এখনও ‘নেক্সট বিগ থিঙ’ গিল

সুনীল গাভাস্কার থেকে শচীন টেন্ডুলকার। এরপর শচীন থেকে বিরাট কোহলি। ভারতীয় ক্রিকেটে এমন ব্যাটন বদলের প্রক্রিয়াটা যেন ঐতিহ্যগতই হয়ে উঠেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার শচীন, বিরাটদের উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছে শুভমান গিলকে।

ক্যারিয়ার সায়াহ্নে শচীন ভারতীয় ক্রিকেট আকাশ রক্ষার দায়িত্বটা দিয়ে গিয়েছিলেন বিরাট আর রোহিতের কাঁধে। দুজনই সেই দায়িত্বটা ঠিকঠাকই পালন করেছেন। শেষ এক দশকে ভারতের বহু অর্জনের কারিগর এ দুই ক্রিকেটার।

তবে তারুণ্য তো আর চিরকালীন নয়। সোনালি সময় পেরিয়ে রোহিত, বিরাট— দুজনই এখন পড়ন্ত বেলায়। ভারতীয় ক্রিকেট ‘নেক্সট বিগ থিঙ’ এর কাছে তাই এবার তাদের ব্যাটন বদলের পালা।

বিরাট, রোহিত ঠিক সেই কাজটাই করছেন নি:স্বার্থভাবে। তাদের দুজনের কাছেই ভারতীয় ক্রিকেটের নেক্সট বিগ থিং শুভমান গিল। রোহিত তো অকপটেই বলেছেন, ‘গিল এক কথায় দুর্দান্ত। ওর মধ্যে অনেক বড় কিছু হওয়ার সক্ষমতা আছে। ব্যক্তিগত ভাবে ওকেই আমার আগামী দিনের বড় তারকা মনে হয়। এই বয়সেই ও ক্যারিয়ারে দারুণ শুরু করেছে। আশা করি, ওর এই রান করার ক্ষুধাটা যেন সব সময় থাকে।’

শুভমান গিলের ক্রিকেটীয় আইডল বিরাট কোহলি। সেই বিরাটকেই এখন তিনি জাতীয় দলের সতীর্থ হিসেবে পাচ্ছেন। নিজের পথযাত্রায় পাচ্ছেন বিরাটের সান্নিধ্যও। গিলকে নিয়ে কোহলি বলেন, ‘আমার সাথে খেলা নিয়ে সে প্রচুর কথা বলে। ক্রিকেট নিয়ে ওর সিরিয়াসনেস অন্য রকম পর্যায়ে। গিল যাতে সব সময় এমনই থাকে, তার জন্য সব রকমের সহযোগিতা আমি করব।’

ভক্তমহলে বিরাট কোহলির পরিচিতি ‘কিং’ হিসেবে। অল্প সময়ের ক্যারিয়ার হলেও গিল সেই খ্যাতি এখনই পেতে শুরু করেছেন। তাঁকে এখনই ‘কিং’ বলে ডাকা হয়। বিরাট কোহলি অবশ্য তাতে খারাপ কিছু দেখছেন না।

তবে গিলকে পরামর্শ দিয়ে অভিজ্ঞ এ ক্রিকেটার বলেছেন, ‘যারা এ ধরনের ট্যাগ দেন তাদের প্রতি অসীম ভালোবাসা। তবে একজন ক্রিকেটারকে পারফর্ম করেই টিকে থাকতে হয়। ক্যারিয়ারে অনেক উত্থান পতন আসবে। সেটা সামলানোর সক্ষমতা থাকতে হবে। তবেই সে পরিণত ক্রিকেটার হওয়ার পর্যায়ে যাবে।’

বিরাট কোহলি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘গিল দারুণ একটা ছেলে। আমি আশা করছি, সে তাঁর এই ফর্ম সামনেও অব্যাহত রাখবে।’

ভারতের বর্তমান কোচ রাহুল দ্রাবিড় গিলকে কাছে থেকে দেখেছেন বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই। তিনি বলেন, ‘আমি ওকে প্রথম দেখি ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। সেখান থেকেই আমার মনে হয়েছে, সে বিশেষ কিছু হতে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য। সে এখন দুর্দান্ত ফর্মে আছে। আশা করছি, বেশ কটা বছর ওর থেকে সার্ভিস পাবে ভারতীয় দল।’

ভারতের পেসার মোহাম্মদ সিরাজও শুভমান গিলকে প্রথম দেখাতেই অবাক বনে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘সাধারণত বাউন্সার বল ব্যাটাররা স্কোয়ার লেগে খেলে। কিন্তু আমি অবাক হয়েছিলাম যে, গিল আমার একটা বাউন্সার মিড উইকেট বরাবর খেলেছিল। সে দিন বুঝেছিলাম, ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন এক তারকার উত্থান ঘটছে। সে এখন যেভাবে খেলছে তার জন্য আমি দারুণ খুশি।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link