কেন স্টার্কদের চেয়ে কম টাকা পাবেন মুস্তাফিজ?

একজন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ঝুলিতে রয়েছে দুইটি ভিন্ন ফরম্যাটের শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা। আরেকজন বেশ দূর্ভাগা। বৈশ্বিক আসর তো দূরে থাক, মহাদেশী লড়াইয়ের শিরোপা জেতা হয়নি তার। মিচেল স্টার্ক আর মুস্তাফিজুর রহমানের মাঝে তাই যেকোন ধরণের তুলনা করাই অমূলক।

তাইতো কোন তুলনা নয়, স্রেফ মুস্তাফিজ ঠিক কতটুকু অবমূল্যায়িত হচ্ছেন- সেটাই তুলে ধরা। এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ক্রিকেটার মিচেল স্টার্ক। ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে তাকে দলে ভিড়িয়েছিল দুই বারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইটা রাইডার্স।

অন্যদিকে ভিত্তিমূল্য ২কোটি রুপিতে মুস্তাফিজকে দলে নেয় চেন্নাই সুপার কিংস। কিন্তু দলের জন্যে মিচেল স্টার্ক যতটা না কার্যকর, তার থেকেও অধিক কার্যকারিতা দেখাচ্ছেন মুস্তাফিজুর রহমান। তিন ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তালিকায় সবার উপরেই রয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।

চেন্নাইয়ের জার্সিতে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই মুস্তাফিজুর জিতে নিয়েছিলেন ম্যাচ সেরার পুরষ্কারও। অন্যদিকে বল হাতে ভীষণ বাজে সময়ই পার করছে মিচেল স্টার্ক। চ্যাম্পিয়ন এই ক্রিকেটার দুই ম্যাচ খেলেছেন কলকাতার হয়ে। একটি উইকেটের দেখা পাওয়া তো দূরে থাক, রান বিলিয়েছেন দেদারছে।

দুই ম্যাচে ৮ ওভার বোলিং করে পাক্কা ১০০ রান দিয়েছেন অজি এই বোলার। তাতেই অন্তত প্রশ্ন জাগে, অর্থের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে তো? স্টার্ক ও মুস্তাফিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে খুব বেশি তফাৎ নেই অবশ্য। এমনকি ইকোনমির দিক থেকে মুস্তাফিজ খানিকটা এগিয়েই রয়েছে বরং।

সব ধরণের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে মুস্তাফিজ ম্যাচ খেলেছেন ২৪৩টি। উইকেট শিকার করেছেন ৩০০টি। অন্যদিকে মুস্তাফিজের তুলনায় বেশ কম ম্যাচই খেলেছেন স্টার্ক। ১২৫ ম্যাচ খেলে ১৭১ উইকেট নিজের পকেটে পুরেছেন স্টার্ক।

টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ২১.৭১ গড়ে বোলিং করেছেন মুস্তাফিজ। স্টার্কের গড় ২০.৩২। মুস্তাফিজের স্ট্রাইকরেট ১৭.৪, পক্ষান্তরে স্টার্কের স্ট্রাইকরেট ১৬.১। ইকোনমিকাল বোলিংয়ের দিক থেকে মুস্তাফিজ একটু উপড়ের দিকেই থাকেন অধিকাংশ সময়ে। যদিও মাঝেমধ্যে বল হাতে খারাপ দিনও কাটে তার। তবুও সাতের মধ্যেই রয়েছে তার ইকোনমি।

৭.৪৪ ইকোনমিতে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে রান দিয়েছেন মুস্তাফিজ। অন্যদিকে স্টার্ক রান খরচা করেছেন ৭.৫৬ হারে। পারফরমেন্সের পার্থক্য খুব একটা বেশি নয়। তবে পারিশ্রমিকের পার্থক্য আছে বৈকি। এটার পেছনে অবশ্য দলের চাহিদা অন্যতম কারণ। তাছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফলতাও প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

বিশ্বের তাবড় সব দলকে পেছনে ফেলে শিরোপা জয় করার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই এগিয়ে থাকে অধিকাংশ সময়ে। তাছাড়া মুস্তাফিজও তো আইপিএল জিতেছিলেন নিজের খেলা প্রথম আসরেই। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের শিরোপা জয়ের অন্যতম কারিগর তিনি। তবুও আসলে বৈশ্বিক ক্রিকেটে দলের ভারিক্কি, দলগত সাফল্য নানাভাবে প্রভাব ফেলে খেলোয়াড় মূল্যায়নে।

তাছাড়া আন্তর্জাতিক সার্কিটে মুস্তাফিজ বেশ চড়াই-উৎরাই পার করেছেন। শুরুর দিকে দূর্ধর্ষ মুস্তাফিজের ধার খানিকটা মলিন হয়েছে। ঠিক এসব কারণেও তিনি যথাযথ মূল্যায়নটা ঠিক পান না। আর তাছাড়া সব মূল্যায়ন তো আর অর্থ দিয়েও হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link