভুল ছিলেন দেশীয় এই মিডফিল্ডার।ভিড়ের মধ্যে তাঁর দিকে খেয়ালই করেনি নিরাপত্তারক্ষীসহ অন্যরা। দুই একজন জামাল, ক্যাপ্টেন বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেও মন গলেনি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। তাই শেষমেশ বিফল হয়েই ফিরেছেন জামাল ভূইয়া।

এমিলিয়ানো মার্টিনেজের দেখা পাননি দেশ সেরা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোও। সাংবাদিকদের সামনে জামাল নিজের মন খারাপ লুকালেও হতাশা প্রকাশ করেছেন জিকো। দেশ সেরা এই তারকাদের এমন অবহেলা মানতে পারেননি দেশের সাধারণ ভক্ত-সমর্থকেরা। ফলে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক;আয়োজকদের দিকেও আঙুল তুলেছেন অনেকে।

অবশ্য আয়োজক প্রতিষ্ঠান নেক্সটের কোন প্রতিনিধি তখন ছিল না এমিলিয়ানো মার্টিনেজের সঙ্গে। কেবল ভারতীয় শতদ্রু দত্ত ছিলেন সে সময়, আর ছিল বেশ কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী। কিন্তু জামাল, জিকোদের সঙ্গে দেখা করার এমিকে পাঁচ সাত মিনিট দাঁড় করানো কঠিন কিছু ছিল না। বাংলাদেশ জাতীয় দলের গোলকিপার কিংবা অধিনায়ক পরিচয় পেলে হয়তো খুশি হয়েই কথা বলতেন গোল্ডেন গ্লাভস জয়ী এই আর্জেন্টাইন।

জামালের জায়গায় যদি সাকিব আল হাসান কিংবা তামিম ইকবাল থাকতেন তাহলেও কি এমন হতো ঘটনা? মোটেও না, তখন নিজ থেকেই হয়তো এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে আটকাতেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ঠিক এই ব্যবহারটিতে দুঃখ পেয়েছেন বাংলাদেশীরা। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা একজনের প্রতি এমন আচরণ মানতে পারছেন না কেউই।

ঢালাওভাবে এই ভ্রমণের আয়োজক কিংবা উদ্যোক্তাকে হয়তো দোষ দেয়া যায় না তবে দেশের ফুটবল সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কোন ইভেন্ট না রাখাটাও উচিত হয়নি তাদের।

হ্যাঁ, বাংলাদেশের ফুটবল র‍্যাংকিংয়ে পিছিয়ে। সেরা ফুটবলারদের সঙ্গে তুলনা করলে ধারে কাছেও থাকবেন না জামাল ভূইয়া কিংবা আনিসুর রহমান জিকো। কিন্তু তাঁরাও বাংলাদেশের সেরাদের একজন; তাঁরাও লাল-সবুজের পতাকাবাহী। অন্তত কাকতালীয়ভাবে একই সময়ে বিমান বন্দরে উপস্থিত থাকায় দেখা হতেই পারতো দুই দেশের ফুটবল তারকাদের।

জামালের মন খারাপ করার মত ভিডিওটি কিংবা জিকোর সাক্ষাৎকারটি প্রতিটি বাংলাদেশী ফুটবল ভক্তের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সর্বত্র এটি ছড়িয়ে পড়েছে, হয়তো আর্জেন্টিনার কারো চোখেও পড়বে এমন কিছু, তখন তাঁরাও ভাববে – আমাদের জাতীয় ফুটবল দলের সাথে এমন অবহেলা করা হয়?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...