নেপোটিজম নয়, পারফরমেন্সের জোরে অঙ্কন দল

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের গুডবুক থেকেই জাতীয় দলে অঙ্কন। এমন এক নেতিবাচক তত্ত্ব চাওড় হয়েছে সর্বত্র। কিন্তু আদোতে কি স্রেফ কোচের প্রিয় পাত্র বলেই সুযোগ পেয়েছেন অঙ্কন?

মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ওয়ানডে দলে সুযোগ পাওয়ার পরই, সরব হয়েছে ‘নেপোটিজম’ তত্ত্ব। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের গুডবুক থেকেই জাতীয় দলে অঙ্কন। এমন এক নেতিবাচক তত্ত্ব চাওড় হয়েছে সর্বত্র। কিন্তু আদোতে কি স্রেফ কোচের প্রিয় পাত্র বলেই সুযোগ পেয়েছেন অঙ্কন? না, পারফরমেন্সের কারণেই তার ডাক এসেছে।

মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন সর্বশেষ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তিনি নজরে এসেছিলেন দুর্ধর্ষ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করে। প্রায় ১৭৫ স্ট্রাইকরেটে চলেছে তার ব্যাট। এরপর থেকেই অঙ্কনের জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বনে গিয়েছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার। সেই সময় অবশেষে এসেছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি দলে নয়। তবে কি বাংলাদেশ দলের নির্বাচকরা আবার ভুল করলেন? টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় ওয়ানডে দলে সুযোগ দিলেন তারা অঙ্কনকে?

এই প্রশ্নের উত্তরেও ‘না’- বলতে হচ্ছে। কেননা নিকট অতীতে, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ঘরোয়া সার্কিট থেকে বাংলাদেশ ‘এ’ দল সর্বত্রই পারফরম করেছেন, ওয়ানডে ফরম্যাটে। শেষ দুই ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) তিনি ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন।

প্রায় ৪৮ গড়ে ৪৩১ রান করেছেন তিনি ২০২৫ ডিপিএলে। খেলেছেন ১১ ম্যাচ। এই সময়ে তার স্ট্রাইকরেট ছিল ৭০.৫৯। এর আগের বছর তিনি ৪৬.২১ গড়ে রান করেছেন ৬৪৭। সেবারও তার স্ট্রাইকরেট ছিল ৭০-এর ঘরে। তার আগের বছরও ৪১ গড়ে রান করেছেন অঙ্কন। ৫৭৪ রান এসেছিল তার ব্যাট থেকে ৮২.৫৮ স্ট্রাইকরেটে। ওয়ানডেতে তার স্ট্রাইকরেট সময়ের সাথে কমেছে, কিন্তু গড় সময় যত গড়িয়েছে ততই বেড়েছে।

এছাড়া সর্বশেষ, বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে ২০২৫ সালে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। একটি ম্যাচে নটআউট সহ, দুই ম্যাচে ১৪৫ রান করেছিলেন তিনি। ৮২ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে। এই ধারাবাহিকতার কারণেই অঙ্কন সুযোগ পেয়েছেন ওয়ানডে দলে।

তবে অঙ্কনের স্ট্রাইকরেট দেখে অনেকেই হয়ত প্রশ্ন তুলতে পারেন, তবে ওয়ানডেতে তার ব্যাটিংয়ের ধরণ এমনই। তিনি একটু রয়েসয়ে খেলার চেষ্টা করেন। যেহেতু মিডল অর্ডার, সেহেতু ইনিংসের হাল ধরার বিষয়টিও তাকে মাথায় রাখতে হয়। সে কারণেই মূলত তার স্ট্রাইকরেটের এমন বেহাল দশা।

আর মিডল অর্ডারে পলকা দশা তো মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের অন্যতম দুশ্চিন্তা। ধারাবাহিকভাবে রান করা অঙ্কন সেই সমস্যার সমাধান হতে পারবেন বলেই হয়ত বিশ্বাস, বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের। সে কারণেই তিনি এসেছেন জাতীয় দলে। এক্ষেত্রে কোচের গুডবুকে থাকা বিষয়টি গৌণ। পারফরমেন্সই মুখ্য।

অযথা বিতর্কের আগুনে হাওয়া না দিয়ে বরং, জাতীয় দলে অঙ্কন একাদশে সুযোগ পেলে কেমন করেন- সেটাই এখন দেখার বিষয়। তিনিও ব্যর্থ হলে, বাংলাদেশ পড়ে যাবে গভীর বিপাকে। কেননা খুব বেশি বিকল্প যে নেই বাংলাদেশের কাছে। এ বাস্তবতা তো সবাই জানে।

লেখক পরিচিতি

রাকিব হোসেন রুম্মান

কর্পোরেট কেরানি না হয়ে, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে ভাসতে চেয়েছিলাম..

Share via
Copy link