গত বছরের অক্টোবর থেকেই ঘরোয়া টুর্নামেন্ট ও জাতীয় দলের খেলার কারণে জৈব সুরক্ষা বায়ো বাবলে ও কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছে পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে। যদিও মাঝখানে একটু বিরতি পেয়েছিলেন তিনি। এর পরেও দীর্ঘ সময় জৈব সুরক্ষা বায়ো বাবলে থেকে ক্লান্ত বোধ করছেন মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন বায়ো বাবল সবার জন্যই কঠিন।
গত অক্টোবর নভেম্বরে জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে দেশের মাটিতে দুটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট খেলার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর দেশের বাইরে নিউজিল্যান্ড বিপক্ষে সিরিজ খেলার পর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) স্থগিত হওয়ার আগ পর্যন্ত খেলেছেন এই পেসার।
ভারত থেকে চাটার্ড ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরেই হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছের মুস্তাফিজুর রহমান। কোয়ারেন্টাইনে থেকেই ক্রিকবাজকে জানিয়েছেন জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে অন্যান্য যাত্রীদের মতো ভ্রমণ না করেও কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে তাঁকে। তবে তিনি মনে করেন এখানে তাদের কিছুই করার নেই।
মুস্তাফিজ বলেন, ‘এটা অত্যন্ত ক্লান্তিকর (জৈব সুরক্ষা বলয়) এবং এটি দিন দিন আরো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। হোটেল রুম এবং ভেন্যু, আপনি কত দিন এই একই রুটিন উপভোগ করতে পারবেন? এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হোক বা আইপিএল। সব কিছু মিলিয়ে এটি সবার জন্যই কঠিন।’
এই পেসার আরো বলেন, ‘তবে আমি কিছুই করতে পারি না। আমি ভারতে জৈব সুরক্ষা বলয়ে ছিলাম এবং এখন কোয়ারেন্টাইন করছি। আমরা অন্যান্য যাত্রীদের মতো ভ্রমণ করিনি। এক দলের ক্রিকেটার করোনায় সংক্রমণিত হওয়ার পরে, আমরা ভিন্ন একটি কক্ষে ছিলাম। আমরা প্রায় পাঁচ থেকে ছয় দিনের জন্য একটি কক্ষে আটকে ছিলাম, এবং আমাদের জন্য ভাড়া করা বিমানের কাছে এসেছিলাম।’
এবারের আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরম করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে সাত ম্যাচে শিকার করেছেন আট উইকেট। মুস্তাফিজ আগে থেকেই জানতেন রাজস্থানের কোচ কুমার সাঙ্গাকারা তার কাছে থেকে কি প্রত্যাশা করেন। কারণ বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসে হয়ে খেলেছিলেন তাঁরা। এছাড়া মুস্তাফিজ রাজস্থানকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তাকে নতুন বলে বল করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, ‘ছন্দ ফিরে পাওয়াটা খুব ভাল ছিল এবং আমি যা চাই তাই করতে পেরেছি। আমি আমার পক্ষ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি এবং এখন আমি কি পারফরম্যান্স করেছি তা বিচার করবেন আপনারা। তারা আমাকে সব সময় অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং আমি খুশি যে তারা আমাকে নতুন বলে বল করার সুযোগ দিয়েছিল এবং আমি তাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আমি ঢাকা ডায়নামাইটসে খেলার সময় থেকে কুমার সাঙ্গাকারাকে জানতাম এবং বুঝতাম যে সে আমার কাছ থেকে কি প্রত্যাশা করে। অন্য সবাইও আমাকে ড্রেসিংরুমে সাহায্য করেছে।’
দুর্দান্ত ফর্মে থাকার পরেও আইপিএল স্থগিত হয়ে যাওয়া নিয়ে কোন হতাশা নেই মুস্তাফিজুর রহমানের। তিনি মনে করেন ক্রিকেটাররা করোনায় আক্রান্ত হলে কারো জন্যই ভালো হত না। এই পেসার জানিয়েছেন এই সাত ম্যাচ খেলেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হয়ে গেছে তার। এই পেসার মনে করেন এই অভিজ্ঞতা জাতীয় দলের সতীর্থদের ভিতর ভাগ করে নিতে পারবেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘কারণ করোনা যদি বেশি ছড়িয়ে যেত তবে প্রচুর খেলোয়াড় সংক্রমিত হত এবং এটি কারো জন্য ভাল হত না। আমি মনে করি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভাল প্রস্তুতি নিয়েছি এবং আমি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তা অবশ্যই বিশ্বকাপে আমাকে সাহায্য করবে। আমি আমার জাতীয় দলের সতীর্থদের সাথে অভিজ্ঞতা গুলো ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা করবো। যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমাদের প্রতিপক্ষদের বিশ্লেষণ করার সময় আমাদের সাহায্য করবে বলে মনে করি।’