তিনবারের ফিফা বর্ষসেরা হবার জন্যই নয়, জিনেদিন জিদান ফ্রান্সে কিংবদন্তি তুল্য তার ফুটবল শৈলির জন্য। কিন্তু ফ্রান্সের কোচ বদলের ইশ্যুতে জিদানকে নিয়ে কিছুটা তির্যক মন্তব্যই করে বসেন ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন(এফএফএফ) সভাপতি নোয়েল লে গ্রেত। জিদানের একনিষ্ঠ ভক্তদের মধ্যে অন্যতম ফরাসি সেনসেশন কিলিয়ান এমবাপ্পে ভালোভাবে নেননি সেই মন্তব্য। ফরাসি ফুটবলের সভাপতিকে পালটা জবাব দিতেও কুন্ঠাবোধ করেননি এই তারকা।
১৯৯৮ সালে দিদিয়ের দেশ্যম ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন অধিনায়ক হিসেবে। এরপর দীর্ঘ ২০ বছরের অপেক্ষা শেষে ২০১৮ সালে আবারো ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জেতান দেশ্যম। তবে এবার কোচ হিসেবে। ২০১৮ বিশ্বকাপে শিরোপা জেতার পর, ২০২২ কাতার বিশ্বকাপেও ফ্রান্সকে ফাইনালে তোলেন দেশ্যম। তবে ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে টাইব্রেকারে হেরে টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জেতা হয়নি ফ্রান্সের। এরপরই আলোচনা শুরু হয় ফ্রান্স দলে দেশ্যমের ভবিষ্যত নিয়ে।
কয়েকটি ফরাসি সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করে, প্রায় এক দশক ধরে ফ্রান্সের দায়িত্বে থাকা দেশ্যম দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন। তার পরিবর্তে ফ্রান্সের কোচ হচ্ছেন আরেক কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। এই গুঞ্জনের পালে হাওয়া লাগে যখম জিদান নিজেও ফ্রান্স দলের কোচ হবার ইচ্ছার কথা জানান।
তবে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি নোয়েল লে গ্রেতকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কড়া ভাষায় এ গুঞ্জন নাকচ করে দেন তিনি। নোয়েল বলেন, ‘কোচ হিসেবে জিদানের নাম সবসময় আলোচনার মধ্যে ছিল। কারণ তার অনুসারীরা দেশমের অব্যহতির অপেক্ষা করছিল। কিন্তু কেউ কি আসলেই দেশমকে সমালোচনা করতে পারবেন? কেউ পারবেন না! কারণ দেশমকে নিয়ে বড় কোনো সমস্যাই নেই।’
জিদানের সম্ভাবনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তীর্যক ভাবে জবাব দেন তিনি। বললেন ‘এ বিষয়ে আমি ভাবছি না। জিদান যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে পারেন। সেটা যেকোনো ক্লাব কিংবা জাতীয় দল হতে পারে। তাকে নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।’
কিংবদন্তি জিদানের বিষয়ে করা এমন মন্তব্য ভালো ভাবে নেননি এমবাপ্পে। টুইটারে পরোক্ষভাবে জিদানকে নিয়ে করা মন্তব্যের জবাব দেন এই তারকা,’জিদান মানেই ফ্রান্স। তার মতো কিংবদন্তিকে এভাবে অসম্মানিত করা মোটেও কাম্য নয়। যদিও কোথাও ফরাসি ফুটবল প্রেসিডেন্টের নাম নেননি পিএসজি স্ট্রাইকার।
নিজের বক্তব্যকে অবশ্য সমর্থন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফরাসি ফুটবলের এই কর্তা, ‘আমার সঙ্গে জিদানের পরিচয় নেই। তাছাড়া আমরা দেশমকে ছাঁটাই করার কথা কখনো চিন্তাই করিনি। কিছু সাংবাদিকদের নিজেদের পরিবর্তন করা জরুরী। কারণ তারা জানেনই না যে তাদের কী নিয়ে লেখা উচিত। তারা ইতিবাচক বিষয়ের থেকে বরং নেতিবাচক বিষয় নিয়েই বেশি বলাবলি করেন।’
কোচ হিসেবে জিদানের ক্যারিয়ার খুব বেশি দীর্ঘ না হলেও দুই মেয়াদে রিয়ালের দায়িত্ব নিয়ে সফল ছিলেন জিদান। ২০২১ সালে রিয়ালের দায়িত্ব ছাড়ার পর আর কোনো দলের কোচ হননি তিনি। কিলিয়ান এমবাপ্পে জিদানকে ফ্রান্সের কোচ হিসেবে চাইলেও, পিএসজি ক্লাবের পক্ষ থেকে কোনো প্রস্তাব দেয়া হয়নি এই ফরাসি কিংবদন্তিকে।