পাকিস্তান ক্রিকেটের সাথে জড়িয়ে রয়েছে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ বিশেষণ। ২০২২ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচেই যেন সেই বিশেষণেরই সার্থকতা প্রমাণ করল পাকিস্তান ক্রিকেট দল। দশ ওভার শেষে ৪৫ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিল প্রতিপক্ষের। ঠিক সেখান থেকে পরবর্তী দশ ওভারে ১১৫ রান দিয়ে অবিশ্বাস্য ভাবে হারা কেবল পাকিস্তানের দ্বারাই সম্ভব।
তবে বিশ্বকাপের মঞ্চে এক হার নিয়ে বসে থাকার সময় কই? পরবর্তী ম্যাচে যে জয় আবশ্যিক, না হলে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে পড়তে হবে। পাকিস্তানও প্রস্তুত, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ম্যাচ হারলেও ঘুরে দাঁড়িয়ে জিততে চায় বাকি সব ম্যাচ । জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের আগে এমনটাই জানালেন পাকিস্তানি ব্যাটার ইফতেখার আহমেদ।
ভারতের বিপক্ষে শুরুতেই ধুঁকতে থাকা দলকে ব্যাট হাতে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন ইফতেখার আহমেদ। তাঁর ৩৪ বলে ৫১ রানের উপর ভর করেই শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় পাকিস্তান। তবে শেষ বলে ম্যাচ হেরে হতাশ এই ব্যাটার। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বকাপে ৩০ কোটি পাকিস্তানি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছি। সবার অনেক প্রত্যাশা ছিল এই ম্যাচ ঘিরে। যদিও বা দারুণ খেলেছি তবে এই হারটা সমর্থকদের মতোই দলের সবার জন্যই হতাশার। আমরা চেষ্টা করবো এই হতাশা ডিঙ্গিয়ে পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে।’
ভারত পাকিস্তান ম্যাচের পর অধিনায়ক বাবর আজম ও পাকিস্তান দলের কোচ খেলোয়াড়দের মনোবল উঁচু রাখার কথা জানিয়েছেন বলে ৩২ বছর বয়সী ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘ম্যাচ শেষে কোচ অধিনায়ক আমাদের খেলার পর মাথা উঁচু রাখতে বলেছেন। এটাই শেষ ম্যাচ নয়। বিশ্বকাপের লড়াই মাত্রই শুরু। বাকি ম্যাচ জিতে পাকিস্তান সমর্থকদের জন্য দারুণ কিছুই উপহার দিতে চাই আমরা।’
বিশ্বকাপের শুরু থেকেই পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ও ইফতেখার আহমেদের ব্যাটিং নিয়ে সমালোচকরা ছিলেন মুখর। এর জবাবে ডানহাতি এই ব্যাটার বলেন, ‘দেখুন দলের সবাই চায় ম্যাচ জয়ে অবদান রাখতে। দলের হয়ে ভাল খেলার জন্য সবাই অনেক কষ্ট করছেন। নেটে সবাই দারুন ব্যাটিংই করছেন। আশা করি ম্যাচে সবাই ভাল করতে পারবে। আর আমার ব্যাটিংয়ের কথা বললে আমি চাই টিম ম্যানেজমেন্ট এর প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে। দলের অধিনায়ক, কোচ এর চাওয়া ব্যাটিংয়ে নেমে আমি কিছুটা সেট হয়ে এরপরই আক্রমণে যাব। আমি আমার নির্দেশনা মতোই দায়িত্ব পালন করছি।’
তাঁর সমালোচকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চান কি-না এমন প্রসঙ্গে ইফতেখার বলেন, ‘সমালোচকদের জবাব দেয়ার কিছুই নেই। আমি মাঠে পারফর্ম করতে পারছি এটাই যথেষ্ট।’
পরবর্তী ম্যাচের প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘আমার মনে হয় বিশ্বকাপে ছোট দল বলতে কিছুই নেই। আমরা জিম্বাবুয়ের জন্য ঠিক সেভাবেই প্রস্তুত হচ্ছি যেভাবে অন্য দলের সাথে খেলায় নিজেদের প্রস্তুত করি। যদিও মাঠে যথেষ্ট সুইং ও বাউন্স পাওয়া যাবে। আমাদের বোলারদের জন্য তা বেশ কাজে দেবে। তবে জিম্বাবুয়েরও দারুণ পেস বোলার রয়েছে। আমার মনে হয় বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা-পূর্ণ ম্যাচ হবে।’
নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে শুরু করলেও পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বৃষ্টির আশীর্বাদে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এক পয়েন্ট অর্জন করে। দুই দলই চাইবে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয় নিয়ে সেমিফাইনালের লড়াইয়ে ফিরতে। বাংলাদেশ সময় আগামীকাল বিকেল পাঁচটায় অস্ট্রেলিয়ার পার্থে মুখোমুখি হবে দুই দল।