শেষটা রাঙাবেন- এমন একটা সুপ্ত স্বপ্ন এঁকেছিলেন লিওনেল মেসি। দু’চোখ ভরা সে স্বপ্নের পথে দৃঢ় প্রত্যয়ীও ছিলেন তিনি। সৌদি আরবের বিপক্ষে আজ ম্যাচ দিয়ে সেই শেষের শুরুটা করেছিলেন আর্জেন্টাইন নাম্বার টেন। আর দশ নাম্বার জার্সিধারী মহা মানব শুরুটা রাঙালেন সেই দশ মিনিটেই।
কাকতালীয় এ মুহূর্ত অবশ্য ফ্রেমবন্দী হয়েছিল স্পটকিক থেকে পেনাল্টির মাধ্যমে। পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করে নিতে ভুল করেননি মেসি। বাঁ দিকে আলতো করে বল ছুঁয়ে দিয়ে কাতার বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোল তুলে নেন বাঁ পায়ের এ জাদুকর।
তবে এরপরেই ঠিক দু:স্বপ্নের শুরু। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে আর্জেন্টিনা এগিয়ে শেষ করলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর ৮ মিনিটেই সৌদি আরবের কাছে হজম করে বসে দুই দুটি গোল। মেসির স্বপ্নের শুরুতেই আচমকা এক ধাক্কা। কিন্তু সেই ধাক্কা আর শেষ পর্যন্ত সামলাতে পারেনি মেসির দল। কাতারে বেদনাবিধুর এক মধ্যাহ্নের সঙ্গী হয় আলবিসেলেস্তারা। স্কোরলাইন সেই ২-১ গোলে থেকেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেই তাই এখন গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কা মেসিদের।
টানা ৩৬ ম্যাচ জিতে দারুণ এক রেকর্ডের পথে ছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু সৌদি আরবের কাছে হেরে আর্জেন্টিনার জয়যাত্রা অবশেষে থামলো। তবে সে সব কিছুর চেয়েও এমন অপ্রত্যাশিত হারের জ্বালাই বেশি আর্জেন্টিনার।
প্রথম আর্জেন্টাইন ফুটবলার হিসেবে গোল,পেয়েছেন মেসি। তবে সেই অর্জনটুকু সেখানেই শেষ। এমন দিনে নিশ্চিতভাবেই মেসি সেটিকে প্রাপ্তির খাতায় যোগ করবেন না। বরং হতাশা ঝেড়ে মেসিরা এখন ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়। কারণ বিশ্বকাপে শুরুর এমন ধাক্কায় আর্জেন্টিনার আত্মবিশ্বাস যে তলানিতে ঠেকবে না, সেটিরও তো নিশ্চয়তা নেই।
রাউন্ড অফ সিক্সটিনে মেসির যাওয়ার রাস্তাটা এখনো খোলাই আছে। তবে পরের দুই ম্যাচে তাদের জয়ের দিকে চোখ রাখতে হবে। গ্রুপে থাকা মেক্সিকো, পোল্যান্ডের চেয়ে শক্তির দিক দিয়ে তুলনামূলক পিছিয়েই ছিল সৌদি আরব। সেই সৌদি আরবের কাছে হারায় তাই পরের চ্যালেঞ্জগুলো কঠিনই হতে যাচ্ছে মেসিদের।
এবারের বিশ্বকাপে মেসি দারুণ কিছু করবেন, এমন প্রত্যাশা সবারই ছিল। নিজের কণ্ঠেও ছিল আশাসূচক বাণী। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই ব্যাকফুটে চলে গেলে তাঁর দল। সেখান থেকে উঠিয়ে আনতে প্রাণভোমরা ভূমিকায় তাঁকেই আবির্ভূত হতে হবে। নাহলে মেসির সকল আশা, অনুপ্রেরণার বাণী ফুটবল বিশ্বের কাছে হাস্যরসাত্বক হওয়ার মতোই উৎস হবে।