একটি ‘সল্ট’ময় ম্যাচ!

একেই বুঝি বলে ওয়ান ম্যান শো! ম্যাচে আরো দুই ব্যাটার ফিফটি পেয়েছেন। কিন্তু সে দুজনকে ছাপিয়ে দিল্লী-ব্যাঙ্গালুরু ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক হয়ে উঠলেন ফিলিপ সল্ট। ইংলিশ এ ব্যাটারের ব্যাটিং তাণ্ডবেই ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৭ উইকেটের দুর্দান্ত জয় পেয়েছে দিল্লী ক্যাপিটালস।

অবশ্য ম্যাচের শুরুর চিত্রনাট্যটা ব্যাঙ্গালুরুর পক্ষেই ছিল। ফাফ ডু প্লেসি টসে জিতলেন। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বিরাট কোহলির সাথে দারুণ এক জুটি গড়লেন। ডু প্লেসি-কোহলি যুগলবন্দীতে ব্যাঙ্গালুরু স্কোরবোর্ডে যোগ হলো ৮২ রান।

ফাফ ডু প্লেসিসের আউটে শতকের পথে হেঁটে চলা জুটির যবনিকাপাত। একই সাথে কিছুটা আক্ষেপও তৈরি করলেন প্লেসিস। ফিফটি থেকে ৫ রান দূরে থেকে বিদায় নিলেন।

অবশ্য ডু প্লেসির ফিফটি মিসের দিনে ঠিকই অর্ধ-শতক তুলে নেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ফিফটি পূরণের পর উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি এ ব্যাটার। ব্যক্তিগত ৫৫ রানে মুকেশ কুমারের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরতে হয় তাঁকে।

৪৬ বলে মন্থর গতিতে কোহলির এমন পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংসে সমালোচনার যোগান দিতেই পারে। তবে এ দিন আইপিএল ইতিহাসের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ৭০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন বিরাট কোহলি।

বিরাট কোহলির ফিফটি পাওয়ার দিনে অবশ্য হতাশ করেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। স্বদেশী মিশেল মার্শের বলে আউট হয়ে শূন্য রানে বিদায় নেন এ ব্যাটার। তাতে অবশ্য ব্যাঙ্গালুরু রানগতি থামেনি। বিরাট কোহলির মন্থর গতির ইনিংস স্বত্ত্বেও ব্যাঙ্গালুরুকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে দেন মাহিপল লমরার।

এ ম্যাচ দিয়েই আইপিএল ক্যারিয়ারে প্রথম অর্ধ-শতক তুলে নেন ভারতীয় এ ব্যাটার। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে ৬ চার আর ৩ ছক্কায় ৫৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। আর এতেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৮১ রানের সংগ্রহ পায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু।

১৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে শুরুটা যেমন হওয়া উচিৎ ছিল, ঠিক তেমনটাই করে দেখান দিল্লীর দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ফিলিপ সল্ট। এ দুই ব্যাটারের ব্যাটিং তাণ্ডবে ৫ ওভারেই ৬০ রান তুলে ফেলে দিল্লী। দলীয় ঐ ৬০ রানেই ওয়ার্নার আউট হয়ে ফিরে যান।

তবে সল্টের ব্যাটে চেপে ঠিকই দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যায় দিল্লীর ইনিংস। বলতে গেলে ব্যাঙ্গালুরুর বোলারদের একাই ধসিয়ে দেন ইংলিশ এ ব্যাটার। চার ছক্কার ফুলঝুরিতে মাত্র ২৮ বলেই ব্যক্তিগত অর্ধ-শতকে পৌঁছে যান সল্ট। ফিফটি পূরণের পর যেন আরো আগ্রাসী ভূমিকায় হাজির হন তিনি। এবার চার নয়, ছক্কার দিকে নজর দেন এ ব্যাটার।

মূলত সল্ট ঝড়েই দিশেহারা হয়ে পড়ে ব্যাঙ্গালুরুর বোলাররা। এক সল্টের ব্যাটিংয়েই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ব্যাঙ্গালুরু। স্কোরবোর্ডে ১৮১ রান জমা করেও এ দিন সল্টের সামনে এক মুহূর্তের জন্যও প্রতিরোধ গড়তে পারেননি সিরাজরা।

যদিও শেষ পর্যন্ত করণ শর্মার বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছিলেন সল্ট। কিন্তু ততক্ষণে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে দিল্লীর অনুকূলে।  ৮ চার আর ৬ ছক্কায় সল্টের সাজানো ৮৭ রানের ইনিংসের কল্যাণে ২০ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দিল্লী ক্যাপিটালস।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link