বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ ইস্যুতে পাকিস্তানে জরুরী বৈঠক

ভারতে অনুষ্ঠেয় আসন্ন বিশ্বকাপে পাকিস্তান অংশ নেবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা, ধোঁয়াশা এখনও তুঙ্গে। তবে বাবরদের বিশ্বকাপ খেলার ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন উচ্চ পর্যায়ের কমিটির উপর।

ভারতে অনুষ্ঠেয় আসন্ন বিশ্বকাপে পাকিস্তান অংশ নেবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা, ধোঁয়াশা এখনও তুঙ্গে। তবে বাবরদের বিশ্বকাপ খেলার ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন উচ্চ পর্যায়ের কমিটির উপর। ১৪ সদস্যের যে কমিটি মূলত ভারতের মাটিতে নিরাপত্তা থেকে সবধরণের সুযোগ-সুবিধা যাচাই করে প্রধানমন্ত্রীকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।

জানা গেছে, আগামী বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপ ভাগ্য নির্ধারণ করতেই প্রথম বৈঠকে বসবে বিলাওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন এ কমিটি। উক্ত সভায় উপস্থিত থাকবেন পিসিবি প্রধান জাকা আশরাফও। গুরুত্বপূর্ণ এ সভার মূল আলোচনায় বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ ইস্যু তো থাকছেই। তবে আহমেদাবাদে নির্ধারিত ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচের ভেন্যু নিয়েও পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে এ বৈঠকে।

চিরবৈরী ভারত-পাকিস্তান মধ্যকার ধ্রুপদী লড়াই মানেই উত্তেজনার পারদ যেন আকাশ ছোঁয়া। বাইশ গজের লড়াই ছাপিয়ে যে লড়াই হয়ে ওঠে নিজেদের আত্মমর্যাদার লড়াই, নিজেদের অস্তিত্বের লড়াই। ভারত-পাকিস্তানের কুলীন এ লড়াইয়ের দিনে কাঁটাতারের দুইপাশের মানুষই শুধু বিভক্ত হয় না, পুরো পৃথিবীই যেন দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।

তবে দুই দেশের রাজনৈতিক বৈরিতায় এখন ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটীয় যুদ্ধের দেখা এখন কমই মেলে। ২০১৬ সালের পর আর কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজই হয়নি দুইটি দেশের মধ্যে। তাই চাতক পাখির মতো সমর্থকদের তাকিয়ে থাকতে হয় আইসিসির বৈশ্বিক আসর কিংবা এশিয়া কাপের দিকে।

কিন্তু সেই বৈশ্বিক আসরেও এ দুই দলের লড়াইয়ে দেখা এবার মিলবে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা। কারণ পাকিস্তান এখনও তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেনি। মূলত পুরনো শত্রুতা নতুন বৈরিতার সূত্রপাত এশিয়া কাপকে ঘিরে আবর্তিত হয়।

এবারের এশিয়া কাপের আয়োজক দেশ হিসেবে পাকিস্তানই পূর্ব নির্ধারিত ছিল। কিন্তু নিরাপত্তা ইস্যু দেখিয়ে ভারত পাকিস্তানের মাটিতে এশিয়া কাপ অংশগ্রহণে আপত্তি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ আয়োজনের প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান।

কিন্তু, তাতেও প্রথমে মন গলেনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। বিসিসিআই স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানের এমন প্রস্তাবিত মডেলে এশিয়া কাপে অংশ নিবে না ভারত। এর মাঝে আবার ভারত একক ভেন্যু হিসেবে শ্রীলঙ্কায় এশিয়া আয়োজনের প্রস্তাব দেয়। যদিও শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় এসে পাকিস্তানের প্রস্তাবিত মডেলেই এশিয়া কাপে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। তবে মূল আয়োজক হওয়া স্বত্ত্বেও পাকিস্তানে হবে মাত্র ৪ টি ম্যাচ, বাকি ৯ টি ম্যাচ হবে শ্রীলঙ্কায়।

এমন সিদ্ধান্তের পর পাকিস্তান প্রথমে নমনীয় থাকলেও পরবর্তী বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া নিয়ে বেঁকে বসে। প্রথমে নিরাপত্তার অজুহাত দেখালেও পরে পাকিস্তানের ক্রীড়ামন্ত্রী মাজারি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন। তিনি বলেন, ‘যখন ভারতের দল পাকিস্তানে এশিয়া কাপ খেলতে যেতে পারছে না, তখন কেন পাকিস্তানের ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হবে পারবে না?’

মূলত এর পর থেকেই ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তান মূলত আগের ক্ষোভের জেরেই বিশ্বকাপ বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। যদিও এখনো কোনো কিছু নিশ্চিত নয়। তবে বিলাওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন এই কমিটির উপর সব কিছু নির্ভর করছে। এখন দেখার পালা, ঠিক কবে নাগাদ পাকিস্তান তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পৌঁছায়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...