মেহেদী হাসানের পরিচয় মূলত অফ স্পিনার এবং যে কিনা শেষের দিকে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে পারেন। কিন্ত চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স তাকে সুযোগ দিয়েছে ইনিংস উদ্বোধন করার। আর সেই আস্থার প্রতিদান দিয়ে প্রতি ম্যাচেই দলকে দারুণ শুরু এনে দিয়েছেন তিনি। তবে তার আক্ষেপ ছিল দারুণ শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে না পারার।
আজকের ম্যাচের আগে তাঁর ব্যাট থেকে ২৩৬ রান আসলেও ছিল না কোন হাফ সেঞ্চুরি। তাই একটা বড় ইনিংসের আক্ষেপ তার ছিলোই। অবশেষে সুপার লিগের চতুর্থ ম্যাচে এসে বড় ইনিংসের দেখা পেয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। আজ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ৫৮ বলে ৯২ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেছেন এই ওপেনার।
তার দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করেই বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মোহামেডানকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ। তার অসাধারণ ইনিংসের কাছেই বৃথা গেছে মোহামেডানের অধিনায়ক শুভাগত হোমের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স। শুভাগতর এমন পারফরম্যান্সও মোহামেডানকে হারের বৃত্ত থেকে বের করতে পারেনি। সুপার লিগের চার ম্যাচই হেরে গেল ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটি।
এর আগে দলের বিপর্যয়ে ব্যাট হাতে দারুণ এক ইনিংস খেলে মোহামেডানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়ে ছিলেন অধিনায়ক শুভাগত হোম। ৩১ বলে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতেও গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট শিকার করেন মোহামেডানের অধিনায়ক।
১৬৫ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়েছিল গাজী গ্রুপের। উদ্বোধনী জুটিতে দুই ওপেনার মেহেদী হাসান ও সৌম্য সরকার তুলে ফেলেন ৪১ রান। কিন্তু দারুণ শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি সৌম্য সরকার। ১৭ বলে ২২ রান করে শুভাগত হোমের প্রথম শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি।
এরপর শাহাদাত হোসেন (২), মুমিনুল হক (৮), ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৮) ফিরে গেলে চাপে পড়ে গাজী গ্রুপ। ৭১ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর একাই লড়াই চালিয়ে যান মেহেদী। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে মেহেদী যখন ৫৮ বলে ৯২ রান করে আউট হয়ে যান তখন গাজী গ্রুপের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ বলে ৫ রান।
আকবর আলীর ৯ বলে ১১ রানের ইনিংসে ভর করে ৩ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে গাজী গ্রুপ। মোহামেডানের পক্ষে আসিফ হাসান তিনটি এবং শুভাগত হোম ও ইয়াসিন আরাফাত দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা মোহামেডানকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন পারভেজ হোসেন ইমন। এই ওপেনারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৪০ রান তোলে মোহামেডান। ১৪ বলে ১০ রান করে আব্দুল মজিদ মেহেদী হাসানের প্রথম শিকার হয়ে ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। এরপর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি পারভেজও।
মেহেদীর দ্বিতীয় শিকার হয়ে পারভেজ ফিরে যান ৩২ বলে ৪১ রান করে। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ৮ রান করে শামসুর রহমান ফিরে গেলে চাপে পড়ে মোহামেডান। ৬৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন শুভাগত হোম ও ইরফান শুকুর। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেন ৪০ রান।
২২ বলে ২৮ রান করে শুকুর ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। এরপর নাদিফ চোধুরি শূন্য ফিরে গেলে একাই লড়াই চালিয়ে যান মোহামেডানের অধিনায়ক। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন শুভাগত হোম।
শুভাগত ৩১ বলে ৫৯ রানে ঝড়ো ইনিংসে ভর করেই ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান সংগ্রহ করে মোহামেডান। গাজী গ্রুপের পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন মহিউদ্দিন তারেক, রাকিবুল আতিক ও মেহেদী হাসান।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ১৬৫/৬ (ওভার: ২০; পারভেজ- ৪১, ইরফান- ২৮, শুভাগত- ৫৯*) (মেহেদী- ৪-১-২২-১, মহিউদ্দিন- ৪-০-৩০-২, আতিক- ৪-০-৩৩-২)
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ১৬৬/৭ (ওভার: ১৯.৩; মেহেদী- ৯২, সৌম্য- ২২, আকবর- ১১) (আসিফ- ৪-০-২২-৩)
ফলাফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৩ উইকেটে জয়ী।