সেই মুরালি বিজয় আজ ‘ভিনদেশি’

আপনি পাঁড় ক্রিকেটভক্ত হলে ২০১৪ সালে ভারতের ইংল্যান্ড সফরের স্মৃতি মনে থাকতে বাধ্য। সবাই সিরিজটিকে মনে রাখে বিরাট কোহলির ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সিরিজ হিসেবে। সেবার জিমি অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রডদের বলের কোনো জবাব ছিল না তাঁর কাছে।

সেই সিরিজেই প্রায় হাজারের বেশি বল মোকাবেলা করেছিলেন ভারতীয় ওপেনার মুরালি বিজয়। প্রায় ৪০ শতাংশ বল ছেড়ে দিয়ে পরিচয় দিয়েছিলেন অসীম ধৈর্য্যের। বিজয় এখন আর ভারতীয় দলের অংশ নন কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটেও অনুপস্থিত, তবে ক্রিকেট রোমান্টিকরা তাঁকে মনে রাখবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সিরিজের জন্য।

বিজয় সর্বশেষ ২০১৮ সালে ভারতের হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরের দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু পার্থ টেস্টই হয়ে আছে তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। টানা রানখরা আর শুভমান গিল, পৃথ্বী শ, লোকেশ রাহুলদের আবির্ভাব বন্ধ করে দিয়েছে বিজয়ের জাতীয় দলে ফেরার রাস্তা। রঞ্জি ট্রফিতেও সুযোগ পাচ্ছেন না বছর চারেক হল, সর্বশেষ ২০১৯ সালে মাঠে নেমেছিলেন তামিলনাড়ুর হয়ে। তবে ২০২০ সালের আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে এক ম্যাচ খেলেছিলেন বিজয়।

তবে সম্প্রতি বিসিসিআইকে পুনরায় ক্রিকেটে ফেরার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তিনি। মূলত ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় অন্য দেশে ক্যারিয়ারের নতুন শুরু করতে চান তিনি। সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘বিসিসিআইয়ের সাথে আমার সম্পর্ক প্রায় শেষ। আমি বাইরের দেশে খেলার সুযোগ খুঁজছি। আমি আবারো প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘৩০ বছর পার হলেই সবার মনে করে আমরা বোধহয় ৮০ বছরের বুড়ো হয়ে গেছি। মিডিয়ার উচিত ব্যাপারটা ঠিকভাবে উপস্থাপন করা। আমি মনে করে ত্রিশের পরও কেউ চাইলে ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত ফর্মে থাকতে পারো। আমার তো মনে হয় আমি এখন সবচেয়ে ভালো ব্যাট করতে পারবো অন্য যেকোনো সময়ের চাইতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো সুযোগই পাচ্ছি না এবং সেকারণেই আমাকে বাইরে যেতে হচ্ছে। আমি মনে করি আপনি সেটাই করতে পারবেন যেটা আপনার হাতে আছে। যেটা হাতে নেই, সেটা করতে পারবেন না। সুযোগ পাওয়াটা আমার হাতে নেই। সে কারণেই ভারতের বাইরে খেলতে চাইছি।” জানান বিজয়।’

নির্বাচকদের ক্রমাগত অবহেলাই এই সিদ্ধান্ত নিতে তাঁকে বাধ্য করেছে বলে জানান বিজয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচকদের কাছে থেকে বীরেন্দর শেবাগের মত সমর্থন পেলে, আমার ক্যারিয়ারটা ভিন্ন হত।’

অথচ লম্বা সময় জুড়েই ভারতের এক নম্বর ওপেনার হিসেবে খেলেছেন বিজয়। মূলত লাল বলের ক্রিকেটার ভাবা হলেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও খেলেছেন সমানতালে। ভারতের হয়ে ৬১ টেস্ট, ১৭ ওয়ানডে এবং ৯ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামেন তিনি। টেস্টে তাঁর সংগ্রহ ৩৯৮২ রান এবং ওডিয়াইতে করেছেন ৩৩৯ রান। এছাড়া আইপিএলে চেন্নাইয়ের নিয়মিত মুখ ছিলেন বিজয়। আইপিএলে ১০৬ ম্যাচে খেলে তাঁর সংগ্রহ ২৬১৯ রান।

গত বছর সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে দেখা গিয়েছিল বিজয়কে। সেবার তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে ট্রিচি ওয়ারিহর্সের হয়ে খেলতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই টুর্নামেন্টে ৬৬ বলে ১২১ রানের ইনিংস খেলার পথে ১২ টি ছক্কা হাঁকিয়ে আলোচনায় আসেন বিজয়। মূলত ভারতজুড়ে দুর্দান্ত সব তরুণ ক্রিকেটারের উত্থান বন্ধ করে দিয়েছে বিজয়ের ক্রিকেট খেলার দরজা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link