আজমের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড চট্টগ্রামের বোলিং

ডানহাতি ব্যাটার রীতিমত তাণ্ডব করলেন। চট্টগ্রামের চ্যালেঞ্জার্সের বোলারদের তুলোধুনো করলেন আজম খান। তিনি দেখালেন যে ক্রিকেটে প্রতিভাটাই আসলে মুখ্য। সেই সাথে চাই ইচ্ছেশক্তি, প্রবল ইচ্ছেশক্তি। বোলারদের মানসিকতা দুমড়ে-মুচড়ে দেওয়ার সকল রসদ নিয়েই হাজির হয়েছেন আজম। সেসবের প্রদর্শনও তিনি করলেন মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে।

মাঠের মধ্যে সহজেই নজর কাড়েন তিনি। দীর্ঘকায় এক মানুষ তিনি। দৃষ্টিগোচর হওয়াই স্বাভাবিক। আধুনিক ক্রিকেটে অবশ্য এমন স্থুলকায় ব্যক্তিদের জায়গা নেই। তবুও তিনি দিব্যি খেলে যাচ্ছেন পেশাদার ক্রিকেট। বর্তমান সময়ে যে খেলোয়াড় যত ফিট, সে খেলোয়াড়ই ততবেশি প্রাধান্য পায়। তবে একটা সময় প্রতিভার প্রাধান্য ছিল সবচেয়ে বেশি।

সেটা অতীত হলেও, প্রতিভার কদর করা কিন্তু বন্ধ হয়ে যায়নি। রাকিম কর্নওয়েলদের মত খেলোয়াড়রা অনায়াসে দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জার্সি গায়ে জড়িয়ে নেন নিজেদের গায়ে। তেমনই একজন পাকিস্তানের আজম খান। পাকিস্তানের ঘরোয়া লিগে তিনি নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেই পাকিস্তান সুপার লিগে জায়গা করে নিয়েছিলেন আজম খান। এমনকি পাকিস্তানের হয়ে তিনটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলে ফেলেছেন তিনি।

সেই আজম খান এবার এসেছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ খেলতে। খুলনা টাইগার্স দলের ব্যাটিং আক্রমণের অন্যতম আস্থা তরুণ এই ব্যাটার। নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ তিনি এখানেও রাখছেন। মিরপুরের পিচের বদনাম রয়েছে। অবশ্য বিপিএলে রাতের খেলায় রান হচ্ছে প্রচুর। সেই সুযোগটাই এবার কাজে লাগালেন আজম খান।

ডানহাতি ব্যাটার রীতিমত তাণ্ডব করলেন। চট্টগ্রামের চ্যালেঞ্জার্সের বোলারদের তুলোধুনো করলেন আজম খান। তিনি দেখালেন যে ক্রিকেটে প্রতিভাটাই আসলে মুখ্য। সেই সাথে চাই ইচ্ছেশক্তি, প্রবল ইচ্ছেশক্তি। বোলারদের মানসিকতা দুমড়ে-মুচড়ে দেওয়ার সকল রসদ নিয়েই হাজির হয়েছেন আজম। সেসবের প্রদর্শনও তিনি করলেন মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে।

‘ওয়ান ম্যান শো’। দুর্ধর্ষ সব শটের পসরা বসিয়েছিলেন তিনি। দলের অধিকাংশ রানই এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের চার ছক্কার বৃষ্টি ঝড়েছে আজমের ব্যাট থেকে। তিনি প্রায় ১৮৮ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করেন। নয়টি চার মেরেছেন তিনি তাঁর ১০৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে। পাশাপাশি শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের চারিপাশে তিনি আট খানা ছক্কা হাকিয়েছেন। পেশি শক্তির সঠিক ব্যবহারটাই তিনি করেছেন তাঁর ইনিংসে। সেই সাথে তুলে নিয়েছেন নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। মাঠে থাকা প্রতিটা দর্শককে তিনি আনন্দে ভাসিয়েছেন।

তবে আজম খান একাই লড়াই চালিয়ে গেছেন। তাঁর যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি খুলনার কোন খেলোয়াড়। কেবল তামিল ইকবাল তাঁকে খানিকক্ষণ সঙ্গ দিয়ে গেছেন। তিনি ধীর গতিতে ৪০টি রান তুলে আজমকে হাতখুলে ব্যাটিং করবার লাইসেন্স দিয়ে দেন। তবে তিনি আউট হওয়ার পর বাকিরা আসা-যাওয়ার মিছিলে শামিল হন।

সেই মিছিলের বিপরীতে গিয়ে চট্টগ্রামের বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে দেন দীর্ঘদেহী আজম খান। তাঁর করা দুরন্ত ১০৯ রানের সুবাদে ১৭৮ রানের দারুণ সংগ্রহ পায় খুলনা টাইগার্স। ঠিক এমন তাণ্ডব দেখার প্রত্যাশা সকলের। আজম খানরাই বারবার প্রমাণ করেন ঠিক কতটা আনন্দদায়ক হতে পারে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। তাছাড়া নিন্দুকের মুখে ঝামা ঘসে দেওয়ার মতই এক ইনিংস উপহার দিলেন আজম খান।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...