মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব ২.০

ভবিষ্যৎ সাকিব আল হাসান কেউই হবেন না সেটা নিশ্চিত, তবে কেউ যদি সাকিবের কাছাকাছি যেতে পারেন তবে সেটা কেবল মেহেদী হাসান মিরাজের পক্ষেই সম্ভব। আপাতত বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য দেখাচ্ছেন মিরাজ, তাতে তাঁর উপর ভরসা বাড়ছে সবারই।

ভবিষ্যৎ সাকিব আল হাসান কেউই হবেন না সেটা নিশ্চিত, তবে কেউ যদি সাকিবের কাছাকাছি যেতে পারেন তবে সেটা কেবল মেহেদী হাসান মিরাজের পক্ষেই সম্ভব। আপাতত বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য দেখাচ্ছেন মিরাজ, তাতে তাঁর উপর ভরসা বাড়ছে সবারই।

ব্যাটিং, বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও দুর্দান্ত মিরাজ। ত্রিশ গজের বৃত্তে তাঁর রিফ্লেক্স নি:সন্দেহে দেশসেরা, বিশেষ করে পয়েন্ট অঞ্চলে মিরাজের উপস্থিতি মানেই চোখে লেগে থাকার মত কিছু ফিল্ডিং। মানসিকতার দিক দিয়েও এগিয়ে আছেন এই ডানহাতি, দলের সবচেয়ে ইতিবাচক ক্রিকেটারদের একজন তিনি। সব মিলিয়ে তাঁকে ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ ভাবাই যায়।

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে মিরাজকে। এই টুর্নামেন্টে মিরাজের ব্যাটিং, বোলিং দুটোই প্রয়োজন বাংলাদেশ দলের। তাঁর মধ্যেই তো আগামী দিনের সাকিবকে খুঁজে বেড়ায় বাংলাদেশ দল।

নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাঝের ওভারে রান আটকানো মেহেদি হাসান মিরাজের শক্তির জায়গা। বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে তিনি রীতিমতো ত্রাস, ডানহাতি ব্যাটারদেরও বোকা বানাতে পারেন অফ স্পিন আর আর্ম ডেলিভারিতে। পার্টনারশিপ ভাঙার ক্ষেত্রেও অধিনায়কের আস্থার নাম এই মিরাজ।

তবে এবারের আসরে মেহেদী মিরাজের ব্যাটিংয়ের দিকে বেশি নজর থাকবে ভক্ত-সমর্থকদের। তামিম ইকবাল বিহীন ভঙ্গুর টপ অর্ডারের কারণে ব্যাটার মিরাজকে পারফর্ম করতেই হবে। তাঁকে ওপেনিং এবং মিডল অর্ডার দুই জায়গাতেই খেলতে হতে পারে।

ইতোমধ্যে অবশ্য নিজেকে প্রমাণ করেছেন মিরাজ। ২০২২ সাল থেকে ২২ ইনিংস ব্যাটিংয়ে নামা এই তারকা করেছেন ৬০৪ রান। ব্যাটিং গড় ৩৫.৫৩ আর স্ট্রাইক রেট আশির ওপরে। এসময় আফগানিস্তান এবং ভারতের বিপক্ষে স্মরণীয় দুইটি সেঞ্চুরিও এসেছে তাঁর কাছ থেকে। বড় মঞ্চে এমন পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি করতে পারলে উপকৃত হবে টিম টাইগার্স।

বিশ্বকাপে খেলাটা অবশ্য নতুন কিছু নয় মিরাজের জন্য। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। ব্যাট হাতে আহামরি পারফর্ম করতে না পারলেও পেসবান্ধব পিচে ওভারপ্রতি মাত্র পাঁচ রান খরচ করে প্রতিপক্ষের রানের গতি আটকে দিয়েছেন।

অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাবেক ক্যাপ্টেরের শক্তিমত্তা বেশি হলেও দুর্বলতাও আছে কিছুটা। ফ্ল্যাট পিচে মিরাজকে পুরোদস্তুর বোলার হিসেবে ব্যবহার করা বেশ ঝুকিপূর্ণ, তেমন ভ্যারিয়েশন না থাকায় পিচের সাহায্য না পেলে ব্যাটারকে চাপে রাখা কঠিন হয়ে যায় তাঁর জন্য। সেজন্য বাড়তি একজন বোলারকে খেলাতে হতে পারে বাংলাদেশকে।

আবার টেকনিক্যালি ব্যাটসম্যান মিরাজ যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য হলেও এক্সপ্রেস বোলারদের বিপক্ষে তাঁর পারফরম্যান্স সন্তোষজনক নয়। তাই পাকিস্তান কিংবা নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের মত দলের বিপক্ষে সংগ্রাম করতে হতে পারে তাঁকে।

টুকটাক দুর্বলতা বাদ দিলে মিরাজ নি:সন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। বিশ্বকাপে তাই তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশাটাও একটু বেশি। আর ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ যদি নতুন কোন ইতিহাস লিখতে চায় তবে এই প্রত্যাশা পূরণ করতেই হবে মিরাজকে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...