এক নাটকের অবসান হলো৷ একটু দেরিতে হলেও হলো। লোক জানাজানি হলো৷ দলের কোন্দল বাইরে এলো, তবুও একটা সমাধান হলো। বলছিলান মেহেদি হাসান মিরাজ ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জের্সের মধ্যকার বিতর্কের কথা।
বিকেল নাগাদ সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভের বোমা ফাঁটালেন মিরাজ৷ চলেই যাচ্ছিলেন টিম হোটেল ছেড়ে। এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে গাড়িতে ওঠার আগের মূহুর্তে মিরাজ
বলেন, ‘খেলার মাত্র তিন ঘন্টা আগে একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে অধিনায়কের দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া সত্যিই অপমানজনক। এমন অপমানের পর আমি আর খেলতে চাই না।’
ঠিক এমন এক লজ্জাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো সমুদ্র পাড়ের শহর চট্টগ্রামে। মিরাজের সাথে দল সংশ্লিষ্টদের যে বোঝাপড়ায় ভুল ছিলো তা স্পষ্ট হয়েছে দিনের শেষে করা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মালিক কে এম রিফাতউজ্জামান ও মিরাজ সংবাদ সম্মেলনে তা পরিষ্কার ভাবেই জানিয়ে দিলেন৷
সংবাদ সম্মেলনে রিফাতউজ্জামান বলেন, ‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো। আমরা নিজেদের মধ্যে আলাপ সেড়ে সমাধান করে ফেলেছি।’ মিরাজের বক্তব্য অনুসারে বুঝতে খুব বাকি থাকে না যে ঠিক কার সাথে হয়েছিলো ভুল বোঝাবুঝি। দলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আলীর সাথে। বিকেলে মিরাজ তাঁর সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন ‘আমার সাথে তাঁর (পল নিক্সন) প্রায় ৩০ মিনিট এর মতো কথা হয়েছে। সে আমাকে স্পষ্টই বলেছে যে সে দলকে এমন কোন পরামর্শ দিয়ে যায়নি। সে (ইয়াসির আলী) বিবৃতিতে যা বলেছে তা সব মিথ্যা৷’
চট্টগ্রামের পঞ্চম ম্যাচে যখন মিরাজের পরিবর্তে নাঈম ইসলামকে টস করতে দেখা যায় ঠিক তখনই সূত্রপাত হয় এই বিতর্কের। সেই বিতর্ক আরো ডালপালা মেলে ইয়াসির আলীর দেওয়া বিবৃতিতে। যেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন দলের প্রধান কোচ পল নিক্সন নাকি পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন মিরাজকে অধিনায়কের পদ থেকে অপসারনের। সেই থেকে জল বহুদূর গড়িয়ে অবশেষে মিমাংসা হলো দলের চেয়ারম্যানের মধ্যস্ততায়৷
তবে মিমাংসা হলেও দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পুনঃরায় নিতে নারাজ মিরাজ৷ এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তাঁদের হয়ে খেলবো, তবে আমি দলকে নেতৃত্ব দিতে চাই না৷’ দলের চেয়ারম্যান রিফাতউজ্জামানের উপস্থিতিতেই তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ইয়াসির আলী সম্পর্কে রিফাতউজ্জামান বলেন, ‘আমাদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাঁর (মিরাজ) কাছে ক্ষমা চেয়েছে৷ তবে তাঁর(ইয়াসির) উচিৎ ছিলো মিরাজকে বিষয়টি সম্পর্কে আগেভাগেই অবহিত করা।
সেই যাই হোক, সমস্যা হয়ত মিটে গেলো। কিন্তু দলের ভেতরের পরিবেশটা যে নষ্ট হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই৷ দারুণ ছন্দে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এমন এক বিতর্কের পর বিপিএলের অষ্টম আসরে কতদূর যেতে পারবে তা হয়ত সময় বলে দেবে। তবে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়ের মনক্ষুন্ন হওয়া মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। সেই সাথে নানানরকমে গুজব দলের ভেতরের সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটাবে না তার নিশ্চয়তাও যে নেই।