দ্য লাস্ট ফ্রন্টিয়ার

পাকিস্তানের বিপক্ষে রোহিত শর্মা যখন আউট হন, তাঁর চেহারায় নিজের প্রতি বিরক্তি ফুটে উঠেছিল। কেউ হুট করে দেখলে ভাবতে পারে তিনি বুঝি রান করতে ব্যর্থ হয়েছেন – অথচ ততক্ষণে ৮৬ রানের বিধ্বংসী এক নক খেলেছিলেন। একটা ব্যাপার তাই স্পষ্ট, এখন আর অল্পতে তুষ্ট হন না ভারত অধিনায়ক।

এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৩১ রানের অতিমানবীয় ইনিংস খেলেছিলেন এই ওপেনার। সেদিন মাত্র ৬৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন তিনি, আর তাতেই বিশ্বকাপে ভারতের দ্রুততম শতকের রেকর্ড তৈরি হয়। রশিদ খানরা হিটম্যানের হিট শো দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি।

এই বিশ্বকাপে রোহিত একটু বেশিই আক্রমনাত্মক পন্থা অবলম্বন করেছেন। পুরো টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৪১.৮৩; আর ছক্কা মেরেছেন ১১টি। এসবের জন্য যে তাঁকে বাড়তি কিছু করতে সেটা একদমই বলার সুযোগ নেই। নিজের সহজাত ব্যাটিং দিয়েই বলকে তুলোধুনো করেন এই তারকা।

অনুশীলনে রোহিত কোন ছাড় দেন না, নিজের ছোট ছোট দুর্বলতাও খুঁজে বের করে শুধরে নেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৬ বছর পার করার পর ব্যাটিংয়ের নাড়ি নক্ষত্র জানা হয়ে গিয়েছে তাঁর। তিনি জানেন কি করতে পারেন; এটাও জানেন কি করতে পারেন না। দেশে কিংবা বিদেশে, পেস আর স্পিনের বিরুদ্ধে, সমান তালে খেলতে দেখা যায় তাঁকে।

সবমিলিয়ে ভারত কাপ্তান এখন ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’। কখন আক্রমণে যেতে হবে, কোন বোলারকে লক্ষ্য বানাতে হবে, মাঠের কোনদিকে কোন শট খেলবেন সব সিদ্ধান্ত মুহূর্তের মধ্যে নিতে পারেন তিনি। সর্বশেষ পাকিস্তানের বৈচিত্র্যময় পেস আক্রমণভাগের বিরুদ্ধে যেভাবে খেলেছেন এই ডানহাতি, তাতে তাঁর সামর্থ্য নিয়ে আর প্রশ্ন করার সুযোগ নেই।

২০১১ বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছিলেন রোহিত শর্মা, ওয়াংখেড়েতে মহেন্দ্র সিং ধোনি যখন ট্রফি হাতে উল্লাস করছিলেন রোহিতকে তখন সেটা দেখতে হয়েছিল দূর থেকে। কিন্তু সেই দু:সময়কে কেটে গিয়েছে, এখন তিনিই তাঁর দলকে নিয়ে ছটছেন বিশ্বজয়ের মিশনে। আর সেজন্য যা যা করা দরকার সবকিছু করতে প্রস্তুত ‘হিটম্যান’।

দলের বাকিরাও অধিনায়কের কথা মানতে এক পায়ে খাড়া। সবাই মিলেই ১৯ নভেম্বর শিরোপা উৎসব করতে চায় আহমেদাবাদে। সেই ইচ্ছে পূরণের পথে কয়েক ধাপ ইতোমধ্যে পার করে এসেছে স্বাগতিকরা, তবে এখনো বাকি আছে আরো অনেকটা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link