এ রূপকথা ফুরোবার নয়

এতদিনে এটা প্রমাণিত যে মহেন্দ্র সিং ধোনি আসলে কোন উইকেটরক্ষক, ব্যাটসম্যান, ক্যাপ্টেন ট্রিলজির সাফল্যের রূপকথা নয়। মহেন্দ্র সিং ধোনি মানে একটা ছোট মাপের ক্ষেত্রফল থেকে অসীম জ্যামিতি জয়ের সফল প্রবাদ। মহেন্দ্র সিং ধোনি আসলে ‘পাগলাগারদের শহর’ রাঁচি থেকে উঠে আসা এক বাঁশুরিয়া, যার বাঁশিতে ভারতীয় ক্রিকেটসমাজ পাগল হয়ে গিয়েছিল একটা যুগেরও বেশি সময় ধরে।মহেন্দ্র সিং ধোনি মানে পড়ে যেতে যেতেও উঠে দাঁড়িয়ে একটা স্বপ্নপূরণের সীমানা পেরনো লম্বা দৌড়।

ক্রিকেটে ডিআরএস বা ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম এসে দ্বিতীয়বার দেখার আর ভাবার সুযোগটা করে দিয়েছিল আম্পায়ারদের। খেলোয়াড়দের নয়। তাদের জন্য কোন রি-টেক নেই ক্রিকেটের কাছে। কোন রি-টেক আপনার কাছেও নেই একজন ক্রিকেটারের জন্য।অনেক ভালবাসুন বা তীব্র অপছন্দ করুন। উপেক্ষা করতে পারবেন না এই ক্রিকেটারটিকে। সাফল্য যাকে তাড়া করেছে, ব্যর্থতা যাকে বিচলিত করেনি, চল্লিশ ছুঁয়ে ফেললেও।

ক্রিকেটের ডবল্যু-বি-সি-এস (উইকেটরক্ষক, ব্যাটসম্যান, ক্যাপ্টেন, সাকসেস) এই ক্রিকেটারটি প্রমাণ করে দিয়েছিলেন সেই বহুব্যবহৃত প্রবাদবাক্য – ‘নাথিং সাকসিডস লাইক সাকসেস’। ভারতীয় ক্রিকেটে তার এক্সক্লুসিভ হেলিকপ্টার শট তাঁকে এনে দিয়েছিল অনেক সাফল্য।

ধোনির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে চলে যাওয়াটা ছিল প্রায় নি:শব্দেই, হেলিকপ্টার শটের সশব্দ গর্জন সেখানে অনুপস্থিত ছিল। একটা ১৬/১৭ বছরের ইতিহাসের মঞ্চে পর্দা পড়ে গিয়েছিল সেদিন, ১৫ আগস্ট ২০২০ তারিখে। সেদিন থেকে চালু হয়েছিল আর একটা ডি-আর-এস। ধোনি রিটায়ারমেন্ট সার্ভিস।

তার আগে ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর ২০১৩ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ভারতের সিন্দুকে জমা পড়েছিল তার নেতৃত্বে। আর এ দুইয়ের মাঝখানে এসেছিল কোন এক ২ এপ্রিল ২০১১ সালের ওয়াঙখেড়ের মায়াবী সন্ধে, যেদিন তার মারা একটি ওভারবাউন্ডারির পরে সশব্দে গর্জন করে উঠেছিলেন ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্র সশব্দে বলে ওঠেন, ‘Dhoniiiii finishes off in style. A magnificent strike into the crowd. India lift the World Cup after 28 years. The party’s started in the dressing room. And it’s an Indian captain, who’s been absolutely magnificent, in the night of the final.’

এতদিনে এটা প্রমাণিত যে মহেন্দ্র সিং ধোনি আসলে কোন উইকেটকিপার,ব্যাটসম্যান, ক্যাপ্টেন ট্রিলজির সাফল্যের রূপকথা নয়। মহেন্দ্র সিং ধোনি মানে একটা ছোট মাপের ক্ষেত্রফল থেকে অসীম জ্যামিতি জয়ের সফল প্রবাদ। মহেন্দ্র সিং ধোনি আসলে ‘পাগলাগারদের শহর’ রাঁচি থেকে উঠে আসা এক বাঁশুরিয়া, যার বাঁশিতে ভারতীয় ক্রিকেটসমাজ পাগল হয়ে গিয়েছিল একটা যুগেরও বেশি সময় ধরে।মহেন্দ্র সিং ধোনি মানে পড়ে যেতে যেতেও উঠে দাঁড়িয়ে একটা স্বপ্নপূরণের সীমানা পেরনো লম্বা দৌড়।

আজ ২০২২য়ের আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে আর একবার তার অলৌকিক ফিনিশ দেখার পরে আজ শুধু এটুকুই বলা যাক যে, পিছনে ফেলে আসা ক্রিকেটস্মৃতির নুড়িপাথরগুলি সযত্নে কুড়িয়ে নিয়ে সেসব অমূল্য সম্পদে আর একবার পকেট ভরে ফেলার ইচ্ছে উসকে দেওয়ার ডাকনাম মহেন্দ্র সিং ধোনি।

কিছু কিছু রূপকথা কখনোই শেষ হতে নেই যে!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...