বেঞ্চ থেকে ফিরলেই ফেরে মুস্তাফিজের ছন্দ

যখনই বাজে পারফরমেন্সের জন্যে সাইডবেঞ্চে বসেছেন মুস্তাফিজ, ঠিক এরপরই তিনি হাজির হন নিজের চিরায়ত রুপে।

স্ট্রেচারে চড়ে মাঠ ছাড়লেন মুস্তাফিজুর রহমান। শরীর জুড়েই তার পেশিতে টান অনুভব করছিলেন। ব্যক্তিগত নবম ওভারেই সে চিত্র একটু একটু করে স্পষ্ট হচ্ছিল। দশম ওভার যখন করতে এলেন তখনও অস্বস্তি ছিল। তাইতো রানআপ খানিকটা ছোট করে নিলেন। তবে তাতেও কাজের কাজ হলো না। শরীর আর সহায় হয়নি তার।

তবে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়ার আগে নিজের কাজটা এদিন ভালভাবেই করে গেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। আগের দুই ম্যাচ সাইডবেঞ্চেই বসে দেখেছেন তিনি। এদিন অবশ্য সুযোগ আসার সম্ভাবনা ছিল কম। তবে তানজিম হাসান সাকিবের ইনজুরিই তাকে একাদশে সুযোগ করে দিয়েছে।

আর বেঞ্চ থেকে এসেই আবারও উইকেটের দেখা পেয়েছেন তিনি। তার থেকেও বড় বিষয় ইকোনমিকাল বোলিং তিনি করে গেছেন। যে বিষয়টাই ছিল চিন্তার কারণ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এদিন দুইটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেটের দেখা পেয়েছেন মুস্তাফিজ।

নিজের প্রথম ওভারেই তিনি তুলে নেন সাদিরা সামারাভিক্রামার উইকেট। ইনসুইং করা বলটা ব্যাটারের ব্যাটের খোঁচায় চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের দস্তানায়। এরপরের উইকেটও তিনি আদায় করে নিয়েছেন। ব্যাটারকে আটকে ফেলেছেন উইকেটের পেছনে। তবে প্রথম উইকেটের থেকেও দ্বিতীয় উইকেট ছিল বেজায় গুরুত্বপূর্ণ।

কেননা ইনিংসের শুরুতে করা বাংলাদেশের আঘাত সামলে নিতে শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। চারিথ আসালাঙ্কা স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন লড়াইয়ের। সেই আসালাঙ্কাকেই তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই দুইটি উইকেটের পাশাপাশি ৪.৩৩ ইকোনমি রেটে রান দিয়েছেন তিনি। চিরায়ত মুস্তাফিজ।

তবে একটা বিষয় লক্ষ্যনীয়- যখনই বাজে পারফরমেন্সের জন্যে সাইডবেঞ্চে বসেছেন মুস্তাফিজ, ঠিক এরপরই তিনি হাজির হন নিজের চিরায়ত রুপে। নিকট অতীতের দুইটি উদাহরণ টেনে নিয়ে আসলে বিষয়টা হবে আরও খানিকটা স্পষ্ট।

২০২২ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশের বাইরে ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম ম্যাচে ৫৭ রান খরচায় স্রেফ এক উইকেট শিকার করেছিলেন মুস্তাফিজ। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে সাইড বেঞ্চে ছিলেন তিনি। তৃতীয় ম্যাচে একাদশে ফিরে এসে চারটি উইকেট শিকার করেন ১৭ রানের বিনিময়ে।

এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। ২০২৩ সালে ইংল্যান্ডে আয়ারল্যান্ডে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। সেই সিরিজের আগেও মুস্তাফিজের পারফরমেন্স ছিল ছন্দহীন। এরপর আয়ারল্যান্ডেও বসেছিলেন দুই ম্যাচ।

শেষ ম্যাচে সুযোগ পেয়েই নিজের স্বভাবজাত খেলাটাই উপহার দেন মুস্তাফিজ। ৪৪ রানে ৪ উইকেট তুলে নেন ফিজ। এরপর এই শ্রীলঙ্কা সিরিজ। এই ওয়ানডে সিরিজেও শুরুর দুইটি ম্যাচ সাইডবেঞ্চেই বসে কাটিয়েছেন। তৃতীয় ম্যাচের সুযোগটায় আবারও ছন্দময় বোলিংটাই করলেন মুস্তাফিজ।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুণ বোলিং করবেন মুস্তাফিজ সেটাই যেন স্বাভাবিক। কেননা শ্রীলঙ্কা রীতিমত তার অন্যতম প্রিয় প্রতিপক্ষ। লঙ্কানদের বিপক্ষে ১৪ ম্যাচেই ২৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। লঙ্কানদের ২৬ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছেন রুবেল হোসেন।

তবে সেসব ছাপিয়ে মুস্তাফিজের ইনজুরি একটু হলেও শঙ্কার কারণ। অন্তত মুস্তাফিজ ভক্তদের জন্যে। কেননা সামনেই যে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। নতুন দল চেন্নাই সুপার কিংসের একাদশে শুরু থেকেই মুস্তাফিজের খেলার সম্ভাবনা বেশি। তিনি ইনজুরি আক্রান্ত হলে সে সম্ভাবনারও অকাল মৃত্যু ঘটবে। তেমনটি নিশ্চয়ই চাইছেন না কেউ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...