গ্রীষ্মের দুপুরে সূর্যের তাপ প্রখর। তবে এবারের প্রখরতা ছাড়িয়ে যাচ্ছে আগের সব রেকর্ড। সেই তাপকে উপেক্ষা করেই দৌড়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের তিন কাণ্ডারি। পেছন থেকে দেখলে চিনতে পারা খানিকটা দুষ্কর। মাংসপেশিগুলোর গাঁট যেন সুঠামদেহী কারোর।
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ফিটনেসও যে একেবারে ফেলনা নয়, সেই বার্তাই তো দিচ্ছেন তিনজন। প্রচণ্ড গরমে যখন হাঁসফাঁস অবস্থা, তখন গায়ের জার্সি খুলে ফেলা বাড়াবাড়ি কিছু নয়। অনুশীলনে চাইলে করাই যায়। গড়ন তবুও প্রদর্শন করার মতই।
নাজমুল হোসেন শান্তই যেন নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই যাত্রার। তার সঙ্গী মাহমুদুল হাসান জয় ও নবাগত শাহাদাত হোসেন দিপু। তিন প্রজন্ম তো নয়। তবে সময়ের ভিন্নতা তবু রয়েছে নিশ্চয়ই। কিন্তু একটা জায়গায় এরা সবাই এক। একটি ফুলের তিন পাপড়ি।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিট সামলে নেওয়ার দায়িত্ব যে তাদের কাঁধেই। নাজমুল হোসেন শান্ত একটা সময়ে বেশ ধুঁকেছেন। তিনি ব্যাট হাতে বড্ড অনুজ্জ্বল ছিলেন। কিন্তু সেই সময়টা তিনি পেছনে ফেলেছেন। এখন তো রীতিমত আইসিসির মাস সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়েও রয়েছেন শান্ত।
এই যে একটা কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছেন শান্ত, সেই পথেরও তো রয়েছে নানান গল্প। সেই গল্প নিশ্চয়ই অনুপ্রাণিত করবার মতই। সেই অনুপ্রেরণাও কিন্তু জয় ও দিপু চাইলেই পেতে পারেন শান্তর কাছ থেকে। অবশ্য জয়ের এখন বেশ প্রয়োজন সেই টোটকা।
মাহমুদুল হাসান জয় টেস্টে সম্ভাবনার প্রদীপ জ্বেলেই তার আগমন। তবে মাঝপথে খানিকটা ছন্দপতন হয়েছে তার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাশার চাপটাই যেন থমকে দিয়েছে তাকে। থমকে যাওয়াই নিশ্চয়ই শেষ কথা নয়। সেই বার্তা তো নাজমুল হোসেন শান্ত দিয়েই রেখেছেন।
টানা রান খরা শেষে তিনি এখন টানা হচ্ছেন সিরিজ সেরা। ব্যাট থেকে রান ঝড়ছে বৃষ্টির অবারিত ধারার মত। এই সময়টা অধ্যবসায় আর পরিশ্রমের দ্বিতীয় কোন বিকল্পের খোঁজ শান্ত করেননি। তিনি এখন তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
মানসিক দৃঢ়তার কথা তো ইতোমধ্যেই শুনিয়েছেন দিপু। পরিশ্রমও তিনি করতে নিশ্চয়ই চাইবেন। সেদিক থেকে রোল মডেলও হতে পারে নাজমুল হোসেন শান্ত। একেবারেই নবাগত দিপু। জাতীয় দলের শিবিরে এসেছেন এইতো দু’দিন হয়। এখনও দলের পরিবেশ আয়ত্ত্ব করবার চেষ্টা করছেন তিনি।
এসেই নাজমুল হোসেন শান্তর মত ক্রিকেটারদের সান্নিধ্য। অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে তো উঠে আসা। বাজে সময়ের মারপ্যাঁচ থেকে বেড়িয়ে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার দৃষ্টান্ত দিপু, জয়দের হাতে নাগালে। ঘরের মানুষদের কাছ থেকে পাওয়া অনুপ্রেরণাই তো উৎকৃষ্ট জ্বালানি। বিজয় কেতনের অপেক্ষা কেবল।