যদি শচীন টেন্ডুলকার আর কুমার সাঙ্গাকারা একসাথে ব্যাট হাতে নামতেন। কিংবা ধরুণ একই দলের হয়ে ব্যাট করছেন রোহিত শর্মা ও বাবর আজম। এসব যেন স্বপ্নের মত দৃশ্য মনে হয়। মনে হয় দুজন একসাথে খেললে কী ম্যাজিকটাই না হত। তবে ভিন্ন দেশের হয়ে জন্ম নেয়া এসব ক্রিকেটারদের কখনো একসাথে খেলা হয় না। তাঁরা মাঠে নামেন একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়েই।
তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট কখনো কখনো মনের সেই সাধ মেটায়। ভিনদেশী দুই ক্রিকেটারকে একসাথে মাঠে নামার সুযোগ করে দেয় এই টুর্নামেন্ট গুলো। এই যেমন বিরাট কোহলি ও এবি ডি ভিলিয়ার্স যখন আইপিএলে একসাথে খেলেছেন কত গল্পই না রোজ তৈরি হয়েছে। এই দুজনকে একসাথে দেখে চোখ জুড়িয়েছে কত ক্রিকেট ভক্তের।
বিপিএলেও দেখা গেল এমনই এক স্বপ্নের জুটিকে। টুর্নামেন্টটির মান নিয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক থাকতেই পারে। তবে এই লিগই তো আবার এক করেছে এই মুহূর্তে দুনিয়ার অন্যতম সেরা দুই ওপেনারকে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জার্সি গায়ে যারা একসাথে মাঠে নেমেছেন। যে ছবি গোটা ক্রিকেট দুনিয়ার জন্যই রোমাঞ্চের।
মোহাম্মদ রিজওয়ান টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দুনিয়ার অন্যতম সেরা ব্যাটার। পাকিস্তানের হয়ে রানের পর রান করে চলেছেন। পাকিস্তানের এই ব্যাটারের ব্যাটিং দেখতে পছন্দ করেন না এমন ক্রিকেট ভক্ত খুঁজে পাওয়াই দায়। সেই রিজওয়ান এবার এসেছেন বিপিএল খেলতে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের জন্য বড়ই আনন্দের।
তবে সেই আনন্দ দ্বিগুন হয়েছে রিজওয়ান কুমিল্লার হয়ে খেলতে আসায়। কেননা এই দলেই আবার খেলেন দেশের সেরা ছন্দে থাকা ব্যাটার, লিটন কুমার দাস। যার ব্যাটিং দেখা স্রেফ চোখের শান্তি। সেই লিটন আর রিজওয়ান কুমিল্লার হয়ে একসাথে ওপেন করতে নামবেন। সেও তো এক স্বপ্নের মতই ব্যাপার।
বহুল কাঙ্খিত সেই দৃশ্যটাই দেখা গেল আজ চট্টগ্রামে। আজই দলের সাথে যোগ দিয়েছেন পাকিস্তানের ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচে তিনি মাঠেও নেমেছেন। লিটন আর রিজওয়ান একসাথেই ওপেন করছেন। বরিশালের বিপক্ষে দারুণ একটা শুরুও এনে দিয়েছিলেন দুজনে মিলে।
এই দুজন ব্যাট করছিলেন তখন যেন একটা ভিন্ন আবহাওয়া বিরাজ করছিল সাগরিকায়। দর্শকরা মন্ত্রমুগ্ধের মত দেখছিলেন এই দুজনকে। দেশ ছাপিয়ে, সীমানা ছাপিয়ে এই দুজনকে এক করা তো আর সহজ কথা নয়। বিপিএলে আরো কয়েকটা ম্যাচ এই দুজনকে দেখা যাবে একসাথে। এটাই বুঝি এখন পর্যন্ত এই আসরের অন্যতম প্রাপ্তি।
আজ অবশ্য বরিশালের হয়ে দুজনের জুটিটা খুব বেশি লম্বা হয়নি। দারুণ শুরু করলেও এই জুটির ৪২ রান হলে আউট হয়ে যান রিজওয়ান। তবুও তাঁরা যতক্ষণ বাইশ গজে ছিলেন চোখ ফেরানো যায়নি। ১১ বলে ১৮ রান করে কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে আউট হয়ে যান রিজওয়ান।
অপর প্রান্তে লিটন অবশ্য আজ দারুণ খেলছিলেন। রিজওয়ান আউট হবার পরেও তাঁর ব্যাট থেকে বাহারি সব শট আসছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ভাবেই রান আউট হয়ে যান লিটন। মাত্র ৩২ রানেই থেমে যায় তাঁর ইনিংস। তবে লিটনের এই ইনিংসের রেশ রয়ে গেছে। রেশ রয়ে গেছে লিটন-রিজওয়ান জুটিরও।