ক্লাসিক ব্যাটিং প্রদর্শনী

ক্রিকেটের সে এক অনন্য সুন্দর সময়। তখনো এই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এলোপাথারি ব্যাটিং এর মহড়া শুরু হয়নি। তখনো পর্যন্ত ক্লাসিক ব্যাটিংয়ে রান করার শিল্পের দেখা মিলতো। ভারত-শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি সব ব্যাটসম্যানরা তাঁদের ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে। ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ডিসপ্লের সর্বোর্চ্চ লড়াই দেখা গিয়েছিল সেই ম্যাচে।

ক্রিকেটের সে এক অনন্য সুন্দর সময়। তখনো এই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এলোপাথারি ব্যাটিং এর মহড়া শুরু হয়নি। তখনো পর্যন্ত ক্লাসিক ব্যাটিংয়ে রান করার শিল্পের দেখা মিলতো। ভারত-শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি সব ব্যাটসম্যানরা তাঁদের ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে। ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ডিসপ্লের সর্বোর্চ্চ লড়াই দেখা গিয়েছিল সেই ম্যাচে।

এখন হয়তো ওয়ানডে ক্রিকেটে চারশ রান হওয়াটা খুব বেশি অবাক করেনা। অন্তত ৩৫০ রান তো ওয়ানডে ক্রিকেটেই প্রায়ই স্পর্শ করে দলগুলো। তবে তখনো ওয়ানডে ক্রিকেটে এতটা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এর যুগ শুরু হয়নি। সেই সময়েই ভারত পার করলো ৪০০ রানের মাইলফলক। তবে রোমাঞ্চ এখানেই থামে না। জবাবে শ্রীলঙ্কাও লড়াই করলো চোখে চোখ রেখে। তাঁরাও করলো ৪০০ এর বেশি রান।

২০০৯ সালে এমনই শীতের সময়। ভারতের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে এসেছে লংকানরা। সিরিজে প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমেই বীরেন্দ্র শেবাগের উড়ন্ত সূচনা। আরেক প্রান্ত আগলে রাখলেন শচীন টেন্ডুলকার। দুজনে মিলে মাত্র ১৯ ওভারেই ১৫৩ রানের জুটি করে দিলেন। টেন্ডুলকার ৬৯ রানে ফিরলেও আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকেন শেবাগ।

এরমধ্যে আরেকবার নিজের ক্যারিশমা দেখালেন তখনকার তরুণ অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। নিজে তিন নম্বরে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন। ৫৩ বলে করলেন ৭২ রান। ওদিকে বীরেন্দ্র শেবাগকে শ্রীলঙ্কা যখন ফেরাতে পেরেছে ততক্ষণে ৩০০ পার করে ফেলেছে ভারত। শেবাগ ১০২ বলে করেছেন ১৪৬ রান। এরপর শেষে কোহলির ১৯ বলে ২৭ এবং জাদেজার ১৭ বলে ৩০ রানে ভর করে ৪১৪ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় ভারত।

তখনকার সময় এত রান করে ভারতের ম্যাচ না জেতার কোন কারণ ছিল না। তাই প্রথম ইনিংসের পরই সবাই মোটামুটি নিশ্চিত যে ভারতই ম্যাচ জিততে চলেছে। তবে ভারতের সেই বিশ্বাস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন তীলকারত্নে দিলশান। আর তাঁর সাথে আরেক প্রান্ত আগলে রাখার কাজটা করেছেন উপল থারাঙ্গা। দুজনের ১৮৮ রানের বিশাল উদ্ভোদনী জুটিতে জয়ের ভিত পায় লংকানরা।

তবে তখনো লম্বা পথ পাড়ি দিতে হতো শ্রীলঙ্কাকে। সেই দায়িত্বটাই নিজের কাঁধে তুলে নিলে কুমার সাঙ্গাকারা। মাত্র ৪৩ বলে করলেন ৯০ রান। সেই ইনিংসে তাঁর ব্যাটিং স্ট্রাইকরেট ছিল ২০৯.৩০। সেখানে ছিল ১০ টি চার ও ৫ টি ছয়ের মার। তবে দলীয় ৩১৬ রানে সাঙ্গাকারা আউট হয়ে গেলে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এরপরই দ্রুতই আউট হয়ে যান জয়সুরিয়া, দিলশান ও জয়াবর্ধনে। ৩৪৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেললেও রানরেট তখনো ৬ এর কাছাকাছিই ছিল।

ফলে ম্যাচ জেতার মত অবস্থানেই ছিল শ্রীলঙ্কা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউস সেই দায়িত্বটাও নিয়েছিলেন। ৩৩ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই করেছেন। তবে সাথে আর কাউকে পাননি তিনি। জয়ের একদম কাছাকাছি গিয়েও হার মানতে হয় শ্রীলঙ্কাকে। তাঁরা শেষ করেছিল ৪১১ রান করে। দারুণ ব্যাটিং করেও মাত্র তিন রানে ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়তে হয় তাঁদের।

দিলশানকে ছাপিয়ে সেই ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচও হয়েছিলেন বীরেন্দ্র শেবাগ। তবে সেই ম্যাচে যেই জিতুক ওয়ানডে ক্রিকেটে নতুন দিনের আভাষ পাওয়া গিয়েছিল সেদিন। কোন রানই যে নিরাপদ না সেটা টের পাওয়া গিয়েছিল। আর ভবিষ্যতটাও খানিক ধারণ করা গিয়েছিল নিশ্চয়ই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...