কেন ছন্নছাড়া আর্জেন্টিনা?

প্রথমেই বলতে হয় প্রশিক্ষক লিওনেল স্ক্যালোনির ভুল প্রথম একাদশ নির্বাচনের কথা। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ফর্মে থাকা ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্টিনেজকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখায় একদিকে যেমন আর্জেন্টাইন ডিফেন্সের আগ্রাসী রূপটা খুঁজে পাওয়া গেলো না তেমনই ডিফেন্সে নেতৃত্বের অভাব প্রকট হল এবং মার্টিনেজের বিটুইন দ্য লাইনস পাস খেলার ক্ষমতাটাও অ্যালবিসেলেস্তেরা মিস করলো। ফলে, ডিস্ট্রিবিউশনের অভাবে মেসিকে বারেবারে নিজের অর্ধে নেমে আসতে হচ্ছিল।

টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত কোপা আমেরিকাজয়ী আর্জেন্টিনা চলতি বিশ্বকাপে তাদের প্রথম ম্যাচেই কেন মুখ থুবড়ে পড়লো দেখা যাক।

প্রথমেই বলতে হয় প্রশিক্ষক লিওনেল স্ক্যালোনির ভুল প্রথম একাদশ নির্বাচনের কথা। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ফর্মে থাকা ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্টিনেজকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখায় একদিকে যেমন আর্জেন্টাইন ডিফেন্সের আগ্রাসী রূপটা খুঁজে পাওয়া গেলো না তেমনই ডিফেন্সে নেতৃত্বের অভাব প্রকট হল এবং মার্টিনেজের বিটুইন দ্য লাইনস পাস খেলার ক্ষমতাটাও অ্যালবিসেলেস্তেরা মিস করলো। ফলে, ডিস্ট্রিবিউশনের অভাবে মেসিকে বারেবারে নিজের অর্ধে নেমে আসতে হচ্ছিল।

দুই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার লিয়ান্দ্রো পারেদেস ( ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ) ও রড্রিগো ডি পলকে ( বক্স -টু -বক্স মিডফিল্ডার ) নিজেদের ছায়া মনে হল। বিশেষ করে, কোপা জয়ের নেপথ্য নায়ক, লিওনেল মেসির তথাকথিত ‘বডিগার্ড’ ডি পলের গত কোপার ও আজকের পারফরম্যান্সের মধ্যে আকাশ – পাতাল ফারাক। আসলে, গত কোপার সময় ডি পল উদিনেসের প্রথম একাদশের নিয়মিত সদস্য ছিলেন কিন্তু এবারের ডি পল অ্যাটলেতিকো মাদ্রিদের প্রথম একাদশে নিয়মিত নন।

লেফট উইঙ্গার পাপু গোমেজ নিরন্তর ওঠানামা করে লেফট ব্যাক টাগলিয়াফিকোকে সাহায্য করলেও বামদিক বরাবর কার্যকরী আক্রমণ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলেন। অপরদিকে, রাইট উইংয়ে ডি মারিয়া সৌদি ডিফেন্ডারদের তৎপরতায় হাফ স্পেসটা সেভাবে কাজে লাগাতে পারলেন না।

আর্জেন্টিনার পুরো দলটার গতি দেখলে মালগাড়ির কথা মনে পড়তে বাধ্য। আপাতভাবে মনে হল দলের ফিটনেসে ঘাটতি আছে। সঠিকভাবেই অফসাইডে গোলটি বাতিল হওয়ার পর থেকে স্ট্রাইকার লাউতারো মার্টিনেজকে মাঠে খুঁজেই পাওয়া গেলো না।

সৌদির এই অবিস্মরণীয় জয়ের জন্য প্রথমেই কৃতিত্ব দিতে হবে ফরাসি প্রশিক্ষক হার্ভ রেনার্ডকে। আধুনিক ফুটবলের দাবি মেনে টানা নব্বই মিনিট ধরে এমন দারুন প্রেসিং ফুটবল খেলালেন যে আর্জেন্টিনার ৪-২-৩-১ ছক থেকে বল পায়ে ২-৩-৪-১ পরিণত হয়ে যাওয়ার স্বাভাবিক প্রবণতা ধাক্কা খেলো। রেনার্ড তাঁর দলকে ৪-১-৪-১ ছকে খেলিয়ে অফ দ্য বল ডাবল শিল্ডিং ডিফেন্স গড়ে তুললেন ফলে প্রায় ৪৫ মিনিটের বেশি সময় সুযোগ পেয়েও আর্জেন্টিনা গোল শোধ দিতে পারলো না। এছাড়া, সৌদির খেলোয়াড়দের টানা নব্বই মিনিট ধরে প্রেসিং ফুটবল খেলে যাওয়াকে কুর্নিশ জানাতেই হবে।

আল শেহরি ও আল দাওয়াসারি দুজনের গোল দুটোই বিশ্বমানের তবে দাওয়াসারির গোলটি টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা গোলের তালিকাতে থাকবে। সৌদির গোলরক্ষক আল ওয়াইসের বিশ্বমানের পারফরম্যান্সও আলাদা প্রশংসার দাবি রাখে।

২ – ১ ব্যবধানে সৌদির এগিয়ে যাওয়ার অব্যবহিত পরেই সৌদির স্টপার আল টামবাক্তির বক্সের মধ্যে মেসির পা থেকে বল ছিনিয়ে নেওয়া ট্যাকলটা নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে কিংবদন্তি আলেসান্দ্রো নেস্তাকে মনে করালো। এই ধরনের বড় টুর্নামেন্টে চাপের মুহূর্তে মেসির কাছ থেকে অতিমানবিক পারফরম্যান্স প্রত্যাশিত ছিল। অনেকটা গত বিশ্বকাপে স্পেনের বিরুদ্ধে রোনাল্ডোর শেষ মিনিটে ফ্রিকিকে গোল দিয়ে সমতা ফেরানোর মত অতিমানবিক মুহূর্ত সৃষ্টির। সেই অর্থে মেসিকে অনেকটাই ম্রিয়মান লাগলো।

যোগ্য দল হিসাবে সৌদির জয় আর্জেন্টিনার সামনে প্রশ্ন রেখে গেল – ‘পঁচা শামুকে পা কাটলো না তো?’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...