সাদা পোশাকে রঙিন অভিষেক

টেস্ট ক্রিকেটকে বলা হয় ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত ফরম্যাট। সেই ফরম্যাটের অভিষেক রাঙিয়েছেন, এমন ক্রিকেটারের সংখ্যাও বিস্তর। 

আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক যে কোন ক্রিকেটারের কাছে সবচেয়ে আনন্দের একটি মূর্হত। দেশের হয়ে প্রথম মাঠে নামার দিনটি জীবনের সেরা দিনগুলোর একটি তাতে কোনো সন্দেহ নেই কিন্তু সেই প্রথম ম্যাচটি যদি আবার হয়ে যায় অবিস্মরণীয় কোন পারফরমেন্স দিয়ে তাহলে তো সোনায় সোহাগা।

টেস্ট ক্রিকেটকে বলা হয় ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত ফরম্যাট। সেই ফরম্যাটের অভিষেক রাঙিয়েছেন, এমন ক্রিকেটারের সংখ্যাও বিস্তর।

  • অভিষেকে স্মরণীয় ব্যাটিং

১৮৭৭ সালে ইতিহাসের প্রথম টেষ্টেই অভিষেক সেঞ্চুরি করেন অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ব্যানারম্যান। দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসাবে অভিষেক টেষ্টে সেঞ্চুরি করেন কিংবদন্তি ইংলিশ ব্যাটসম্যান ডব্লিউ জি গ্রেস। গ্রেসের অভিষেক হয় ইতিহাসের চতুর্থ টেষ্টে।
এই তালিকায় আরো আছেন জাভেদ মিয়াঁদাদ,মোহাম্মদ আজহার উদ্দীন, মার্ক ওয়াহ, সৌরভ গাঙ্গুলি,বীরেন্দ্র শেবাগ,ইউনুস খানের মতো তারকা ব্যাটসম্যানের নাম।

বাংলাদেশি ক্রিকেটারের মধ্যে আমিনুল ইসলাম বুলবুল,মোহাম্মদ আশরাফুল ও আবুল হাসান রাজুর রয়েছে এই কৃতিত্ব। এর মধ্যে দুটিই বিশ্বরেকর্ড! আশরাফুলের সেঞ্চুরিটা ছিলো সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেক সেঞ্চুরি, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০১ সালে এশিয়ান টেষ্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সেই ম্যাচে তার বয়স ছিলো ১৭ বছরের চেয়েও একদিন কম। আর পেস বোলিং করা রাজু ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে দশ নাম্বারে নেমে করেছেন সেঞ্চুরি।

আবুল হোসেন রাজু

আরেকটা মজার ব্যাপার হলো অভিষেক টেষ্টে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের লরেন্স রো ও পাকিস্তানের ইয়াসির হামিদ। রো ১৯৭২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক টেষ্টে করছিলো (২১৪+১০০)=৩১৪ আর ইয়াসির ২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে করেছিলে (১৭০+১০৫)= ২৭৫ তবে অভিষেকে এক ইনিংসে সবোচ্চ রানের মালিক ইংল্যান্ডের টিপ ফস্টারের (২৮৭)রান।

সবচেয়ে বেশি অস্ট্রেলিয়ার ২০ জন ক্রিকেটার অভিষেক টেষ্টে সেঞ্চুরি করেছেন,দ্বিতীয় ইংল্যান্ডের ১৯ জন এরপর ভারতের ১৪ জন,পাকিস্তানের ১৩ জন, নিউজিল্যান্ড ১১ জন।

  • অভিষেকে স্মরণীয় বোলিং

টেষ্ট অভিষেকে সেরা বোলিংয়ের রের্কড যৌথভাবে ভারতীয় লেগ স্পিনার নরেন্দ্র হিরানি ও অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াম পেসার বব ম্যাসির। টেষ্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে দুইজনই নিয়েছেন ১৬ টি করে উইকেট। অবশ্য রান কম দেওয়ায় রের্কড তালিকায় নরেন্দ্র হিরানির নামটিই শীর্ষে আছে।

১৯৭২ সালের জুনে লর্ডসে অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩৭ রান খরচায় দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৬ টি উইকেট নেন ম্যাসি আর এর ১৬ বছর পর ১৯৮৮ সালে মাত্র এক রান কম খরচ করে ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৬ টি উইকেট নেন হিরানি। একটি জায়গায় মিল আছে তারা দুইজনই উভয় ইনিংসে সমান ৮ উইকেট করে নিয়েছেন। অভিষেক টেষ্টে এক ইনিংসে ৮ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব আছে আরো ৪ ক্রিকেটারের।

বব ম্যাসি

এখন পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশি বোলার অভিষেক টেষ্টে এক ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।আর অভিষেকে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ বা তার ও বেশি উইকেট নিয়েছিলো ১৫ জন।

বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে প্রথম অভিষেকে পাঁচ উইকেট নেন অল-রাউন্ডার ও সাবেক অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়। এছাড়া পরবর্তীতে মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সোহাগ গাজী, ইলিয়াস সানি,তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী মিরাজরা অভিষেকে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...