আইপিএল থেকে বিশ্বকাপ

২০২২ বিশ্বকাপে ভারত দলে দেখা যেতে পারে বেশকিছু নতুন এবং তরুণ মুখ। কেননা তাঁর আগেই রয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। সেখানে ভাল করা তরুণ খেলোয়াড়দের জুটতে পারে জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ। ২০২১ সালের আইপিল আসরের পারফর্মেন্সের উপর ভিত্তি করে পাঁচজন খেলোয়াড়দের নাম অনুমান করা যায় যারা কিনা ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করার জোর দাবি জানাতে পারে।

প্রায় পাঁচ বছরের এক দীর্ঘ বিরতি শেষে এ বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে বসেছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। এবারের আসর ভারত শুরু করেছিল ফেভারিট তকমা নিয়ে। যদিও প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সমীকরণের মারপ্যাঁচে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় ২০০৭ সালের শিরোপা জয়ীদের। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে নিশ্চয়ই ভাল করতে চাইবে ভারত।

২০২২ বিশ্বকাপে ভারত দলে দেখা যেতে পারে বেশকিছু নতুন এবং তরুণ মুখ। কেননা তাঁর আগেই রয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। সেখানে ভাল করা তরুণ খেলোয়াড়দের জুটতে পারে জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ। ২০২১ সালের আইপিল আসরের পারফর্মেন্সের উপর ভিত্তি করে পাঁচজন খেলোয়াড়দের নাম অনুমান করা যায় যারা কিনা ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করার জোর দাবি জানাতে পারে।

  • রুতুরাজ গায়কড়

২০২১ সালের আইপিএলে ‘অরেঞ্জ ক্যাপ’ জিতেছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের তরুণ ওপেনার ঋতুরাজ গায়কড়। ১৬ ম্যাচে তিনি রান করেছিলেন ৬৩৫। মৌসুম সর্বোচ্চ। মৌসুমের শুরুতে রুতুরাজের জাতীয় দলের অভিষেক না ঘটলেও ইতোমধ্যে জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দুই ম্যাচ খেলেছেন তিনি।

ঋতুরাজ হতে পারেন ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্র সংস্করণে ভারতের পরবর্তী ধারাবাহিক ওপেনার। যেহেতু বর্তমানে আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বিবেচনা করা হয় না সেহেতু ঋতুরাজে প্রধান প্রতিদ্বন্দী এখন পৃথ্বি শ। ২০২২ আইপিএলে যদি ঋতুরাজ তাঁর সামর্থ্যের প্রমাণ আরো একবার রাখতে পারেন তবে বিশ্বকাপ দলে তাঁর জায়গা হয়ত সুনিশ্চিত।

  • ভেঙ্কেটেশ আইয়ার 

ভেঙ্কেটেশ আইয়ার একজন মিডিয়াম পেস বোলিং অলরাউন্ডার। যা কিনা ভারতীয় ক্রিকেট অঙ্গনে খুব একটা বিরল বিষয় বলা চলে। ২০২১ সালের আইপিএল ছিল ভেঙ্কেটেশের প্রথম আইপিল। প্রথমবারেই তিনি দলের অন্যতম সেরা একজন খেলোয়াড়ে পরিণত হন।

কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে এবারের মৌসুমে ভেঙ্কেটেশ রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। দলকে ফাইনালে ওঠানোর পেছনেও বেশ ভালভাবেই জড়িত ছিলেন ভেঙ্কেটেশ। আইপিএলের দশ ম্যাচ খেলে ভেঙ্কেটেশ রান করছেন ৩৭০, চারটি অর্ধশতক সহ। অন্যদিকে বল হাতে তাঁর উইকেট সংখ্যা তিন। কিন্তু তাঁর ইকোনমি রেটটা আট এর ঘরে। স্বস্তিদায়ক!

২৬ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার ভারতের হয়ে তিন ম্যাচে খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই তিন ম্যাচে তাঁর রান মোটে ৩৭ এবং এক ইনিংস বল করে উইকেট পেয়েছেন একটি। যদি হার্দিক পান্ডিয়ার পরিবর্তে ভেঙ্কেটেশকে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে দেখা যেতে পারে।

  • আবেশ খান

আসন্ন ২০২২ তি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলের বোলিং আক্রমণে আসতে পারে ব্যাপক পরিবর্তন। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের দুই প্রধান বোলার ভুবনেশ্বর কুমার ও মোহাম্মদ শামি ছিলেন পুরোপুরি নির্জীব। তাঁরা পরবর্তী বিশ্বকাপের আগে যদি তাঁদের সেরা ফর্মে ফিরে আসতে না পারে তবে তাঁদের পরিবর্তন অবধারিত।

সেক্ষেত্রে বোলিং আক্রমণের বিকল্প হতে পারেন আবেশ খান। ২০২১ আইপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেত শিকারি আবেশ খানের উইকেট সংখ্যা ২৪টি, ১৬ ম্যাচ থেকে। ইকোনমি ৭.৩৭। এখন পর্যন্ত জাতীয় দলে অভিষেক না হওয়া আবেশ হতে পারেন পরবর্তী বিশ্বকাপে জসপ্রিত বুমরাহের যোগ্য সঙ্গী। কেননা আবেশ পাওয়ার প্লে এবং স্লগ ওভারে সমানতালে বল করতে পারদর্শী।

  • হার্শাল প্যাটেল

৩১ বছর বয়সী হার্শাল প্যাটেল ছিলেন ২০২১ সালের আইপিএলের সর্বাধিক উইকেট সংগ্রাহক। তিনি ১৫ ম্যাচ খেলে নিয়েছিলেন ৩২টি উইকেট নিয়েছিলেন। ইকোনমি রেট ছিলো আট এর একটু উপরে। বয়স বিবেচনায় হারশাল প্যাটেলের দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবুও তিনি একটা সুযোগ অন্তত পেতে পারেন। যদি তিনি আগামী আইপিএলেও নিজের বোলিং ধার ধরে রাখতে পারেন।

হারশালের স্লোয়ার বলগুলো বোঝা বেশ মুশকিল। অধিকাংশ ব্যাটার তাঁর সেই স্লোয়ার বল বুঝতে ভুলে করে হারশালের উইকেটে পরিণত হয়েছেন। তাছাড়া আট নম্বর পজিশনে ব্যাটটাও মোটামুটি ভালই চালাতে যানেন তিনি। ১২৮.২৬ স্ট্রাইকরেটে গত আইপিএলে তাঁর ৩১ রানের একটি দারুণ ইনিংস রয়েছে। সুতরাং তাঁকে বিবেচনা করতেও পারে ভারতীয় নির্বাচকেরা।

  • মোহাম্মদ সিরাজ 

মোহাম্মদ সিরাজ হতে পারেন ভারতীয় বোলিং আক্রমণের অন্যতম অস্ত্র। গেল কয়েক বছরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বেশ কার্যকর বোলারে নিজেকে রুপান্তরিত করেছেন মোহাম্মদ সিরাজ। গত আইপিএলে খুব বেশি উইকেট না নিতে পারলেও সিরাজ তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং দিয়ে স্লগ ওভারগুলোতে প্রতিপক্ষের রানে লাগাম টেনে ধরেছিলেন বহুবার।

২০২১ আইপিএলে সিরাজের উইকেট সংখ্যা ছিল ১১। সাতের নিচে ইকোনমি রেট নির্বাচকদের তাঁকে দলে নেওয়ার জন্যে জোর দাবি জানাবে নি:সন্দেহে। তবে আগামী আইপিএলেও সিরাজের এমন ভাল পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে ২০২২ বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নিতে হলে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...