কোকড়া চুলের ছোকড়া

নিয়ম হয় মানুষকে খোলসে আবদ্ধ রাখতে আর সেই নিয়ম ভাঙেন যারা তাদের মানুষ মনে রাখে একটা পোলারাইজড নির্ণয় পদ্ধতিতে - হয় নায়ক, নতুবা ভিলেন! কত শত বিশ্লেষণ, এখানে পা ফেলতে হবে, এখানে হাত থাকবে, এটা হবে রিলিজ পয়েন্ট, এই এতো ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থাকবে আপনার কাঁধ ও কবজি! এসব তোয়াক্কা না করে আম্পায়ারের মুখের সামনে দিয়ে বল ছেড়ে ব্যাটসম্যানের সামনের পায়ের বুড়ো আঙুলে বলের পর বল করে গিয়েছেন একজন লাসিথ মালিঙ্গা।

নিয়ম হয় মানুষকে খোলসে আবদ্ধ রাখতে আর সেই নিয়ম ভাঙেন যারা তাদের মানুষ মনে রাখে একটা পোলারাইজড নির্ণয় পদ্ধতিতে – হয় নায়ক, নতুবা ভিলেন!

কত শত বিশ্লেষণ, এখানে পা ফেলতে হবে, এখানে হাত থাকবে, এটা হবে রিলিজ পয়েন্ট, এই এতো ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থাকবে আপনার কাঁধ ও কব্জি !

এসব তোয়াক্কা না করে আম্পায়ারের মুখের সামনে দিয়ে বল ছেড়ে ব্যাটসম্যানের সামনের পায়ের বুড়ো আঙুলে বলের পর বল করে গিয়েছেন একজন লাসিথ মালিঙ্গা।

মালিঙ্গা শুধু কিংবদন্তিই না, মালিঙ্গা দর্শন, যে কোন উদ্ভাবনের পেছনে যে দর্শন থাকে তার প্রধান অস্ত্র থাকে মানুষের উপজীব্য হয়ে ওঠে মানুষকে কোন একটা ইন্দ্রিয়তে তার উপযোগিতা গড়ে তোলা।

মালিঙ্গার দর্শন ছিল ওয়ান ডায়মেনশনাল, এন্টারটেইনমেন্ট! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ উইকেট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) সর্বোচ্চ উইকেট।

যেন তেন উইকেট না! টো ক্রাশিং ইয়র্কার! যা খেলতে অনেক টেকনিকালি স্টাবর্ন ব্যাটসম্যানের কব্জি নড়ে গেছে, ব্যাট নামাতে দেরি হয়ে গেছে, বোল্ড এড়াতে এলবিডব্লিউ হয়েছেন, কখনো কখনো ক্রিজের আরও ভেতরে দাঁড়িয়েছেন কিন্তু মালিঙ্গা ছিলেন ইনএভিটেবল বিপদ!

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র ডাবল হ্যাটট্রিক (চার বলে চার উইকেটকে ডাবল হ্যাটট্রিক কেন বলা হয় আমি জানি না)। আর সেটাই হয়তো স্লিঙ্গা মালিঙ্গাকে মনে রাখার জন্য যথেষ্ট।

একটা মরা ম্যাচে চার বলে চার উইকেট নিয়ে মানুষকে ফেসবুকের ঠিক আগের যুগে টিভির সামনে বসিয়ে দিয়েছিলেন মালিঙ্গা। সবচেয়ে নিরস বিশ্বকাপগুলোর একটিতে নিজের আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন মালিঙ্গা।

কোন বিতর্ক ছাড়াই মালিঙ্গা বিশ্বের সেরাদের একজন ! টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সেরাও বলে দেয়া যায়।

টেস্ট ক্রিকেট ছেড়ে দিয়েছিলেন ২০১০ সালেই, বিশ্ব ক্রিকেটে উদাহরণ তৈরি করেছিলেন, খেলাটা আসলে ইচ্ছা ও আনন্দের।

শুধু ঐতিহ্য আর কোন ধর্মীয় উপাসনার মতো মেনে ‘টেস্ট ক্রিকেটই ক্রিকেট’ এমন বুলি আওড়ানো খেলাটায় আনন্দ থাকে না, আর অনিচ্ছায় স্বর্গে গেলেও আনন্দ নাই।

যাত্রাটা লম্বা ছিল, জুতো জোড়া ছিল ক্লান্ত, শেষবেলা এসে তাদের দিলেন শ্রান্ত হওয়ার সময়। বিদায় বেলায় মাহেলা জয়াবর্ধনে মনে করে লিখলেন কোকড়া চুলের ছোকড়ার কথা, যে গলে স্পর্ধা দেখান বল করে হতভম্ব করে দেয়ার!

সাঙ্গাকারা লিখেছেন, ক্রিকেট থেকে যা নেয়া হয়েছে তা এবারে ফিরিয়ে দেয়ার পালা, অনেক কিছু শেখার আছে মালিঙ্গার কাছে। আট্রু এন্টারটেইনার! আ লিজেন্ট! আ নর্মস ব্রেকার!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...