Social Media

Light
Dark

মেসির পরনের গাউনের আদ্যোপান্ত

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ফ্রান্সকে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা নিজেদের করে নেয় আর্জেন্টিনা। নিজের ক্যারিয়ারের অপূর্ণতার প্রতীক হয়ে থাকা বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে সম্ভাব্য সব কিছুই জেতার স্বাদ পেলেন লিওনেল মেসি।

নতুনত্বে ভরা কাতার বিশ্বকাপে মেসির হাতে শিরোপা তুলে দেবার সময়ও দেখা গেল নতুনত্বের ছোঁয়া। কাতারের ঐতিহ্যবাহী গাউন মেসিকে পরিয়ে দেন  কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। অনেক আলোচনার জন্ম দেয়া মেসির এই পোশাক বানাতে খরচ হয়ে প্রায় ২ হাজার ডলার বা বাংলাদেশি মূল্যমানে ২ লক্ষ টাকা।

কাতারের ঐতিহ্যবাহী গাউন পড়া অবস্থায় ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো আর কাতারের আমিরের হাত থেকে শিরোপা তুলে নেন মেসি। পরে সেই পোশাকেই সতীর্থদের সাথে বাঁধ ভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠেন ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতার আনন্দে।

প্রায় ৮ হাজার কাতারি রিয়াল দামের এই পোষাকটি তৈরি করেছেন কাতারেরই মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-সালেম নামক এক দর্জি। প্রায় সাতটি ধাপ পার করে তৈরি করা হয়েছে এই বিশেষ পোশাক। এ ধরণের পোশাককে আরবে বলা হয় ‘বিশত’ ফাইনালের দুই অধিনায়ক লিওনেল মেসি আর হুগো লরিসের জন্য আলাদা মাপে তৈরি করে রাখা হয়েছিলো আলাদা দুটি বিশত।

কাতারের এক সংবাদ মাধ্যমকে এই বিশেষ পোষাক তৈরি করা আল সালেম বলেন, ‘যখন আমরা এই পোশাকটি ডিজাইন করি তখন আমরা অবগত ছিলাম না যে, এটি বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়কের জন্য। ফাইনালে মেসির গায়ে আমাদের পোষাক দেখে আমরা খুবই অবাক হয়েছিলাম। আমি খুবই গর্ববোধ করছি যে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতা অধিনায়কের পোষাকটি বানানোর জন্য আমাদের দোকানই আয়োজকদের প্রথম পছন্দ ছিল।’

ফলে, পোশাকটি বাংলাদেশের বগুড়ায় তৈরি বলে যে খবর শোনা গিয়েছিল, তার পুরোটাই বানোয়াট। আল-সালেম বলেন,  ‘এই পোশাকটি তৈরির পূর্বশর্ত ছিল যে এটাকে খুবই হালকা হতে হবে। পরে আমরা এর যৌক্তিকতা বুঝতে পারি। এটি হালকা করার কারণ ছিল যেন শিরোপা জেতা দলের জার্সি এই পোষাকের ভেতর থেকেও পরিষ্কার বোঝা যায়।’

বিশ্বকাপ শিরোপা জেতা অধিনায়কের জন্য তৈরি এই বিশেষ পোষাক তৈরির সৌভাগ্য অর্জন করা আল-সালেম অবশ্য এ ধরণের পোষাক তৈরি করে যাচ্ছেন বহুদিন ধরে। আল সালেম জানান, ‘বিশত আল সালেম খুবই বিখ্যাত সেই শেখ খলিফার আমল থেকে। সেই থেকে কাতার রাজ পরিবারের জন্য এ পোশাক ডিজাইন করার সুযোগ পাই আমরা।’

কাতার শাসন করা আল থানি পরিবারের জন্যও বিশেষ এই পোশাক বানিয়ে থাকেন আল সালেম। নিজের দোকানের বিশেষত্ব নিয়ে আল সালেম জানান,  এই দোকান কাতারের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে পোশাকের মাধ্যমে তুলে ধরছে এবং কাতারের পরিচয়বাহক হিসেবে কাজ করছে এ ধরণের পোষাক। এটি কাতারের প্রশাসক এবং কাতার শাসন করা পরিবারের সকলের কাছেও খুবই জনপ্রিয়।

নতুনত্বের ছাপ রেখে কাতার বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখলেন আয়োজকরা। নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় শিরোপা জেতা মেসির কাতারের এই বিশেষ পোষাক পরিহিত অবস্থায় শিরোপা জয় উদযাপনের ছবি সামনের দিন গুলোতেও মনোযোগ কাড়বে সবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link