Social Media

Light
Dark

তবুও তো বিশ্বকাপ জয়ী

দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জয় করাটা একজন ক্রিকেটারের জন্য স্বপ্নের মত। খুব কম ক্রিকেটারেরই এই গৌরব অর্জনের সুযোগ হয়। একটা বিশ্বকাপ গোটা ক্যারিয়ারে একজন ক্রিকেটারের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হতে পারে। তবে ক্রিকেট ইতিহাসে এমন কিছু ক্রিকেটারও আছেন যারা বিশ্বকাপ ট্রফিটা হাতে তুলেছে কোনো ম্যাচ না খেলেই।

অর্থাৎ তাঁরা বিশ্বকাপ জয়ী দলের স্কোয়াডে ছিল তবে ওই আসরে কোনো ম্যাচই খেলেননি সেই ক্রিকেটার। এমনই সব বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটারদের নিয়ে এই তালিকা।

  • ব্র্যাড হ্যাডিন (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে অ্যাডাম গিলক্রিস্টের যোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন ব্র্যাড হ্যাডিন। অস্ট্রেলিয়া যখন গিলক্রিস্টের মত একজন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান খুঁজছিল তখন সেই দায়িত্ব পালন করেন হ্যাডিন। তবে ২০০৭ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ছিলেন এই ব্যাটসম্যান।

যদিও সেই সময় গ্রিলক্রিস্ট তাঁর সেরা সময় পাড় করছিলেন। ফলে সেই সময় হ্যাডিনের ম্যাচ খেলার কোনো সুযোগ ছিল না। ২০০৭ বিশ্বকাপের ট্রফিটা হাতে নিলেও সেই আসরে একটি ম্যাচও খেলেননি এই ক্রিকেটার।

  • মারভান আতাপাত্তু (শ্রীলঙ্কা)

১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ জয় করে গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে থমকে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। অর্জুনা রানাতুঙ্গার সেই দলে মিডল অর্ডার ছিল ভীষণ শক্তিশালি। এছাড়া ওপেনার হিসেবেও ছিলেন সনাথ জয়সুরিয়া। তাই সেই সময়ের শ্রীলঙ্কার একাদশে জায়গা করে নেয়া আতাপাত্তুর জন্য সত্যিই কঠিন ছিল।

তাঁকে মূলত দলে রাখা হয়েছিল শেখার জন্যই। ফলে সেই বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচ না খেলেই চুমু খেয়েছিলেন সেই শিরোপাটিতে। পরবর্তীকালে শ্রীলঙ্কার অধিনায়কও হয়েছিলেন এই ক্রিকেটার।

  • লিয়াম ডওসন (ইংল্যান্ড)

সম্প্রতি সময়ে বেশকিছু নজর কাড়া পারফর্মেন্স করেছেন ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটার। তবে ২০১৯ বিশ্বকাপ দলেও ছিলেন তিনি। সেই দলে অভিজ্ঞ বেন স্টোকস, জো রুট বা জনি বেয়ারস্টোরা থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই একাদশে জায়গা পাননি।

তবুও ড্রেসিং রুম থেকে দলকে উজ্জীবিত করে গিয়েছেন পুরো বিশ্বকাপ জুড়ে। ফলে তাঁর নামের পাশেও আছে একটি বিশ্বকাপ।

  • উপুল চন্দনা (শ্রীলঙ্কা)

১৯৯৬ বিশ্বকাপ পরবর্তী শ্রীলঙ্কা দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল উপুল চন্দনার। তবে সেই বিশ্বকাপে মাঠে নামতে পারেননি এই ক্রিকেটার।

সেই সময় মুরালিধরণের পরিবর্তে একাদশে জায়গা পাওয়াটাও সম্ভব ছিল না এই স্পিনারের জন্য। ফলে সাইড বেঞ্চে বসেই বিশ্বকাপটা দেখতে হয়েছে এই ক্রিকেটারকে।  কোনো  ম্যাচ না খেলেই হাতে নিয়েছিলেন সেই সোনালি ট্রফি।

  • মিশেল জনসন (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বোলার মিশেল জনসন। বিশ্ব ক্রিকেটেও লম্বা সময় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এই পেসার। তবে ২০০৭ বিশ্বকাপে দলে থেকেও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি এই বোলার।

কেননা অস্ট্রেলিয়ার সেই বোলিং লাইন আপে ছিলেন ব্রেট লি ও গ্ল্যান ম্যাকগ্রার মত পেসার। ফলে তিনিও বিশ্বকাপ জিতেছেন কোনো ম্যাচ না খেলেই।

  • সুনীল ওয়ালসন (ভারত)

১৯৮৩ সালে ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন সুনীল ওয়ালসন। সেই দলে কপিল দেব, মহিন্দর অমরনাথদের পেছনে ফেলে একাদশে জায়গা পাওয়ার সুযোগ ছিল না সুনীল ওয়ালসনের সামনে। তবে সাইড বেঞ্চ থেকে সবসময় হাসিমুখে সাহস জুগিয়ে গিয়েছেন দলকে। তাঁর পুরষ্কার হিসেবেই পেয়েছিলেন প্রথম বিশ্বকাপ।

  • টম কুরান (ইংল্যান্ড)

সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয়ী দলের আরেক সদস্য ছিলেন টম কুরান। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ তারকা হিসেবেও ভাবা হচ্ছে তাঁকে। ফলে ২০১৯ বিশ্বকাপে ম্যাচ না পেলেও ২০২৩ বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় নিশ্চই থাকবেন তিনি। তবে সেবারও বিশ্বকাপ জিততে পারবেন কিনা সেটাও দেখার বিষয়।

  • নাথান ব্র্যাকেন (অস্ট্রেলিয়া)

২০০৩ বিশ্বকাপে তিনি দলে এসেছিলেন জেসন গিলেস্পির পরিবর্তে। তবে সেই সময় অস্ট্রেলিয়া দলে পেস ডিপার্টমেন্টে ব্রেট লি , ম্যাকগ্রাদের মত তারকা ক্রিকেটাররা ছিলেন। ফলে ২০০৩ বিশ্বকাপে তাঁর ম্যাচ খেলতে পারার সম্ভাবনাও ছিল না। তবুও তাঁর নামের পাশে আছে একটি বিশ্বকাপ।

  • নাথান হরিজ (অস্ট্রেলিয়া)

২০০৩ বিশ্বকাপে শেন ওয়ার্নের পরিবর্তে দলে এসেছিলেন এই লেগ স্পিনার। তবে অস্ট্রেলিয়া সেই সময় তাঁর উইনিং কম্বিনেশন ভাঙেনি। ফলে সেই বিশ্বকাপে আর ম্যাচ খেলা হয়নি এই বোলারের। তবুও নামের পাশে তো একটা বিশ্বকাপ আছে।

  • কলিস কিং (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

১৯৭৫ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ জয়ী দলে ছিলেন কোলিস কিং। সেই বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচ খেলেননি তিনি। তবে তাঁর দল বিশ্বকাপ জিতেছিল ঠিকই। যদিও ১৯৭৯ সালে তাঁর অসাধারণ পারফর্মেন্সেই আবার বিশ্বকাপ জেতে ওয়েস্ট  ইন্ডিজ।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link