দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নিউজিল্যান্ড, ভায়া নেদারল্যান্ডস

আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড। সেখানে প্রথমবারের মত ডাক পেয়েছেন মাইকেল রিপন। স্কোয়াডা ঘোষণার পর থেকেই আলোচনায় এই অলরাউন্ডার।

দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া রিপন এখন অভিষেকের অপেক্ষায় নিউজিল্যান্ডের জার্সি গায়ে। তবে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইতিমধ্যেই তাঁর অভিষেক হয়েছে! হ্যাঁ, মাস তিনেক আগেই তিনি খেলেছেন নেদারল্যান্ডসের জার্সি গায়ে। এবার নিউজিল্যান্ডের জার্সি গায়ে জড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন ৩০ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার।

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী সহযোগী সদস্য দেশের হয়ে খেলো কোনো ক্রিকেটার কোনো বাঁধাধরা নিয়ম ছাড়াই পূর্ণসদস্য দেশের হয়ে খেলতে পারবে। তবে, পুনরায় আবার ওই সহযোগী দেশের হয়ে খেলতে হলে তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে। যার কারণে মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে নেদারল্যান্ডসের জার্সি ছেড়ে নিউজিল্যান্ডের স্কোয়াডে রিপন।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে ২০১৩ সাল থেকেই ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলছেন রিপন। ওটাগোর ও নিউজিল্যান্ড এ দলের হয়ে তিনি খেলে আসছেন লম্বা সময় ধরেই। তবে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতেন নেদারল্যান্ডসের হয়ে। এইত গেল মার্চে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেই নেদারল্যান্ডসের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। তিন মাস না যেতেই এবার দল পালটে যাচ্ছে দল। নেদারল্যান্ডস থেকে স্থায়ীভাবে পাড়ি জমাচ্ছেন নিউজিল্যান্ড।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রিপন একাই নন যিনি দুই দলের হয়ে পক্ষে এবং বিপক্ষে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে এমন আটজন ক্রিকেটার আছেন যারা দুই দলের হয়ে পক্ষে এবং বিপক্ষে খেলার রেকর্ড গড়েছেন।

সাবেক ক্রিকেটার বিলি মিডউইনটার ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া – দুই দলের লড়াইয়ে, দুই দলেরই পক্ষে এবং বিপক্ষে খেলেছেন। এছাড়া ফ্র‍্যাঙ্ক হিয়ারনে, ফ্র‍্যাঙ্ক মিশেল, স্যামি গালিয়েন, এড জয়েস, ইয়ন মরগ্যান, বয়েড র‍্যানকিনরা আছেন এই তালিকায়। নিউজিল্যান্ডের জার্সি গায়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজের খেলার সুযোগ পেলে অষ্টম ক্রিকেটার হিসেবে এই তালিকার সংযোজন হবেন মাইকেল রিপন।

প্রথম বাঁহাতি রিস্টস্পিনার হিসেবে নিউজিল্যান্ড দলে সুযোগ পেয়েছেন রিপন। নিউজিল্যান্ডের ৯২ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার কোনো চায়নাম্যান জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাপটাউনে জন্ম নেওয়া রিপন ২০১৩ সালে ক্রিকেটে ক্যারিয়ার গড়তে পাড়ি জমান নিউজিল্যান্ডে।

সেখানে ওটাগোর হয়ে খেলার সুযোগ পান তিনি। এর মধ্যে সুযোগ পেয়ে যান নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলের হয়ে খেলার। ডাচদের হয়ে খেলেছেন ২৭ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলেছেন তিনি।

নেদারল্যান্ডসের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলায় সহজেই সুযোগ পান কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপেও। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেট দল ক্যাপকোবরার হয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় রিপনের। এরপর ২০১২ সালে যোগ দেন সাসেক্সে। এক বছর বাদেই ২০১৩ সালে নেদারল্যান্ডসের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় এই অলরাউন্ডারের।

এখন অপেক্ষা ব্ল্যাকক্যাপসদের হয়ে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানোর। মাস তিনেকের ব্যবধানে বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম শক্তিশালী দলের হয়ে অভিষেকের অপেক্ষায় রিপন। সাত বছর ক্রিকেটের এদিক-সেদিন দৌড়ে বেড়ানোর পর ত্রিশ বছর বয়সে এসে নিজের পরিশ্রম আর সাধনার ফল পেতে যাচ্ছেন এই চায়নাম্যান অলরাউন্ডার। মাইক হাসি, ডেভন কনওয়েদের মতোন রিপন নিশ্চয়ই চাইবেন পরে এসেও নিজের সামর্থ্যের জানান দিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link