More

Social Media

Light
Dark

আকাশ হতে পারেননি আকাশ চোপড়া

নিজের ক্লাসিক্যাল ব্যাটিং দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার আগেই পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। ভাবা হচ্ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের ওপেনিং এর হাল ধরবেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুটা একেবারে মন্দ করেননি। তবে অমিত ব্যাটিং প্রতিভা নিয়ে এসেও ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন।

নিজের ক্লাসিক্যাল ব্যাটিং দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার আগেই পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। ভাবা হচ্ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের ওপেনিং এর হাল ধরবেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুটা একেবারে মন্দ করেননি। তবে অমিত ব্যাটিং প্রতিভা নিয়ে এসেও ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন।

পরে মনোযোগ দেন কমেন্ট্রি বক্সে। পরে ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেট বিশ্লেষক হয়ে ওঠেন আকাশ চোপড়া। খেলোয়াড়ি জীবনের আক্ষেপ যদিও তিনি ভুলেছেন ধারাভাষ্য কক্ষে এসে – তবুও চাইলেও কি সব আক্ষেপ ভোলা যায়, সব অপ্রাপ্তি কি ঘুচানো যায়।

১৯৭৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন আকাশ চোপড়া। ভারতের রাজধানী দিল্লীর খ্যাতনামা সনেট ক্রিকেট ক্লাবে শুরু হয় তাঁর ক্রিকেট যাত্রা। ছোটবেলা থেকেই তাঁর ব্যাটিং প্রতিভার কারণে নজরে পড়েন। তাঁর ক্লাসিক্যাল ব্যাটিং দিয়ে দ্রুতই ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের ধাপ গুলো পাড় করেছেন। এক সময় ভাবা হচ্ছিল ভারতের ক্রিকেটের নতুন ব্যাটিং তারকা হতে যাচ্ছেন আকাশ।

২০০৩ সালে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তাঁর। তাঁর দিল্লি ওপেনিং পার্টনারের বীরেন্দ্র শেবাগের সাথে ওপেন করতে নামেন তিনি। শুরুটা একেবারে মন্দ ছিল না।

আহমেবাদে নিজের প্রথম ইনিংসেই তাঁর টেস্ট সক্ষমতার পরিচয় দেন। ১৫৮ মিনিট ক্রিজে থেকে খেলেছিলেন মোট ১১৬ টি বল। চারটি চারে করেছিলেন ৪২ রান। ওই টেস্টের পরে ইনিংসেও তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৩১ রান।

ফলে নিজের প্রথম টেস্টেই সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় টেস্টেও দুই ইনিংসেই হাফ-সেঞ্চুরি করেন তিনি। এই দুই টেস্টের পারফর্মেন্সের পুরস্কার হিসেবে পান অস্ট্রেলিয়া সফরের টিকিট। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চারটি টেস্ট খেলেছিলেন তিনি।

সেখানে কোন হাফ-সেঞ্চুরি করতে না পারলেও বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন তিনি। কেননা কঠিন কন্ডিশনে প্রায় প্রতি ইনিংসে লম্বা সময় ব্যাটিং করেছেন। ভালো শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারছিলেন না তিনি।

তবুও আকাশ চোপড়ার ওপর ভরসা রেখেছিল ভারত। এরপরের পাকিস্তান সফলে অবশ্য একেবারেই বাজে সময় কাটান তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে এক টেস্টে যথাক্রমে করেছিলেন ৪ ও ৫ রান। এরপর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রান ক্ষরায় ভোগেন তিনি।

দুই টেস্টে তাঁর সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৯ রান। শেষ তিন টেস্টে একবারও দুই অংকের স্কোর করতে না পারায় দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। তবুও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করে যান তিনি। ২০০৭ সালে ভারত ‘এ’ দলের হয়ে ওপেন করার সুযোগ পান তিনি।

‘এ’ দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই টেস্টে ডাবল-সেঞ্চুরি করে বসেন। ওই মৌসুমে রঞ্জি ট্রফিতেও দিল্লির হয়ে করেছিলেন প্রায় আটশো রান। এছাড়া লিস্ট এ ক্রিকেটেও ছিলেন দারুণ ফর্মে। ব্যাট করেছিলেন ১০০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলারও অভিজ্ঞতা হয়।

তবে এরপরেও আর ভারত দলে সুযোগ হয়নি তাঁর। মাত্র ১০ টেস্টেই থেমে গিয়েছিল তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। ভারতের হয়ে খেলা ১০ টি টেস্টে করেছেন ৪৩৭ রান। সেখানে ২ টি হাফ-সেঞ্চুরিও আছে তাঁর। এছাড়া ১৬২ টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে করেছেন ১০ হাজারের বেশি রান। এছাড়া আইপিএলের প্রথম দুই আসরে খেলেছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে।

এরপর ২০১৩ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে হয়ে যান কমেন্ট্রেটর। এই মুহুর্তে ক্রিকেট বিশ্লেষণে বিশ্বের অন্যতম নাম আকাশ চোপড়া। এছাড়া বিশ্বের নামী দামী কিছু পত্রিকাতেও নিয়মিত কলাম লিখেন তিনি। এছাড়া স্টার স্পোর্টস, সনিতে নিয়মিত কমেন্ট্রি করে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলটাও বেশ বিখ্যাত।

মাঠের আক্ষেপ তিনি মাঠের বাইরে থেকে ভুলেছেন। কিংবা হয়তো ভুলতে পারেননি, কে জানে!

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link