আইসিসির দূরদর্শিতার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্বকাপ

ক্রিকেট সমর্থকদের একটা অভিযোগ আছে। আইসিসি তার সকল বৈশ্বিক আসরে ভারত-পাকিস্তানকে ঘিরে করে সকল পরিকল্পনা। তাতে করে আর্থিক লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির। নিকট অতীত অবশ্য এই অভিযোগের স্বপক্ষেই দিচ্ছে সাক্ষ্য।

তবে মানুষ যা চায় তা কি আর হয়? সবসময় হয় না। প্রকৃতির ইচ্ছেতেও বদলে যেতে পারে অনেক কিছু। তেমনটিই যেন ঘটেছে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। বৃষ্টির গ্যাড়াকলে পরে বাদ পড়েছে পাকিস্তান। তাতে অবশ্য তাদেরও রয়েছে দায়। অন্যদিকে ঠিক তার পরদিনই ভারতের একটি ম্যাচ হয়েছে পণ্ড। কারণ সেই বৃষ্টি।

তবে দিনশেষে কি বৃষ্টিকেই সমস্ত দায় দিয়ে দেওয়া যায়? সম্ভবত যায় না। পরিকল্পনার ঘাটতি, স্বদিচ্ছার অভাব এসব কারণেও আসলে দিনশেষে বৃষ্টির জলে ভেসে যাচ্ছে ম্যাচগুলো। পণ্ড হচ্ছে আইসিসির আর্থিক লাভবান হওয়ার পরিকল্পনার। লাভের চাইতে ক্ষতিই যেন হচ্ছে বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজনের মূল কারণ ছিল পৃথিবীর অন্যতম শক্তিধর দেশে ক্রিকেটের উন্মাদনা ছড়িয়ে দেওয়া। সে উদ্দেশ্য খানিকটা হলেও হাসিল হয়েছে বটে। প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয়, প্রথম প্রচেষ্টায় তারা দ্বিতীয় রাউন্ডেও দিয়ে ফেলেছে পা।

কিন্তু আদোতে এমন অপ্রস্তুত আয়োজন টুর্নামেন্টের জৌলুসকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে। যুক্তরাষ্ট্রে এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। আর গ্রীষ্মকালে বৃষ্টি যেন অলিখিত এক সত্য। ঝড় হওয়াও ভীষণ স্বাভাবিক। সেই ঝড়ের কবলে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডের ম্যাচ, সেই সাথে ভারত ও কানাডার ম্যাচ। যদিও ভারত ও কানাডা ম্যাচের দিন বৃষ্টি থামলেও, বাজে আউট-ফিল্ডের কারণে খেলা আর মাঠে গড়ায়নি।

এখানেই পরিকল্পনার ঘাটতি। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটীয় অবকাঠামো ততটাও প্রতিষ্ঠিত নয়। এই টুর্নামেন্টের জন্যে মাঠ প্রস্তুত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেসব মাঠ প্রস্তুতিতে যথেষ্ট সময় ব্যয় করেনি দেশটির ক্রিকেট সংস্থা। সে কারণেই ড্রেনেজ ব্যবস্থার যাচ্ছে তাই অবস্থা। বৃষ্টি হলেই খেলা মাঠে গড়াতে পেরিয়ে যাচ্ছে অনেক সময়। ম্যাচ মাঠে না গড়াবার নজিরও তো হয়ে গেছে বেশ কয়েকটা।

যেই আর্থিক লাভের নেশায় আইসিসি ভারত, পাকিস্তানকে মুখোমুখি করতে চায় প্রতিবার। সেটাই যেন ভেসে গেছে সঠিক পরিকল্পনা আর যথাযথা সতর্কতা অবলম্বন না করায়। তাছাড়া পাকিস্তান বাদ পড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নিশ্চয়ই হচ্ছে আইসিসি। একেই সম্ভবত বলে আমছালা সব যাওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link