নেতৃত্বের দৌঁড়ে যেখানে পিছিয়ে লিটন

সাম্প্রতিক সময়ে ঘুরে ফিরে একটা প্রশ্নই ঘুরছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে – কে হবেন এশিয়া কাপ আর বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক? তামিম ইকবাল অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়ার পর থেকেই জাতীয় দলের নেতৃত্ব কার হাতে উঠবে সেটা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা। এতদিন সম্ভাব্য নাম হিসেবে শুধু সাকিব আল হাসান আর লিটন দাসের কথা বলা হয়েছিল, তবে এবার যুক্ত হয়েছে মেহেদি হাসান মিরাজের নামও।

তামিম ইকবাল পরবর্তী বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সাকিব আল হাসান। দুইয়ে দুইয়ে চার মিললে হয়তো সাকিবই হবেন নতুন অধিনায়ক; কিন্তু যদি না মেলে? সাকিব যদি ক্যারিয়ারের শেষ দিকে এসে ক্যাপ্টেন হতে রাজি না হন তবে বিকল্প অপশন হিসেবে আছেন লিটন। এক্ষেত্রে অবশ্য লিটনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন মিরাজ।

হুট করে মেহেদি হাসান মিরাজের নাম উঠে আসলেও এখন পর্যন্ত আলোচনায় এগিয়ে আছেন তিনি। পারফরম্যান্স ছাড়াও লিটন আর মিরাজের মাঝে অনেক কিছুই তুলনা করছে টিম ম্যানেজম্যান্ট। সতীর্থদের মাঝে কার কেমন গ্রহণযোগ্যতা, দলকে এক সুতায় গাঁথার ক্ষমতা ইত্যাদি বোর্ডের সভাতে প্রাধান্য পাচ্ছে।

তাতে লিটনের চরিত্রের অন্তর্মুখিতা নেতৃত্বের দৌড়ে তাঁকে পিছিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে, ড্রেসিংরুম মাতিয়ে রাখা মিরাজের সাথে বাকিদের সম্পর্ক বেশ সহজ। শুধু ক্রিকেটারই নয়, বোর্ড কর্তাদের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক বেশ ভাল।

চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনও লিটন দাসের ব্যাপারে সংশয় সৃষ্টি করেছে। এর আগের দিনই অভিমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়া তামিমকে নিয়ে একের পর এক প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন লিটন দাস। সাংবাদিকদের কিছু কড়া জবাবও দেন তিনি, ভালোভাবে নেয়নি বোর্ডের একটি অংশ।

বিশ্বকাপের সময় মাঠের বাইরের নানা কর্মকাণ্ডে চনমনে মেহেদি হাসান মিরাজই বরং বেশি মানানসই হবেন বলে মনে করছেন তাঁরা। এছাড়া বড় মঞ্চে নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রেও এগিয়ে আছেন মিরাজ; ২০১৬ যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে সেমিতে পৌঁছে দিয়েছিলেন এই ডানহাতি।

যদিও মেহেদি হাসান মিরাজের গায়ে এখনো জুনিয়র ট্যাগ রয়ে গিয়েছে; মাঠে ও মাঠের বাইরে নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কতটা পরিপক্বতার পরিচয় দিতে পারবেন তিনি সেটা একটা ভাবনার জায়গা। ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে টস করতে নামা লিটন দাসকে এই দিক দিয়ে অবশ্য ভরসা করা যায়, এখন পর্যন্ত তাঁর অধিনায়কসুলভ আচরণে মুগ্ধ হওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি।

লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) ব্যস্ত সময় কাটানো সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আপাতত আলোচনা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সাকিবের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে পারলে তিনিই হবেন টাইগারদের কান্ডারি। অন্যথায়, মিরাজ কিংবা লিটনের নেতৃত্বে বিশ্বকাপ খেলবে টিম টাইগার্স; আপাতদৃষ্টিতে অবশ্য মিরাজ খানিকটা এগিয়ে আছেন লিটনের চেয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link