মোহাম্মদ নবী, দ্য ম্যাচ উইনার

ম্যাক্স ও’ডাউড ও কলিন অ্যাকারম্যানের জুটিতে বড় রানের লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছিল নেদারল্যান্ডস। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে আফগান বোলারদের চোখে চোখ রেখে রানরেট ছয়ের উপরেই রেখেছিল ডাচরা। তবে নেদারল্যান্ডসের ছন্দপতন ঘটতে সময় লাগেনি। ৭৩ রানে ১ উইকেট থাকা নেদারল্যান্ডস শেষ পর্যন্ত গুটিয়ে যায় ১৭৯ রানে। ডাচদের এমন অপ্রত্যাশিত ভাঙনের নেপথ্যে হিসেবে ছিল দুটি ব্যাপার। একটি রানআউটের দুষ্টচক্র, আর অন্যটি মোহাম্মদ নবীর বোলিং।

ডাচদের ভাঙন শুরু হয়েছিল আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের সরাসরি থ্রোয়ে ও’ডাউডের রান আউটের মাধ্যমে। এরপর সেই রান আউটের কাঁটা সঙ্গী হয়েছে ডাচ ব্যাটারদের। ও’ডাউডের পর একে একে অ্যাকারম্যান, স্কট এডওয়ার্ডস, সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটও রান আউটের শিকার হন। আর এখানেই হয়েছে নতুন এক কীর্তি।  প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চারজনই রানআউট—ওয়ানডে ক্রিকেট এমন ঘটনা দেখল এই প্রথম।

ডাচদের রানআউট দুর্ভোগের পর এ দিন আরেক বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মোহাম্মদ নবী। ৯২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ডাচরা যখন দিশেহারা, তখন বাস ডি লিডের ব্যাটের উপরেই তাকিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। তবে ডি লিডকে উইকেট থিতু হওয়ারই সুযোগ দেননি নবী। উইকেটরক্ষক ইব্রাহিম আলিখিলের গ্লাভসে ক্যাচ বানিয়ে ডি লিডকে ফেরান নবী।

 

নবীর পরের শিকারেও সহায়ক ভূমিকা পালন করেন আলিখিল। ৩১তম ওভারে নবীর অফসাইডে করা বলটা ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন লোগান ভন বিক। তবে সে শটটি খেলতে গিয়ে বিকে পা সরে আসে ক্রিজের বাইরে। একই বলটা ব্যাটে বলে সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ হন ডাচ এ ক্রিকেটার। ফলাফল, বল চলে যায় উইকেটরক্ষকের কাছে। আর আফগান উইকেটরক্ষক ইব্রাহিম আলিখিলও স্ট্যাম্পিং করার সুযোগটা হাতছাড়া করেননি।

মোহাম্মদ নবী এরপরেও আরো একটি উইকেট নিয়েছিলেন। ডাচদের ইনিংসের সর্বশেষ উইকেটটি তিনি নেন। তবে তার দুর্দান্ত এক ফিল্ডিংয়ে নেদারল্যান্ডসের লড়াই করার পুঁজির স্বপ্ন নিঃশেষ করে দেন নবী। চারে নামা সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটের ব্যাটে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ার দিকে এগোচ্ছিল নেদারল্যান্ডস। তবে ম্যাচের ৩৫তম ওভারে সিঙ্গেল নিতে গেলে মোহাম্মদ নবীর থ্রোয়ে রান আউট হন এঙ্গেলব্রেখটও। নবীর ঐ এক থ্রো-তেই থেমে যায় তাঁর ৮৬ বলে ৫৮ রানের ইনিংস।

৯ ওভার ৩ বলে ২৮ রানে ৩ উইকেট। সাথে ডাচদের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করা ব্যাটারকে রান আউটের মাধ্যমের ফেরানো। নবীর এমন কার্যকরী পারফরম্যান্সের ম্যাচ জয়ের একটা ভিত্তি পেয়ে যায় আফগানরা। নেদারল্যান্ডসের দেওয়া ১৮০ রানের লক্ষ্য তাঁরা টপকে যায় ৭ উইকেট হাতে রেখেই। আফগানদের ইনিংসে জোড়া ফিফটি এসেছে রহমত শাহ আর হাশমতউল্লাহ শহীদির ব্যাট থেকে। তবে সবাইকে ছাপিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে নবীর হাতেই। ডাচদের অল্পরানে বেঁধে দেওয়ার যাত্রায় তিনিই যে ছিলেন মূল চালক।

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link