মিরপুরের শতক, শান্তরও!

নিজের ২৩ তম টেস্টে শান্ত নেমেছেন। নামের পাশে হাজার রান রয়েছে। যদিও পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসের সংখ্যা কেবলই পাঁচটি। যার মাত্র দুইটি সেঞ্চুরি। বড্ড বেমানান। অন্তত নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যারিয়ারের একজন ব্যাটারের জন্য বড্ড বেশিই বেমানান।

নিজের ২৩ তম টেস্টে শান্ত নেমেছেন। নামের পাশে হাজার রান রয়েছে। যদিও পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসের সংখ্যা কেবলই পাঁচটি। যার মাত্র দুইটি সেঞ্চুরি। বড্ড বেমানান। অন্তত নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যারিয়ারের একজন ব্যাটারের জন্য বড্ড বেশিই বেমানান।

সেই বিষয়টি হয়ত শান্তকে কোথাও না কোথাও একটু হলেও প্রভাবিত করেছে। তাইতো মিরপুর হোম অব ক্রিকেটের শান্ত দেখালেন নিজের ক্লাস। আফগান বোলারদের রীতিমত পাত্তা না দিয়ে, তিনি তুলে নিয়েছেন নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। দেশের মাটিতে এটিই শান্তর প্রথম সাদা পোশাকে সেঞ্চুরি।

এদিন টসে হেরে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। সবুজ উইকেটের সুফলটা একেবারে শুরুর লগ্নেই পেয়ে যায় আফগানিস্তান। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ওপেনার জাকির হাসান। তার বিদায়ের পর শান্ত এলেন বাইশ গজে। দায়িত্ব তার দলের ইনিংসের হাল ধরা। যেকোন বিপর্যয় এড়িয়ে যাওয়া।

শান্ত বিপর্যয় সামলে নেওয়ার পন্থা হিসেবে বেছে নেন কাউন্টার অ্যাটাক। আফগান বোলারদের করা প্রতিটা বাজে বল তিনি করেছেন বাউন্ডারি ছাড়া। প্রথম শুরুটা করেন ইয়ামিন আহমেদজাইকে পরপর দুই চার মেরে। এরপর যেন রীতিমত অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন শান্ত। মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই অর্ধ-শতক করে ফেলেন তিনি।

প্রতিটা বলের মেরিট বুঝে খেলার চেষ্টা করেছেন তিনি। প্রতিপক্ষ বোলারদের ভাল বল গুলো ছেড়ে দিয়েছেন কোন রকম দ্বিধা ছাড়াই। খানিকটা ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট চালিয়েছেন বটে। তবে টেস্টের মেজাজ একদমই হারিয়ে ফেলেননি তিনি।

আফগান বোলারদের কাছে ছিল না তার কোন প্রতিকার। লাঞ্চের পরে স্টেডিয়ামে দর্শকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। আর পুরো স্টেডিয়াম একাই মাতিয়ে রাখেন শান্ত। ক্ল্যাসিক স্ট্রেইট ড্রাইভ থেকে শুরু করে সুনিপুণ কাভার ড্রাইভ। সব মিলিয়ে শান্ত ছিলেন এক কথায় অসাধারণ।

দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ের আরও এক পথিকৃৎ তিনি। তাছাড়া সাম্প্রতিক ফর্ম তাকে নিয়ে যাচ্ছে অনন্য উচ্চতায়। ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান শান্ত। সেই ধারাই যেন অব্যাহত রাখলেন মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে। বাইশ গজে তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে নিজের ব্যাটিংটা স্রেফ উপভোগ করে গেছেন তিনি।

যে আমির হামজাকে নিয়ে ছিল সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা। সেই আমির হামজার বল শর্ট মিড উইকেটে ঠেলে দিয়ে শান্ত ছুঁয়ে ফেলেন তিন অংকের সেই ম্যাজিকাল ফিগার। অসাধারণ দক্ষতায় তিনি নিজের চতুর্থ আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান। এটি আবার শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইতিহাসের সব ফরম্যাট মিলিয়ে শততম সেঞ্চুরি।

এখন অবধি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চারটি সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন শান্ত। যার তিনটিই ছিল ঘরের বাইরে। হোম অব ক্রিকেটে শান্তর এই ইনিংসটি নিশ্চয়ই তার জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে রইবে। শান্ত যেন ক্রমশ নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার অদম্য এক মিশনের নেমেছেন। তাকে যেন থামানো দায়!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...