বিশ্বকাপ শুরু হতে বাকি আছে ছয় মাসেরও কম সময়। ইতোমধ্যে ভেন্যুর তালিকাও প্রকাশ করেছে আয়োজক ভারত। কিন্তু পাকিস্তানের ভারতে খেলতে আসা নিয়ে জটিলতার অবসান হয়নি এখনো। অবসান হবেই বা কি করে! বিশ্বকাপের আগেই পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়া কাপে ভারতের ম্যাচ গুলো নিয়েই এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)।
ভারত যে পাকিস্তানের মাটিতে এশিয়া কাপের ম্যাচ খেলবে না সেটি মোটামুটি নিশ্চিত। পাকিস্তানে ভারত খেলতে না আসলে তারা ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিল। তবে তারা যে সেই সিদ্ধান্তে অনড় থাকতে পারবে না সেটিও বোঝা যাচ্ছিল বেশ আগে থেকেই।
ঘটনা প্রবাহও সেদিকেই এগোচ্ছে। ভারতে গিয়ে বিশ্বকাপ খেলার ব্যাপারে ইতিবাচক হচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। অক্টোবরের শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপের জন্য ভেন্যুর তালিকা প্রকাশ করেছে বোর্ড অব ক্রিকেট কন্ট্রোল ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। ভারতের মোটা ১২ টি শহরে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। আইসিসির সূত্র বলছে, নিজেদের প্রথম পর্বের নয়টি ম্যাচ আলাদা আলাদা শহরে নয়, শুধুমাত্র চেন্নাই ও কলকাতায় খেলতে চায় পাকিস্তান।
আইসিসির এক কর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিটিআইকে বলেন, ‘সব কিছুই নির্ভর করছে বিসিসিআই ও ভারত সরকার কি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তান তাদের বেশিরভাগ ম্যাচ কলকাতা আর চেন্নাইতেই খেলতে চায়। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কলকাতায় পাকিস্তান ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছে এবং খেলোয়াড়রাও সেখানকার নিরাপত্তা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল। একই ভাবে চেন্নাই পাকিস্তানের জন্য স্মরণীয় একটা ভেন্যু। এটা আসলে কোনো নির্দিষ্ট ভেন্যুতে নিরাপদ তারা মনে করছে কিনা সেটির ব্যাপার।’
বিশ্বকাপে প্রতিটি দলই প্রথম পর্বে মোট নয়টি করে ম্যাচ খেলবে। কিছুদিন আগেই আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার ওয়াসিম খান বলেছিলেন, এশিয়া কাপের মত বিশ্বকাপেও হাইব্রিড মডেলের অধীনে নিজেদের ম্যাচ গুলো বাংলাদেশের মাটিতে খেলতে চায় পাকিস্তান।
কিন্তু এর কিছুদিন পর পিসিবি সভাপতি নাজাম শেঠি এই প্রস্তাব পুরোপুরি প্রত্যাখান করেন। আইসিসির পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বিশ্বকাপের এমন কোনো হাইব্রিড মডেল নিয়ে প্রস্তাব করা হয়নি।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত ঘেঁষা যেকোনো রাজ্যেই ম্যাচ খেলাটাকে নিজেদের জন্য নিরাপদ মনে করছে না পাকিস্তান। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচ প্রথমে ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত হবার কথা থাকলেও পরে পাঠানকোট ট্রাজেডির কারণে তা কলকতায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাই এসব বিষয়ে এবার আগে থেকেই ভাবছে পাকিস্তান।
ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে না যাবার অনড় সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে পিসিবি। তবে ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব যেন পাকিস্তান দলের নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে না পারে সে জন্য নিরাপত্তা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক তারা।
সে কারণেই নিজেদের বেশিরভাগ ম্যাচ কলকাতা ও চেন্নাইতে খেলার প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে পিসিবি। অন্যান্য দলগুলো যখন নিজেদের গ্রুপ পর্বের নয়টি ম্যাচ আটটি বা নয়টি আলাদা ভেন্যুতে, আলাদা কন্ডিশনে খেলবে। যেখানে ভারত পাকিস্তানকে শুধুমাত্র দুটি ভেন্যু খেলার সেই সুবিধা পাবার সুযোগ দেবে কিনা সেটিও দেখার বিষয়।