এক হারেই থলের বেড়াল বের হয়ে আসছে ভারতের

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নাস্তানাবুদ হবার পর রীতিমত নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় ক্রিকেট। দশ বছর ধরে কোনো আইসিসি ট্রফি না জেতা ভারতের ক্রিকেট কাঠামো নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। পাইপলাইন থেকে যথেষ্ট ক্রিকেটার উঠে আসছে না বলেও মত অনেকের।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নাস্তানাবুদ হবার পর রীতিমত নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় ক্রিকেট। দশ বছর ধরে কোনো আইসিসি ট্রফি না জেতা ভারতের ক্রিকেট কাঠামো নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। পাইপলাইন থেকে যথেষ্ট ক্রিকেটার উঠে আসছে না বলেও মত অনেকের।

অনেকে আবার দুষছেন ‘এ’ দলের সিরিজ কমে যাওয়াকে। এদিকে চেতন শর্মার স্টিং অপারেশন কান্ডের পর প্রধান নির্বাচক পদটাও খালি পড়ে আছে ভারতের। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হারের পর তাই ভারতীয় ক্রিকেটের সব ফাঁকফোকরই বের হয়ে আসছে একের পর এক।

ভারতীয় জাতীয় দলের কোচ হবার আগে ভারতের ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমির দায়িত্বে ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। তখন ভারতের পাইপলাইনে খেলোয়াড় ছিল ঈর্ষনীয়। তবে রাহুল দ্রাবিড় সেটার দায়িত্ব ছেড়ে আসার পর ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমির অগ্রগতি হয়েছে সামান্যই।

এদিকে বেশ কিছু বছর ধরেই অনিয়মিত ভারতীয় ‘এ’ দলের সিরিজ। ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি থাকাকালে সৌরভ গাঙ্গুলি জানিয়েছিলেন ভারতে রঞ্জি ট্রফি বা গুরুত্বপূর্ণ ঘরোয়া টুর্নামেন্ট চলার সময় ‘এ’ দলের সিরিজ বন্ধ থাকবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে দেশসেরা খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সৌরভ।

তাই জাতীয় দলের আগে সর্বশেষ পর্যায় হিসেবে বিবেচিত ‘এ’ দলের সিরিজ হয়ে পড়ে অনিয়মিত। ‘এ’ দলের সিরিজ যে জাতীয় দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা মনে করিয়ে দিলেন ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচক দেভাং গান্ধী।

তিনি মনে করেন জাতীয় দলের চাহিদা পত্র অনুযায়ী খেলোয়াড়ের যোগান দিতে ‘এ’ দলের সিরিজের বিকল্প নেই। পূর্বে ভারতের বয়সভিত্তিক ও ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের সাথে কাজ করা রাহুল দ্রাবিড়ও জাতীয় দলের প্রয়োজন অনুযায়ী ‘এ’ দলে খেলোয়াড় প্রস্তুত করতেন। ‘এ’ দলের সিরিজ থেকেই উঠে এসেছেন ভারতের বর্তমান টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া ও মোহাম্মদ সিরাজ।

এছাড়াও হানুমা বিহারি ও ঋষাভ পন্তদের মত খেলোয়াড়রা জাতীয় দলে ঢোকার আগে ‘এ’ দলের সিরিজের মাধ্যমেই নিজেদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন।

এছাড়াও চেতন শর্মার বিদায়ের পর থেকে কোনো প্রধান নির্বাচক ছাড়াই চলছে ভারতীয় ক্রিকেট। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের মাত্র তিন মাস বাকি থাকতে ক্রিকেটারদের কোনো পুলও প্রস্তুত করতে পারনি ক্রিকেট বোর্ড। ‘এ’ দলের সিরিজ না থাকার কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করা সরফরাজের মত ক্রিকেটারদেরও জাতীয় দলের জন্য প্রস্তুত কিনা সে বিষয়ে বাজিয়ে দেখা যাচ্ছে না।

টি-টোয়েন্টি দলের ক্ষেত্রে তরুণদের গুরুত্ব দেয়া শুরু করেছে ভারত। বিরাট, রোহিতের মত সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাদ দিয়েই ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে টিম ইন্ডিয়া। টেস্ট ক্রিকেটেও পূজারা, রাহানেদের বাদ দিয়ে সামনের দিকে তাকাতে চাচ্ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। তবে কেউ তাদের জায়গা নিতে না পারায় আবারো দলে ফেরানো হয়েছে তাদের।

টানা কয়েকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর টি-টোয়েন্টি নিয়ে পরিকল্পনা ঢেলে সাজাচ্ছে ভারত। টানা দুই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে ভরাডুবির পর লাল বলের ক্রিকেটেও ভারতের পরিকল্পনা ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। বিশেষ করে টপ অর্ডারে চেতেশ্বর পূজারা কিংবা পেস বোলিংয়ে উমেশ যাদবদের মত খেলোয়াড়দের ছেঁটে ফেলে আগামী টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য নতুনদের বাজিয়ে দেখার পারমর্শই দিচ্ছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষকরা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...