টানা তৃতীয় বারের মত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। তবে এবারই প্রথম নির্বাচনে জয় লাভ করে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। নির্বাচনে জয় লাভ করার পর পাপন জানিয়েছেন তিনি কারো কাছেই ভোট চাননি।
গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন। ক্যাটাগরি-২ ঢাকা মেট্রোপলিটন ক্লাব প্রতিনিধি থেকে আবাহনী লিমিটেড মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন পাপন। এখানে ১২ টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ১৭ জন। ৫৭ ভোটের ভিতর সর্বোচ্চ ৫৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন পাপন।
আজ চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর নির্বাচিত পরিচালকদের ভোটে সভাপতিও নির্বাচিত হন তিনি। এরপর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পাপন জানিয়েছেন তিনি যাদের ভোট আশা করেননি তাঁরাও তাকে ভোট দিয়েছে। তবে তিনি কারো কাছে নিজ থেকে ভোট চাননি।
পাপন বলেন, ‘সত্য কথা বলতে আমি কারো কাছে ভোট চাইনি। আমার নাম অনেকের কাছেই হয়তো দিয়েছে। কিন্তু আমি নিজে কারো কাছে ভোট চাইনি। আপনাদের আমি একটা কথা বলি, আমি একটা পরীক্ষা করতে চাইছিলাম পরিস্থিতিটা কি বাংলাদেশের, ভোটার কি কি মনে করে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনটা সব সময় আলাদা জিনিস। আমি যেটা লক্ষ্য করে দেখলাম। আমি যাদের ভোট জীবনেও পাব বলে আশা করিনি তারাও আমাকে ভোট দিয়েছে। নির্বাচনটাই সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। আমি যত জনপ্রিয়ই হন না কেন, আমি যখন নির্বাচনে যাচ্ছি তখন কাউন্সিলরা কী করবেন এটা ধারণা করা খুব কষ্টকর।’
বর্তমানে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে সাত নম্বরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলঙ্কাও ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পেছনে অবস্থান করছে। তৃতীয় মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর পাপন জানিয়েছেন এবার
তিনি বলেন, ‘বর্তমান যে পরিস্থিতি সেখানে তিন ফরম্যাটের ভিতর শুধু ওয়ানডেতে মোটামুটি ভালো। আমরা ভালো তবে ঐ রকম দল হয়ে যাইনি যে বলবো আমরা খুব ভালো। মোটামুটি ভালো। আগের চেয়ে নিশিত ভাবেই ভালো। সাত নম্বরে এসেছি। দুটো বিশ্বকাপজয়ী দলের ওপরে আছি। শ্রীলঙ্কা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তাদের ওপরে এখন পর্যন্ত আছি।’
পাপন আরো বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য অবশ্যই পাঁচে যাওয়া। পাঁচ নম্বরে যেতে পারি, ওই জায়গায় যাওয়ার জন্য যে কাজ করতে হবে, যেটা করে আমরা যেতে পারি তাহলে সহজে আমাদেরকে নিচে নামতে হবে না। সামনের লক্ষ্যই পাঁচ নম্বরে যাওয়া। এজন্য শক্তিশালী অনেক প্রতিপক্ষ আছে তাদের উপরে আমাদের উঠতে হবে।’
২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনাল খেলা, ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে কোয়াটারফাইনাল খেলা, ২০১৮ সালে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা, ২০১৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথম বারের মত শিরোপা জয় করা সহ পাপন দায়িত্ব নেওয়ার পর ওয়ানডেতে অনেক সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ।
পাপনের সময়েই ঘরের মাঠে ওয়ানডেতে অন্যতম পরাশক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এই সময় ঘরের মাঠে পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের সাথে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। তাই পাপনের বিশ্বাস সাতে থেকে পাঁচে সহজেই উঠতে পারবে বাংলাদেশ। তবে তাঁর লক্ষ্য পাঁচে ওঠার পর পরের ধাপে যাওয়া।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, এখন যে পরিস্থিতি সেখান থেকে সাত থেকে পাঁচে ওঠা হয়তো সম্ভব। এরপর অন্য লেভেল। এর পরের লেভেলে যেতে হলে যে পরিমাণ কাজ করতে হবে আমরা এখন পর্যন্ত সেই পরিমাণ কাজ করিনি, আমাদের সেই সুযোগ সুবিধার উন্নতি হয়নি। যতই সুযোগ সুবিধার উন্নতি করি না কেন সারা বিশ্বে ক্রিকেট অনেক এগিয়ে গেছে।’