তাঁর তো আরও জয়ের নেশা, নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার নেশা থাকার কথা নয়। তিনি তো ২০২২ সালের বিশ্বকাপ দিয়েই সব জিতে ফেলেছেন। এখন তো লিওনেল মেসির সাধুর জীবন যাপন করা উচিৎ, সেই জীবনে ফুটবল নামক মোহ তো তাঁকে স্পর্শ করার কথা নয়।
কিন্তু, লিওনেল মেসি মানেই যে ফুটবল। লিওনেল মেসি মানেই যে লড়াইয়ের অপর নাম, জয়ের তীব্র নেশা, গোল করার কিংবা গোল বানিয়ে দেওয়ার অভিনব আকাঙ্ক্ষাই তাঁকে ‘দ্য গ্রেটেস্ট অব অল টাইম’ বানিয়েছে। মেসি তো এখানেই অনন্য। যখন যে দলের হয়ে খেলেন, তখন তিনি নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার তাড়নায় থাকেন উদ্বেলিত।
আর সেই উদ্বেল মেসির দোলায় এবার কেঁপে উঠল বলিভিয়া। নিজেদের মাঠে পুঁচকে এই দলটাকে নিয়ে আক্ষরিক অর্থেই ছেলে খেলা করলেন মেসিরা। মেসি একাই তো দিলেন তিনটা গোল। দল প্রতিপক্ষের জালে বল জড়াল ছয় বার, এর মধ্যে পাঁচ বারই এর মধ্যে নিজেকে জড়ালেন মেসি।
সত্যি, মেসি মানেই ফুটবল। আর আর্জেন্টিনা মানেই লিওনেল মেসি। তিনি এমনি এমনি তো আর ভিনগ্রহের ফুটবলার বনে যাননি। ৩৭ বছর বয়সে ক্যারিয়ারের ৫৮ তম হ্যাটট্রিক পেলেন মেসি। বিরাট এক বর্ণাঢ্যময় ক্যারিয়ারে এটা তো মেসির জন্য নিয়মিত ঘটনা।
এ তো নতুন কিছুই নয়! কেবল আর্জেন্টিনার হয়েই তাঁর আন্তর্জাতিক গোল সংখ্যা এখন ১১২। ক্যারিয়ারের শেষ সময়েও প্রতিটা মুহূর্ত নিজেকে উজাড় করে দিয়ে তিনি ছুটছেন দূর্বার গতিতে। ৮৫০ টি পেশাদার গোলের মাইল ফলকও ছুঁয়েছেন তিনি একই ম্যাচে।
লিওনেল মেসি বিশ্বসেরা, লিওনেল মেসি সর্বকালের সেরা – এই কথা তিনি যখন বিশ্বকাপ জিতেছিলেন সেবারই সত্য বলে প্রমাণিত হয়। এরপর তিনি যা যা করেছেন, আর ভবিষ্যতে যা যা করবেন – সবই তাঁর অর্জনের মুকুটে একেকটা মুকুট হয়ে যোগ হবে। তিনি ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের এমন এক অবস্থানে চলে গেছেন, যেখান থেকে সহসাই কারও পক্ষে তাঁকে নামানো সম্ভব নয়!
এই জাদুকর লিওনেল মেসি আর কতদূর ছুটবেন, তা হয়ত বল দেবে সময়ই। তবে, এই যে এতদিন তিনি ছুটছেন আর বিনোদন দিয়ে যাচ্ছেন গোটা ফুটবল বিশ্বকে – সেই বিনোদন উপভোগ করতে পারার সৌভাগ্য কি আর সবার হয়! মেসির সময় জন্ম নেওয়াদের সত্যিই রাজ কপাল!