ওয়েড জানতেন ক্যারিয়ার শেষ

যখন সবকিছু শেষ হবে, আমি অবসরে যাবো। তখন তিন চার বছর পর পেছনে ফিরে তাকালে নিজের প্রতি গর্ব হবে যেভাবে আমি কামব্যাক করেছি। এটাই প্রথমবার না, আমি চার-পাঁচবার বাদ পড়েছি এরপর আবার ফিরে এসেছি।

ক্যারিয়ার গড় ২০-এর কম। ৫৩ ম্যাচে কোনোক্রমে ৩টি ফিফটি। সর্বশেষ ১৪ ম্যাচে কোনো ৩০ রানেরও ইনিংস নেই।

স্বভাবতই লোকেরা প্রশ্ন করছিলো যে-অস্ট্রেলিয়ার মত দলে ম্যাথু ওয়েডের কাজটা কী?

ওয়েড নিজেও এই প্রশ্নের জবাব পাচ্ছিলেন না। তবে একটা উত্তর বোধহয় পেয়ে গিয়েছিলেন। নিজে ধরে নিয়েছিলেন, এই বিশ্বকাপের পর তাকে আর অস্ট্রেলিয়া দলে রাখবে না। আর সেমিফাইনালটাই জাতীয় দলে নিজের শেষ ম্যাচ বলে ধরে নিয়েছিলেন।

কিন্তু নিয়তির খেলাটা অন্যরকম।

সেই সেমিফাইনালেই দানবীয় রূপে ফিরলেন ওয়েড। হঠাৎই নিজেকে খুজে পেলেন। এবং সেই ম্যাচেই ওয়েড নিজের ক্যারিয়ারটা লম্বা করে ফেললেন।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাথু ওয়েডের ম্যাজিকেল ফিনিশিংয়ে দুর্দান্ত জয় পায় অজিরা। হাসান আলীর হাতে ক্যাচ মিসের পর শাহিন আফ্রিদির তিন বলে তিন ছক্কা হারিয়ে অজিদের জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ওয়েড। দীর্ঘদিন ব্যাট হাতে সাদামাটা ৩৩ বছর বয়সী এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার ভেবে নিয়েছিলেন এটাই হয়তো তাঁর শেষ ম্যাচ।

ওয়েড বলছিলেন, ‘যখন আমি ব্যাট করতে আসি কিছুটা নার্ভাস ছিলাম এবং জানতাম এটাই আমার শেষ সুযোগ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে। আমি চেয়েছিলাম ভালো কিছু করতে এবং সেই সুযোগটাও ছিলো ম্যাচ জেতানোর।’

২০১০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে মাইক হাসির ২৪ বলে ৬০ রানের হার না মানা ইনিংসে পাকিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পা দেয় অস্ট্রেলিয়া। ১১ বছর পর একই ভাবে যেনো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ম্যাথু ওয়েডের ১৭ বলে ৪১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে পাকিস্তানকে হারালো অজিরা।

ওয়েড বলেন, ‘ওই ম্যাচটা আরো কঠিন ছিলো সবকিছু বিবেচনা করলে। আমরা ফাইনালেও আমাদের সেরাটা দিবো এবং এটাই হয়তো অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আমার শেষ ম্যাচ হবে। আমি আগেই বলেছি তারা যতদিন চাবে আমি ততদিন খেলবো। ‘

ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকবার বাদ পড়েও ফিরে এসেছেন ওয়েড। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম করলেও জাতীয় দলে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। প্রায় চার-পাঁচ বার দল থেকে বাদ পড়ে আবারো ফিরে এসেছেন তিনি। অভিজ্ঞতা আর ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সই তাকে সুযোগ করে দিয়েছে বার বার। তবে এই অজি ব্যাটার বেশ উচ্ছ্বসিত সুযোগ পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সেটি কাজে লাগানোয়।

তিনি বলেন, ‘আমি বেশ খুশি যে আমি নিজেকে মেলে ধরবার আরেকটা সুযোগ পেয়েছি। বাদ পড়ার পর আবার ফিরে আসা, আত্মবিশ্বাসটা বড় ব্যাপার। এখন বেশ ভালো লাগছে। আমি জানিনা কোনটা আমার শেষ ম্যাচ হবে, তবে প্রতিটা ম্যাচকেই আমি যে এটা হয়তো আমার শেষ ম্যাচ।’

ওয়েড আরো বলেন, ‘যখন সবকিছু শেষ হবে, আমি অবসরে যাবো। তখন তিন চার বছর পর পেছনে ফিরে তাকালে নিজের প্রতি গর্ব হবে যেভাবে আমি কামব্যাক করেছি। এটাই প্রথমবার না, আমি চার-পাঁচবার বাদ পড়েছি এরপর আবার ফিরে এসেছি। এটা হতে পারে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের এমন ঘটনায় সবচেয়ে বেশিবার আমার সাথেই হয়েছে।’

রবিবার ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে অজিরা। সেই ম্যাচেও নিজের সেরাটা দিয়ে শিরোপা জিততে চান ৩৩ বছর বয়সী এই ব্যাটার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...