মিরাজের ‘অভয়’ হয়ে ছিলেন মুস্তাফিজ

করতে হবে ৫১ রান। হাতে আছে মোটে একটা উইকেট। এই অবস্থায় প্রতিপক্ষ যখন ভারত - তখন জয়ের স্বপ্ন দেখাটা রীতিমত অবিশ্বাস্য ব্যাপার। তবে, সেখান থেকে দারুণ এক ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস খেলে নায়ক বনে গেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আর পার্শ্বনায়ক মুস্তাফিজুর রহমান। মিরাজের ৩৮ রান যেমন জরুরি ছিল, তেমনি অপর প্রান্তে মুস্তাফিজের ১০ রানের ইনিংসটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।

করতে হবে ৫১ রান। হাতে আছে মোটে একটা উইকেট। এই অবস্থায় প্রতিপক্ষ যখন ভারত – তখন জয়ের স্বপ্ন দেখাটা রীতিমত অবিশ্বাস্য ব্যাপার। তবে, সেখান থেকে দারুণ এক ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস খেলে নায়ক বনে গেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আর পার্শ্বনায়ক মুস্তাফিজুর রহমান। মিরাজের ৩৮ রান যেমন জরুরি ছিল, তেমনি অপর প্রান্তে মুস্তাফিজের ১০ রানের ইনিংসটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।

ম্যাচ শেষে মিরাজ তাই কৃতিত্ব দিলেন মুস্তাফিজকেও। তিনি জানান, মুস্তাফিজ বারবার অভয় দিচ্ছিলেন মিরাজকে। বললেন, ‘মুস্তাফিজ খুব ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। ও খুব আত্মবিশ্বাসী ছিল, যা আমার খুব ভালো লেগেছে। ও আমাকে বারবার বলছিল, আমাকে নিয়ে টেনশন করার কিছু নেই। আমি ঠেকিয়ে দিচ্ছি। আমি আউট হব না, গায়ে বল লাগলেও সমস্যা নেই। ওর আত্মবিশ্বাস দেখে আমারও আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়েছে।’

৫১ রানের অপরাজিত জুটিতে ব্যাট করার সুযোগ খুব কম পেলেও মুস্তাফিজ কোনো ভুল করেননি। বরং সাহ বাড়িয়েছেন মিরাজের। মিরাজ বলেন, ‘ও আমাকে সাহস দিচ্ছিল। বারবার বলছিল, আমি যেন ওকে নিয়ে টেনশন না করি। তখন আমি নিজের পরিকল্পনা সাজিয়েছি যে, কোন বোলারকে মারব, কোনদিক দিয়ে মারব। যেগুলো নাগালে পেয়েছি, সেগুলো চেষ্টা করেছি। ২-৩টা উঠে গেছে, সুযোগও দিয়েছি। ওরা নিতে পারেনি। হিসেব করে ঝুঁকি নিয়ে খেললে খুব ভালো হয়।’

সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল, মিরাজ নিজেদের সামর্থ্যের ওপর ভরসা হারাননি। আর সেই ভরসার ভেলায় চড়েই এসেছে জয়। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাওয়া এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমার বিশ্বাস ছিল। অনেকে শুনলে হয়তো বলবে ‘পাগল’, হয়তো মনে করবে যে কিছু…। তবে আমি বিশ্বাস করছিলাম। আমার বিশ্বাস খুব ভালো ছিল। আমার কাছে একবারও মনে হয়নি যে ম্যাচটা হারব। শুধু একটা কথা বারবার বলছিলাম, আমার মনে যেটা চলছিল, আমি পারব। বারবার নিজেকে বলেছি, আমি পারব, আমি পারব।’

ওই সময়ও পরিকল্পনামাফিকই খেলেছে বাংলাদেশ। বলা যায়, ব্যাটিংয়ে ওই সময়টাতেই বাংলাদেশ দলকে সবচেয়ে পরিকল্পিত মনে হয়েছে। মিরাজ বলেন, ‘শেষ উইকেট যখন ছিল, তখন তো ডু অর ডাই। মানে হারানোর কিছু নেই। তখন তো ঝুঁকি নিতেই হবে। ঝুঁকিটা এমন নিয়েছি…মুস্তাফিজের কথা খুব ভালো লেগেছে- ওর কথা কানে বাজছিল তখন নিজের মধ্যে নিজের বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আমি নিজের ভাবনায় পরিষ্কার ছিলাম যে আমি কি করব। ঠিক আমি কী করব, সেই জিনিসটা নিয়ে আমার স্বচ্ছতা ছিল।”

তিনি আরও বলেন, ‘যখন ৫০ রানের মতো লাগতো তখন আমি ঝুঁকি নিয়েছি। তা লেগে গেছে। ১৪ রান বা ১০ রানের সময় (জয়ের জন্য) একটু বেশি রোমাঞ্চিত ছিলাম, এত কাছে এসে যদি হেরে যাই! এর আগে এমন হয়েছে আমাদের সাথে। মুস্তাফিজ তখন বলেছে, ওপর দিয়ে খেলার দরকার নাই।’

এর আগে দেশের মাটিতেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন মিরাজ। এবার অপরাজিত ৩৮। তাঁর কাছে দু’টো ইনিংসই স্পেশাল। তবে, এগিয়ে রাখলেন ভারতের বিপক্ষে ইনিংসটাকেই, ‘দুটি ইনিংসই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে এটা বেশি স্পেশাল। শেষ উইকেটে ৫১ রান লাগত, আমার জন্য এটা বেশি স্পেশাল। এখানে ব্যাটিং করা কঠিন ছিল। ব্যাটসম্যানরা কনফিউজড হয়ে যাচ্ছিল।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...